হারিয়ে গেছে যৌথ পরিবার,ধ্বংসের পথে পারিবারিক বন্ধন। একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Wednesday 15 May 2019

হারিয়ে গেছে যৌথ পরিবার,ধ্বংসের পথে পারিবারিক বন্ধন। একুশে মিডিয়া



একুশে মিডিয়া, মুক্তমত রিপোর্ট:
লেখক-সাংবাদিক এম এ হাসান:
মানুষ সামাজিক জীব। তাই মানুষ কে সমাজে বসবাস করতে হলে পারিবারিক পরিচয় বহন করতে হয়। মানুষের জীবনে পারিবারিক শিক্ষা, শিষ্টাচার ব্যাপক ভূমিকা রাখে। মানুষ অলিখিতভাবে সামাজিক সন্মান, ক্ষমতা, এবং আঞ্চলিক কর্তৃত্ব অনেকটা পরিবার থেকে পেয়ে থাকে।পরিবারের রয়েছে বিভিন্ন প্রকারভেদ।পরিবার হলো একটি প্রাচীনতম সংগঠন। পিতামাতা যৌন সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে এই সংগঠন গঠন করে, এবং সন্তান সন্তানাদি উৎপাদন ও লালন পালনের মাধ্যমে তার অস্তিত্ব ধরে রাখে।"সমাজবিজ্ঞানী ম্যাকাইভার মতে--যৌন সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে সন্তান-সন্ততির জন্মদান এবং লালন-পালনের উদ্দেশ্যে যে সংগঠন গড়ে ওঠে তাকে পরিবার বলে।
""Encyclopedia Americana গ্রন্থে বলা হয়েছে, পরিবার পথটি সাধারণত কিছু ব্যক্তির সমষ্টিকে বোঝায়, যারা জন্ম এবং বিবাহসূত্রে একই  আবাসগৃহে বসবাস করে।আমাদের দেশে আমরা 
ছোটবেলা পাঠ্য বইয়ে শেখানো হয় পরিবার কাকে বলে। সেখানে খুব সহজে শেখানো হয় মা-বাবা, ভাই-বোন নিয়ে একটি পরিবার। বড় অর্থে আরো সবাইকে নিয়ে পরিবার গঠিত হয়।বাংলাদেশের পরিবারও রক্তসম্পর্ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশে যেকোন পরিবারের অধিকাংশই স্বামী-স্ত্রী ও তাদের অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের নিয়ে গঠিত। স্বামী ও স্ত্রী, অথবা বিবাহিত জীবনের এই দুই অংশীদারের যে-কেউ একজন সংসারের নিত্যনৈমিত্তিক কাজকর্মের চালক। পরিবার প্রধানের দিক থেকে বংশানুক্রমিক সদস্যদের মধ্যে দাদা, দাদি, বাবা, মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, ছেলের বউ, নাতি, নাত-বউ এবং নাতনি অন্তর্ভুক্ত। একটা সময় ছিল যখন দাদা, দাদি, চাচা- চাচী, ফুফু আর অনেক ভাইবোন নিয়ে সবার একটা বড়সড় পরিবার থাকতো। এক সাথে এক বাড়ীর ওঠানে কিংবা চাদের নিচে একই বাসগৃহে বসবাস করেছেন সবাই। এক সাথে সকল সুখ দুঃখের ভাগীদার হয়েছেন সবাই মিলে। বিপদে মুখ ফুটে বলার আগেই চলে এসেছে সাহায্য। সেই সাথে টুকটাক মনমালিন্যও যে হয়নি তাও কিন্তু না। তারপরেও সংসারের হাল সবাই মিলেমিশেই ধরেছেন।কিন্তু সময়ের ব্যাবধানে এখন আর সেই চিত্র অতীত।

আমাদের দিনের শুরুটা ঘর থেকেই। শেষটাও তাই। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পাল্টে গেছে সবার জীবন- যাপনের প্রক্রিয়া। খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-আশাক কিংবা সাজগোজে পরিবর্তন আসে প্রতিটি যুগে, দশকে, শতাব্দীতে। কিন্তু পারিবারিক বন্ধনের প্রভাব এখনও দারুণ কর্মব্যস্ততায় কিংবা নিবিড় অবসর মুহূর্তে প্রতিটি মানুষকে স্পর্শ করে। সুন্দর জীবনের অন্যতম শর্ত সুন্দর পারিবারিক সম্পর্ক । পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সম্পর্ক যদি চমত্কার আন্তরিক হয় তাহলে জটিল, অমসৃণ জীবনের নানা সমস্যা-সংকট অনেকটা এড়িয়ে সুখী ও সুন্দর জীবন গড়তে পারেন । মানবতার ভবিষ্যত্ রচিত হয় পরিবারকে কেন্দ্র করে । মূলত পরিবার হলো সমাজের মৌলিক কোষ বা সেল । এ কারণেই একটি সুস্থ সুন্দর স্বচ্ছল পরিবার একটি সুন্দর সমৃদ্ধ সমাজ গঠন করে । অন্যদিকে দুর্বল ভারসাম্যহীন পরিবার সমাজে ঘুণ ধরায়। আসলে পরিবারই একজন মানুষকে ধাপে ধাপে তৈরি করে, একটা মানুষ সেভাবেই বেড়ে উঠবে পরিবার তাকে যেভাবে গড়ে তুলবে। প্রকৃতপক্ষে শিশুর সঠিক মানসিক বিকাশের জন্য পরিবারের সান্নিধ্য খুবই প্রয়োজন।একসময়ে সামাজিক অটুট বন্ধনে যৌথ পরিবার ছিল """"নিউক্লিয়াসের মতে-- সভ্যতার উন্নতির ছোঁয়ায় আজকাল পরিবারগুলো ক্রমেই ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙন শুধু পরিবারে নয়, মূল্যবোধেও আঘাত হানছে। দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে, শিল্পায়নও হচ্ছে। মানুষ বাড়ছে। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মানুষের স্বাভাবিক মানবিক মূল্যবোধ। আগে যৌথ পরিবারে এক চুলার ধারণা ছিল। একই উঠোনে সবার হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা এক জোট হতো। পরিবারে একজন থাকতেন ছায়ার মতো। সুখে-দুঃখে, সাফল্যে ব্যর্থতায় আনন্দ-বেদনায় তিনিই সবাইকে আগলে রাখতেন। এখন একক পরিবারের আধিপত্যে যৌথ পরিবারের ধারণা ভেঙে যাচ্ছে। বড় বড় শহরগুলোতে জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে ফ্ল্যাটবাসীর সংখ্যা। যার ফলে একটি যৌথ পরিবার ভেঙে অনেকগুলো একক পরিবার সৃষ্টি হচ্ছে।বড় ই লজ্জাজনক ইতিহাস রচনায় মেতে উঠেছ আজ বাংলাদেশের পরিবার,সমাজ প্রথা,দেশে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পরেছে পরকীয়া,ডিজিটাল এর চোয়া তথ্য প্রযুক্তি অপব্যবহারে পরিবারের বন্ধন বিনষ্ট করছে।টিভি সিরিয়াল এর নিয়মিত সংসার বিনষ্টকারী সিনেমা,নাটক দৃশ্য কম দায়ী বললে ভুল হবে।আর এভাবে সাজানো গোছানো সংসার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। সন্তানদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল এর অপব্যবহার এর প্রযাপ্ত পরিমান সময় থাকা। আধুনিকতার বিলাসী ছোয়ায় মা বৃদ্ধাশ্রমে থাকলেও সন্তান থাকছে একা নিবিড় নির্জন রুমে, এর ফলে বর্তমানে আমাদের সমাজে ৩য় কিংবা ৪র্থ শ্রেণির পুড়ুয়া ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা অহরহ ঘটেই চলছে।অধিকাংশ সন্তান পারিবারিক এই বন্ধন বিনষ্ট হয়ে মা-বাবার মাত্রাতিরিক্ত আদর সোহাগ কিংবা পর্যাপ্ত বিনোদনের সুযোগ পাওয়া সন্তান মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।অথচ যৌথ পরিবারে এতটা বিনষ্ট হতে পারতোনা সন্তান।ভাঙছে পরিবার, সংঘটিত হচ্ছে একের পর এক নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড। মা কর্তৃক নিজ সন্তানকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা, পিতা কর্তৃক নিজ সন্তানকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা, স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে হত্যা, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে, সন্তান রেখে মা উদাও হওয়ার মত ঘটনা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। আর এ সবের পেছনে লজ্জাজনক পরকীয়া বা অবৈধ প্রেম ঘটিত কারণগুলোই মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। মানবীয় সমাজে এমন সব কাজ সংঘটিত হচ্ছে যা পশু সমাজেও ঘটে না। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব- সামাজিক প্রাণী। পশুরাও দলবদ্ধভাবে বসবাস করে তাদেরকে সামাজিক জীব বলা হয় না। মহাবিশ্বের অন্য কোথাও মানুষের মতো অন্য কোনো প্রাণী বাস করে কি না, তা আমাদের জ্ঞানের অগম্য। অসীম এ মহাবিশ্বের এক ক্ষুদ্র গ্রহে অসংখ্য সৃষ্টিরাজির মধ্যে একমাত্র মানুষই সামজিক প্রাণী।
যাকে স্রষ্টা বুদ্ধি দিয়েছেন, জ্ঞান দিয়েছেন, দিয়েছেন বিবেকবোধ ও বিচার বিশ্লেষণের ক্ষমতা। জন্মগতভাবে মানুষ দুটি সত্ত্বার সমম্বয়ে গঠিত। একটি পাশবিক সত্ত্বা অপরটি মানবিক সত্ত্বা। পাশবিক সত্ত্বাকে নিয়ন্ত্রণ করে মানবীয় সত্ত্বার বিকাশ ঘটিয়ে মানুষ তার মানবীয় মূল্যবোধের পরিচয়  দেবে এটাই মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য। মানুষের মানবীয় সত্ত্বার পাশাপাশি তাকে আরো কিছু গুণাবলী দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তা হচ্ছে : প্রেম, ভালোবাসা, মায়া, মমতা, মহব্বত, উদারতা, বদান্যতা, সন্তান  প্রেম-প্রীতি, ভক্তি- শ্রদ্ধা ইত্যাদি। পৃথিবীর আদি হতে আজ পর্যন্ত মানব বংশের গতিধারা রক্ষার জন্য অনন্য যে পদ্ধতি মানব সমাজে চালু আছে তা হচ্ছে পরিবার। পরিবার টিকে আছে,  ভালোবাসা, প্রেম, মহব্বত, সন্তান বাৎসল্য এ সবের কারণেই। আমরা মানব ইতিহাসের এমন হাজারো বর্ণনা পাই যে, স্বামীর জন্য স্ত্রীর আত্মত্যাগ, সন্তানের জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করা, সন্তান বাৎসল্যে নিজের আরাম-আয়েশ, সুখ-সুবিধা বিসর্জন দেয়ার ঘটনা। আর এ সব কারণেই পরিবার ও পারিবারিক জীবনের মাধ্যমে সমাজ সভ্যতা টিকে আছে।যাকে স্রষ্টা বুদ্ধি দিয়েছেন, জ্ঞান দিয়েছেন, দিয়েছেন বিবেকবোধ ও বিচার বিশ্লেষণের ক্ষমতা। জন্মগতভাবে মানুষ দুটি সত্ত্বার সমম্বয়ে গঠিত। একটি পাশবিক সত্ত্বা অপরটি মানবিক সত্ত্বা। পাশবিক সত্ত্বাকে নিয়ন্ত্রণ করে মানবীয় সত্ত্বার বিকাশ ঘটিয়ে মানুষ তার মানবীয় মূল্যবোধের পরিচয়  দেবে এটাই মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য। মানুষের মানবীয় সত্ত্বার পাশাপাশি তাকে আরো কিছু গুণাবলী দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তা হচ্ছে : প্রেম, ভালোবাসা, মায়া, মমতা, মহব্বত, উদারতা, বদান্যতা, সন্তান  প্রেম-প্রীতি, ভক্তি- শ্রদ্ধা ইত্যাদি। পৃথিবীর আদি হতে আজ পর্যন্ত মানব বংশের গতিধারা রক্ষার জন্য অনন্য যে পদ্ধতি মানব সমাজে চালু আছে তা হচ্ছে পরিবার। পরিবার টিকে আছে,  ভালোবাসা, প্রেম, মহব্বত, সন্তান বাৎসল্য এ সবের কারণেই। আমরা মানব ইতিহাসের এমন হাজারো বর্ণনা পাই যে, স্বামীর জন্য স্ত্রীর আত্মত্যাগ, সন্তানের জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করা, সন্তান বাৎসল্যে নিজের আরাম-আয়েশ, সুখ-সুবিধা বিসর্জন দেয়ার ঘটনা। আর এ সব কারণেই পরিবার ও পারিবারিক জীবনের মাধ্যমে সমাজ সভ্যতা টিকে আছে। কিন্তু বহমান এ সময়ে এমন কিছু রক্ত হিম করা ঘটনা আমাদের বিবেকবোধ এবং চিন্তা শক্তিকে বিকল করে দেয় যা মানব সমাজে ঘটার কথা নয়। মানুষ যেনো পশু সমাজকেও হার মানিয়ে ফেলেছে, পাশবিকতা ও লাম্পট্যের এমন সব ঘটনা আমাদের সমাজে এখন অহরহ ঘটছে যা সত্যিই আমাদের বিবেক ও বুদ্ধিকে ভোতা করে দিচ্ছে। বিশ্ব পরিবার দিবস আমাদের দেশের কনসেপ্ট নয় এটা, পাশ্চাত্য বিশ্বের প্রয়োজনে উদ্ভুত। যদিও আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট পাশ্চাত্যের তুলনায় ভিন্ন। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনেক প্রভাব পড়লেও আমাদের সমাজে পারিবারিক বন্ধন তাদের তুলনায় অনেক সুদৃঢ়। এখনও সমাজের বেশিরভাগ মানুষ পারিবারিক মূল্যবোধ ও আদর্শ অনুসরণে জীবন-যাপন করতে চায়। সামাজিক অবক্ষয় যাতে আমাদের পারিবারিক সুখ-শান্তিকে নষ্ট করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সবাইকে। আমাদের কাছে ঘর এক মন্দির, পবিত্র জায়গা। সব পাখি দিন শেষে যেমন তার নীড়ে ফিরে আসে আমরাও আমাদের কর্মব্যস্ততার শেষে ঘরে ফিরে আসি। তবে ঘরে অবশ্যই শান্তি থাকতে হবে। পরিবারের মধ্যে ভালোবাসায় ভরপুর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও চমত্কার সুন্দর পরিবেশ থাকতে হবে। আগে নিজের পরিবারকে ভালোবাসতে হবে, তারপর দেশকে ভালোবাসতে হবে। কারণ নিজের পরিবারকে ভালোবাসতে না পারলে নিজের দেশকে ভালোবাসা সম্ভব হবে না। সবাইকে মনে রাখতে হবে, ব্যক্তি তখনই শক্তিশালী হবে যখন তার পারিবারিক অবকাঠামো হবে শক্তিশালী ও মজবুত।  আসুন এখনো রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় বিশ্ব পরিবার দিবসের দিনে একটাই হোক অঙ্গিকার এক পরিবারের বিপদে অন্য পরিবার নিঃস্বার্থ ভাবে এগিয়ে এসে পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখবো।

লেখক:
সাংবাদিক এম এ হাসান 
কুমিল্লা।




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages