শিক্ষিত পাগল ‘গল্প’: নওমি - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Tuesday 10 December 2019

শিক্ষিত পাগল ‘গল্প’: নওমি



একুশে মিডিয়া, মুক্তমত রিপোর্ট:>>>
লেখক-ফাতেমা আক্তার নওমি:
পর্ব- ১
ছেলেটাকে সাইন্স দেওয়া কি ঠিক হবে? ভালো করে ভেবে দেখো।
-সীমান্তর মা, তুমি এতো ভাবছো কেন বলোতো?  আমাদের সীমান্ত ম্যাথে ১০০ তে ১০০ পেয়েছে। ওই ছেলেকে ক্লাস নাইনে সাইন্স না দেওয়ার মতো বোকামি আর কিছু আছে নাকি? আমাদের ছেলে ডক্টর হবে এটা কি তুমি চাও না?
--চাই তো। আমিও জানি ছোট থেকেই সীমান্ত খুব মেধাবী। পড়াশোনায় ভালো। কিন্তু, সাইন্স তো ও নিতে চাচ্ছে না। আর ওর মনের বিরুদ্ধে আমরা যে চাপিয়ে দিচ্ছি এটা কি ঠিক?
-- দ্যাখো, কোনটা ঠিক আর কোনটা ব্যা ঠিক। এটা বুঝার ক্ষমতা এখনও সীমান্তর হয় নাই। কাজেই বাবা- মা হিসেবে ওর উপযুক্তটাই বাছাই করে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। তাছাড়া ওর স্যার ও সাইন্স দিতে বলছে। এখন ও কি বললো না বললো, এটা নিয়ে এতো চিন্তা করার তো কিছু নেই। তুমি তো জানো?  তোমার ছেলে কেমন!  ও ছোট বেলা থেকেই তো আবল- তাবল কি বলতো। তখন তো ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু এখন তো দেখছি যথেষ্ট ভালো আমার ছেলে।
--সে জন্য ই তো ভয়। ছোটবেলায় এমনটা বলতো বলেই তো। আচ্ছা তোমার মনে আছে? কেমন করে বলতো, " আমি বড় হয়ে ভিক্ষুক হবো!" ভাবা যায়? 
পাশের রুম থেকে তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে প্রবেশ করে সীমান্ত।  
-- হ্যাঁ, আমি এখনও বলি। কি দরকার পড়াশোনা করে? আমি তো বড় হয়ে একটা ভিক্ষুকই হবো। তোমাদের কোনো স্বপ্নই আমি পূরণ করতে পারবো না। বৃথা তোমরা আমাকে নিয়ে ভাবছো।
সীমান্তর বাবাঃ এগুলো কি ধরনের কথা? তুমি বড় হচ্ছো। যথেষ্ট বুদ্ধিমান ছেলে তুমি। তোমার মুখে এসব কথা মানায় না। আর সবচেয়ে বড় কথা, তুমি আমার একমাত্র ছেলে। এতো সম্পত্তি কে খাবে? আর আমার সারাজীবনের উপার্জন ব্যাংক ব্যালেন্স করে রেখেছি। তোমার পড়াশোনার খরচের জন্য। তোমার ভবিষ্যৎ এর কথা ভেবে। তোমার মা আমি দুজনেই চাই তুমি ভালো ডক্টর হও।আর আমি যখন অবসর হয়ে যাবো। তুমিই তো দেখবে আমাদেরকে। 
--( সীমান্তর মা বারবার ইশারায় চুপ করতে বলছে তার স্বামীকে) আচ্ছা এখন এগুলো না বললেই নয়?এখনই এতো কিছু চাপিয়ে দিচ্ছ কেন ওর উপর? দেখছো তো ছেলেটা কেমন করে।
সীমান্ত ঃ মা, বাবাকে বলে দেও। আমার জন্য কোনো ব্যাংক ব্যালেন্স লাগবে না। তোমাদের টা তোমাদেরই থাকবে। আমি তো ভিক্ষা করবো। 

এটা বলে নিজের রুমে চলে গেল সীমান্ত।  ক্লাসের ফাস্ট বয় হওয়া সত্ত্বেও বাবা- মায়ের চিন্তা। 
মিসেস সুমন(সীমান্তর মা) বেশ চিন্তায় থাকে ছেলের এই অবস্থা নিয়ে। 
সারাদিন রুমের দরজা বন্ধ করেই রাখবে। ১৫ বছর বয়সের ছেলে সীমান্ত।  কারো সাথে মিশে না। ক্লাসে কোনো বন্ধু নেই। স্যারদের সাথে দু একটা দরকারি কথা ছাড়া কথা বলে না।বইপ্রেমী বলা যায় কিছুটা।  সারাদিন বই পড়বে। সীমান্তর রুমটা সু-সজ্জিত হলেও বেশ অগোছালো।  বিছানায় সবসময় ১০-১২ টা বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে  থাকে। বাবা অফিস থেকে ফেরার সময় রোজই একটা করে নতুন নতুন ভালো মানের জ্ঞান সম্পন্ন বই কিনে নিয়ে আসে। ওর কোনো বায়না নেই। অনেক শান্ত। সবসময় নিজের মতো থাকে। বাবা-মায়ের সাথেও প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা কথা বলে না৷ মাঝে মাঝে এমন কিছু কথা বলে ফেলে যা শুনে রীতিমতো মানুষ ওকে মানসিক প্রতিবন্ধী ভাবে। এর জন্য সুমন সাহেব মনোবিজ্ঞানী সম্পন্ন ডক্টর দেখিয়েছেন।  কিন্তু, তারা বলেছেন সীমান্ত পুরোপুরি সুস্থ।  বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঠিক হয়ে যাবে। 
তিনতলা বিশিষ্ট বেশ সুন্দর একটা বাড়িতে থাকেন সীমান্তরা। বাড়িটির নাম সুমন সাহেব ছেলের নামে নামকরণ করেছেন, " সীমান্ত ভিলা"! 
সামনে একটা বাগান করেছে সীমান্তর মা। সে খুব শৌখিন।  সব কিছুই তার মনের মতো,  সুমন সাহেবও তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করে না।  ভালোবেসেই ফ্যামিলির কথামতো বিয়ে করেছিলেন দুজন। ২০ বছরের সংসার দুজনের।  বিয়ের ৫ বছর পর সীমান্ত রিতার কোল আলো করে পৃথিবীতে আসে। 
আত্মীয়রা অনেকেই বলতো, সীমান্ত নাকি প্রতিবন্ধী।  এ নিয়ে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রিতাকে। কিন্তু, এখন যখন এতো ভালো রেজাল্ট করে। আত্মীয়দের বলে অনেক সুখ অনুভব করে রিতা৷  ছেলের জন্য গর্ব হয়। 
তবুও মনের অজান্তে একটা ভয় তাড়া করে। সীমান্ত সত্যি মানুষের মতো মানুষ হবে তো?
এভাবে দেখতে দেখতে চার বছর কেটে যায়। সীমান্ত এখন সুদর্শন যুবক। স্কুল, কলেজের গন্ডি পেড়িয়ে মেডিকেলে ভর্তি পরিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি তে গোল্ডেন এ প্লাস ছিল। ওর এতো ভালো ফলাফল দেখে বাবা- মা আরও আশাবাদী ছিলেন। সীমান্ত মেডিকেলে চান্স পাবেই।ইনশাআল্লাহ।  
কিন্তু, রেজাল্ট ভালো হলেও ওর আচরণে পাগলামি ভাবটা রয়েই গেছে। স্কুল, কলেজে কখনও ফাঁকি দেয় নি। পড়ার কথা কখনও বলতে হতো না যেই ছেলে। সে ছেলে আজও পাগলের মতো কথা বলে। 
.রাতের বেলা খাবার টেবিলে বসা ৩ জন। 
সুমন সাহেব সীমান্তর উদ্দেশ্য করে বললেন, 
-- মেডিলেকে তো এডমিশন নিলে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? 
--বাবা, মেডিকেলেই যে চান্স নিতে হবে। এর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আমি সেনাবাহিনীতে এপ্লাই করেছি। 
বাবা- মা দুজনেই বেশ খুশি হলেন। 
--(মা একফালি হেসে উত্তর দিলেন) ভালো তো বাবা। আমরা তো চাই। তুমি নিজের পছন্দমতো কিছু করো। আমরা অনেক খুশি হয়েছি। 
-- এখানে খুশি হওয়ার কিছু নেই মা।  বেশিদিনের জন্য তো না, একদিন তো ভিক্ষা করতে হবে। 
--এতো বড় হয়ে গেছিস এখনও এই কথা বলতে লজ্জা করে না?(বাবা)
.মা ইশারায় বাবাকে চুপ থাকতে বললো। 
--(সীমান্তর মাথায় হাত রেখে বলে) বাবা  এখন তো তুমি বড় হয়েছ। এভাবে কথা বলা ঠিক না। আমরা তোমার ভালো চাই। আমাদের বিশ্বাস তুমি যাই করো না কেন। ভালোই হবে।
বেশ কিছুদিন পর .... 
সেনাবাহিনীতে সীমান্তর ভাইভার জন্য ডাক পড়লো।সব দিক থেকেই সেনাবাহিনীর জন্য  উপযুক্ত ছিল সীমান্ত। 
ভাইভার এক পর্যায়ে  স্যার বলে,
-- তোমার বাবা প্রতি মাসে কতো টাকা বেতন পান?
--বেতন খুব বেশি হবে না। তবে ঘুষ মিলিয়ে ভালোই ইনকাম হবে।
--(স্যার অবাক হয়ে গেলেন) এ কেমন উত্তর। তোমার বাবা ঘুষ নেয়। তা আবার তুমি বুক ফুলিয়ে বলছো?
--শুধু তাই নয়। এই জন্য আমার একদিন ভিক্ষা করে খেতে হবে। 
--(স্যার রাগান্বিত হয়ে বললেন)  কোথা থেকে এসেছে এ পাগল। তুমি এখন যেতে পারো।
সীমান্ত ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চলে আসে। সেনাবাহিনী হওয়ার স্বপ্নটাও শেষ হয়ে গেল ঠিকই কিন্তু বাবা- মায়ের স্বপ্ন ডক্টর হওয়ার জন্য মেডিকেলে চান্স হয়ে গেল। 
সবাই অনেক খুশি সীমান্তর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এর জন্য। 
কিছুদিন পর বাবা-মায়ের ইচ্ছে অনুযায়ী হলে চলে গেল। তারা ভেবেছিল হলে গেলে ছেলেটা বন্ধুদের সাথে মিশবে। অনেক বদলে যাবে।  
কিন্তু, তার উল্টোই হলো। কারো সাথে তো কথা বলতোই না৷ বরং সবাই ওকে নিয়ে হাসাহাসি করতো। কেউ ইচ্ছে করে মিশতে ও চাইলো না। সীমান্ত পাগল নামেই সবাই চিনে৷ 
একদিন হঠাৎ সীমান্ত শুনতে পেলো বাইরে ছেলেগুলো কি নিয়ে যেনো জোরে জোরে কথা বলছে। রুম থেকে বের হয়ে দেখলো একটা ওয়াশিং মেশিন। ধরাধরি করে হলের  বাইরে রেখে  দিল। 
ওদের কথা অনুযায়ী বুঝতে পারলো নষ্ট হয়ে গেছে ওয়াশিং মেশিনটা তাই বাইরে ফেলে দিয়েছে। 
সীমান্ত সেদিন রাতে সবাই ঘুমিয়ে যাওয়ার পর ওয়াশিং মেশিনটিকে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু, ক্লাসের অন্য কয়েকজন বিষয়টা দেখে সবাইকে জানিয়ে দেয়৷ সবাই এ দৃশ্য দেখে হাসাহাসি করে।একে অপরকে বলতে থাকে, পাগলে কিনা করে! 
সীমান্ত আর কিছু বললো না৷ চলে এলো রুমে। 
সেখানেই শেষ নয়। সেদিন আর সীমান্ত দু চোখের পাতা এক করতে পারলো না৷ ওর মাথায় একটাই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। কখন ওই নষ্ট ওয়াশিং মেশিনটা ও নিয়ে আসবে। 
রাত যখন আরো গভীর হলো, ও আবার গেল। কিন্তু এবারে স্ক্রু টাইপের কিছু একটা সাথে নিল৷ 
আশেপাশে ভালোভাবে সতর্কতা  সহকারে দেখলো,  না কেউ নেই। স্ক্রু দিয়ে মেশিনটা সাবধানে কয়েকটা টুকরো করে রুমে নিয়ে আসে। 
এবারে সীমান্ত কারো কাছেই ধরা পড়েনি। ভাঙা টুকরো গুলো খাটের নিচে যত্নে রেখে দিল। 
পরদিন সকালে সবাই দেখে বলাবলি করতে লাগে, এক রাতের মধ্যে ওয়াশিং মেশিন হাওয়া। হা হা হা। 
- এটা সীমান্ত ছাড়া অন্য কারোই কাজ নয়। মনে হয় ভাঙারি দোকানে বেঁচে দিয়েছে। কেউ আর এ ব্যাপারে ওকে জেরা করে নি। 
এদিকে সীমান্ত পরদিন রাতে সারারাত জেগে নষ্ট মেশিনটা ঠিক করে। নিজে একবার ইউজ করে দেখে একদম ওকে। 
সেদিন রাতেই আবার ঠিক করে জায়গা মতো মেশিনটা নিয়ে রেখে আসে। একটা কাগজে লিখে দেয়,"ব্যবহার করে দেখো "।

পরদিন আবার সবাই মেশিনটা জায়গা মতো দেখে আরও অবাক হয়ে যায়। 
--আরে, মনে হয়। বেচারি কথাগুলো শুনে অপমানিত বোধ করেছে। তাই জায়গাতে রেখে গেছে৷ 

--হ্যা, চল গিয়ে দেখি তো। একটা কাগজ ঝুলছে মনে হচ্ছে। 
সব বন্ধুরা মেশিনের উপর কাগজটি দেখে। পরখ করে দেখলো। 
সত্যি সত্যি মেশিনটা ঠিক হয়ে গেছে। এদিকে কারো বুঝতেও বাকি রইল না, এটা সীমান্তর কাজ। 
তারপর থেকে বন্ধুরা ওকে নিয়ে আর হাসাহাসি করতো না। 
বরং অনেকেই মিশতে চাইতো। 
কিন্তু, সীমান্ত বেশ একঘেয়ে ছেলে। আগ বাড়িয়ে কারো সাথে কথা বলা চেষ্টা কখনও ই করে নি। 
এভাবে ভার্সিটি লাইফ কাটতে থাকে নিজের মতো করে৷ 
ঈদের ছুটিতে বাসায় আসার পর। বাবা-মা বলছে মামাদের বাসায় যাওয়ার জন্য। প্রথমে না বলে দিলেও। পরে মামার ছোট ছেলের কথা মনে পড়তেই যাওয়ার উদ্যোগ নিল। 
মামার ছোট ছেলে নিলয়কে অনেক ভালো লাগে সীমান্তর। কিছু কিছু ব্যাপারে নিলয় সীমান্তর মতোই। চুপচাপ, বায়না কম, অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলে। দুই পাগলে বেশ জমে যায়। 
মা-বাবা বলেছে ঠিকই কিন্তু আসার সময় কাউকে কিছু না জানিয়েই রওনা দিয়েছে। মামার বাসায় যাচ্ছে।অথচ  মামাও জানে না। 
যাইহোক, ভালো একটা সারপ্রাইজ দেওয়া যাবে মামাকে। 
বিকেল ৫ টার সময় মামা বাড়িতে পৌঁছে নিজেই সারপ্রাইজড। মামা- মামী কোথায় যেন বের হচ্ছে। 
মামাঃ একি তুই? কিরে বাবা একবার বলে আসবি না? ভাগ্যিস একটু আগে এসেছিস! তাহলে তো দেখাই হতো না। 
সীমান্তঃ (স্বাভাবিকভাবে) আমি তো তোমাদের জন্য আসি নাই। 
মামাঃ কিরে বাবা, রাগ করলি? আরে বোকা তুই ও চল আমাদের সাথে। আসলে, তোর মামির মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেছেন তাই আমরা হসপিটাল যাচ্ছি। 
সীমান্ত ঃ আসবে কবে?
মামাঃ আজই আসবো বাবা৷  হসপিটালে কি থাকার জায়গা আছে নাকি? তোর মামি অবশ্য বাবার বাড়ি যেত। কিন্তু, তুই যখন এসেছিস তাই চলেই আসবে কি বলো? (মামির দিকে তাকিয়ে)

মামিকে দেখে মনে হলো বেশ কড়মড় করে চেয়ে আছে মামার দিকে। মেয়েরা বাপের বাড়ি যাওয়ার টিকেট পাওয়ার পর যখন ক্যান্সেল হয়ে যায়৷ তখন ছোটো খাটো একটা ঝড় বয়ে যায় স্বামীর উপরে৷ 
কিন্তু, এ ঝড়টা বেশ স্বাভাবিকই ছিল। সামনে সীমান্ত বসা। তাই, এ যাত্রায় দাঁত কিড়মিড়িয়েই চেঁপে গেল মামি।
মামা উঠে দাঁড়িয়ে বলে, 
- নে চল। এবার বের হওয়া যাক।
সীমান্ত সোফা থেকে একচুলও নড়লো না৷ 
-- কে যাবে? আমি তো যাবো না।
---যাবি না মানে? একা কিভাবে থাকবি?  কি খাবি?
--রান্না করে খাবো৷ আর চিন্তা করো না। নিলয়কে রেখে যাও৷ 
(মামা একটু চিন্তায় পড়ে গেল) 
-- নিলয় কি থাকতে পারবে?
এবার মামিকে বেশ উৎসাহিত লাগে। 
--হ্যাঁ, ভালোই তো হলো।ওকে রেখেই যাই। কি বলো? সীমান্ত একা একা কিভাবে থাকবে? আর তুমি কোনো চিন্তা করো না। ফ্রিজে খাবার আছে নিলয় দেখিয়ে দিবে। গরম করে খেয়ে নিও। 
মামাঃ ওকে। তাহলে তো হলো ই৷  প্রবলেম সলব।  আর হসপিটালে এমনেও বাচ্চাদের নেওয়াটা রিস্কি। ঝামেলা ও বটে। আমরা তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো।  থাকো তাহলে তোমরা দুজন৷ 

উনাদের আসতে আসতে প্রায় নয় টা বেজে গেল। মামি রুমে ঢুকে আগেই বললো, নিলয় কই?  ও জ্বালায় নি তো। 

--(সীমান্ত হাসিমুখে উত্তর দিল) না মামি ও একদম ঠিক আছে। 
আমি এখনই বের করছি নিলয় কে। 

--(মামি একটু অবাক হয়ে গেল) বের করছি মানে?

সীমান্ত ফ্রিজের দিকে এগিয়ে গিয়ে। ফ্রিজ খুলে বলে,  আয় বের হ৷ 

--(অবাক হয়ে, চিৎকার করে উঠলো) একি সর্বনাশ! সীমান্ত তুমি এটা কি করেছো? ওকে ফ্রিজে রেখেছো কেন? পাগল নাকি!

নিলয়ের হাত পা ঠান্ডা হয়ে আছে। মা ওকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিল৷ 
--এটা কি করলে তুমি? ও কি ফ্রিজে রাখার মতো জিনিস? 
কখন করেছো এটা? 
--(নিলয় কান্না করতে করতে বলে) আম্মু,  আমি যেতে চাই নি। ভাইয়া আমাকে জোর করে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখছে। আমি অনেক কান্না করে বলি, বের করতে। কিন্তু, ভাইয়া ফ্রিজেই রেখে দেয়। (নিলয় কথা বলতে ও পারছে না ঠিকমত।  আটকে আসছে কেমন কথাগুলো)
--আচ্ছা, আম্মু তুমি আমাকে এটা বলো। ভাইয়া কখন তোমাকে ফ্রিজে রাখছে?
---বেশিক্ষণ হয় নি। তুমি এসেছো বলেই বের করেছে। 
--ভাগ্যিস আমি তাড়াতাড়ি চলে আসছি। নাহলে কি যে হতো আজ? আসুক আজ তোমার বাবা!
----চলবে----





একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages