একুশে মিডিয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:>>>
মন্ত্রীর নির্দেশ স্বত্বেও শহীদ ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা তারু (আবু তাহের) মিয়ার পরিবার।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তারু মিয়া সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বগুলাবাজার ইউনিয়নের ক্যাম্পেরঘাট গ্রামের মৃত রোছমত আলীর পুত্র। তার গেজেট নং- ৩৫৩৬, মুক্তিবার্তা নং-০৫০২০৯০৩৬২, কল্যাণ ট্রাস্ট নং- ২৪৪৬১ ও জাতীয় তালিকা নং- ২৫৯। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ইকোয়ানে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৫ নং সেক্টরের চেলা সাব-সেক্টরের মেজর মোসলেহ উদ্দিনের অধীনে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তারু মিয়া। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট বড়ছড়া এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি শহীদ হন।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তারু মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া বেগমের আবেদনের পর অনেক যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়াত তারু (আবু তাহের) মিয়াকে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৭১ এর রণাঙ্গণে তিনি শহীদ হন উল্লেখ করে স্ত্রী হিসাবে তাকে সম্মানীভাতা প্রদানের জন্য তৎকালীন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দেবজিৎ সিংহ মন্ত্রণালয় বরাবরে চিঠি পাঠান। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তারু মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া বেগমকে ভাতা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এতদসত্বেও ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ! হতভাগিনী সাফিয়া বেগমের স্বপ্ন পূরণের আগেই বছর দুয়েক আগে তিনি পরপারে চলে যান।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তারু মিয়ার ভাই গনী মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার ভাই দেশের জন্য লড়াই করে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। অথচ স্বাধীনতার দীর্ঘ চারযুগেও তার কোনো মূল্যায়ন হয়নি। শেষমেষ আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি মহোদয় আমার ভাই প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা তারু (আবু তাহের) মিয়ার নামের পূর্বে ‘শহীদ’ অন্তভূক্তির নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্দেশের সাড়ে ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও কোন অদৃশ্য কারণে আজও তা বাস্তবায়ন না হওয়াতে আমরা হতাশাগ্রস্থ ছিন্নমুল পরিবারবর্গ মানবেতর জীবনযাপন করছি। জানিনা আর কতদিন আমাদেরকেও সেই অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে।’
পরিশেষে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর প্রতি প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা তারু (আবু তাহের) মিয়ার নামের পূর্বে অন্তর্ভূক্ত করা ‘শহীদ’ উপাধি বাস্তবায়ন করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে ভাতা প্রদানের জন্য সুদৃষ্টি কামনা করছেন তার হতদরিদ্র পরিবারবর্গ।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment