জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে তলফ কালীগঞ্জের দলিল লেখক নাসিরকে - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Sunday 3 November 2019

জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে তলফ কালীগঞ্জের দলিল লেখক নাসিরকে

জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে  দুর্নীতি দমন কমিশনে তলফ  কালীগঞ্জের দলিল লেখক নাসিরকে
একুশে মিডিয়া, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:>>>
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সিমলা রোকনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কালীগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওয়ামীলীগ নেতা নাসির চৌধুরীর বিরুদ্ধে বেপরোয়া দুনীতি ও জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে সুষ্ঠ অনুসন্ধান ও অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজ রোববার (৩ নভেম্বর) সাক্ষিদের তলব করা হয়েছে। তবে নাসির চৌধুরী যাবেন ৫ নভেম্বর।
গত ২৮ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে পাঠানো বর্ণিত ০০.০১.৪৪০০.৭৩৩.০১.০১৯.১৯.২৯১৪ নং স্মারকে এই চিঠিতে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মোঃ শহীদুল আসলাম মোড়লের অফিসে সকাল ১০টার মধ্যে উপ¯ি’ত থাকতে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দলিল লেখক ও ইউপি চেয়ারম্যান নাসির চৌধূরীর পিতা কালীগঞ্জ উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের জমশেদ আলী চৌধুরী ও চাচা মনছের আলীর মাত্র ৮ শতক জমি ছিল।
অতি কষ্টে দিনাতিপাত করতেন নাসির। প্রথম জীবনে পরের বাড়িতে দিনমজুর করে বাল্যকাল শুরু করেন। এরপর বাজারে ডাব বিক্রি করতেন। সেখান থেকে কালীগঞ্জ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে টি-বয় হিসেবে দিন হাজিরার চাকরী নেয়। পরবর্তীতে ৮ম শ্রেনী পাশ সনদ জোগাড় করে দলিল লেখক হিসেবে নাম লেখায়। তৎকালীন সাব রেজিষ্টার আলতাফ হোসেনের বাড়িতে কাজ করার সুবাদে তিনিই তাকে লাইসেন্স করে দেন। এরপর কালীগঞ্জের সাবেক ও বর্তমান দুই এমপির কৃপায় তিনি কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হন।
এলাকায় গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। একের পর এক বাড়ি, দামি গাড়ি, মাঠে জমি ও ব্যাংকে টাকার পাহাড় গড়ে তোলেন। একজন দলিল লেখক হয়ে বেপরোয়া দুনীতি ও জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের দায়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে নাসির চৌধুরীর প্রথম স্ত্রী খোদেজা বেগমের নামে যশোরের আল আরাফা ব্যাংকে রয়েছে ৫০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। যার ব্যাংক একাউন্ট নং ০৩০১৬২০০০১০২৫।২০১৮ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারী পর্যন্ত ব্যাংক স্টেটমেন্টে এই টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। নাসির চৌধুরীর শ্যালিকা মাহফুজা খাতুনের নামেও রাখা আছে ৫০ লাখ টাকা।
২০১৭ সালের ১৪ মে তারিখে যশোরের আল আরাফা ব্যাংকে ০৩০১৬২০০০১২৪৮ নং হিসাব খোলা হয়। নাসির চৌধুরীর ব্র্যাক ব্যংক যশোর শাখায় ৮টি হিসাব নাম্বারে লাখ লাখ টাকার তথ্য পেয়েছে অনুসন্ধানী দল। ব্র্যাক ব্যংকের ২৪০১৩০২১১২৫৯৯০০২ নং হিসাবে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত জমা ছিল ২০ লাখ টাকা। একই ব্যংকের ২৪০১৩০২১১২৫৯৯০০৩ নং হিসাবে জমা ছিল ২১ লাখ ৫০ হাজার, ২৪০১৩০২১১২৫৯৯০০১ নং একাউন্টে ৩০ লাখ ৫০ হাজার, ২৪০১৩০২১১২৫৯৯০০৮ একাউন্টে ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৯২০ টাকা, ২৪০১৩০২১১২৫৯৯০০৪ একাউন্টে ২ লাখ ১৬ হাজার ৬৩৪ টাকা, ২৪০১৩০২১১২৫৯৯০০৭ নং একাউন্টে ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫১ টাকা, ২৪০১৩০২১১২৫৯৯০০১ নং একাউন্টে ৫ লাখ ৮৫ হাজার ১৪২ টাকা ও ২৪০১৩০২১১২৫৯৯০০৬ নং একাউন্টে ৫০ হাজার টাকা।
এছাড়া এবি ব্যাংকে মাহফুজা ও তার শ্যালক জিয়া কবীরের নামেও কোটি কোটি টাকা থাকতে পারে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও তার কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়ায় ৩টি আলীশান বাড়ি, নদীপাড়ায় একটি ও কুল্লোপাড়ায় বাগান বাড়ি রয়েছে। দলিল লেখক নাসির চৌধুরীর জমিজাতি আছে অঢেল। গ্রামে তার কারণে কেও উ”চমুল্যে জমি কিনতে পারে না। তার কাছে জমি বিক্রি না করলে বাড়ি হামলা করা হয়।
গ্রামের কোন মেয়ে ফারাজ বিক্রি করতে চাইলে কম টাকায় সেই জমি কিনে নেন নাসির। পিতার ৪ শতক জমি থেকে নাসির চৌধুরী শত কোটি টাকার জমি কিনেছেন। সর্বশেষ তথ্য মতে নাসিরের নামে ৫৯.২৭ বিঘা জমির সন্ধান মিলেছে। কালীগঞ্জের বাবরা, পকুরিয়া, তিল্লা, ডাকাতিয়া, এ্যাড়েখাল, মনোহরপুর, সিমলাসহ বিভিন্ন মাঠে এই জমি রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে সিমলা রোকনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কালীগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসির চৌধুরী বলেন, মাঠে আমার এতো জমি নেই। কালীগঞ্জের এসিল্যান্ড তদন্ত করে মাত্র ১০ বিঘা জমির অস্তিত্ব পেয়েছে। তিনি বলেন আমার স্ত্রী ও শ্যালিকার নামে যে টাকা ব্যাংকে আছে সেটা আমার শ্বশুর চুরামনকাঠি বাজারে সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে। তিনি বলেন, আমার আখ চাষ আছে। এছাড়া আমি দলিল লেখক।
এ সব খাত থেকে আমার বছরে অনেক টাকা আয় হয়। আমি দুর্নীতি করি না। তিনি অভিযোগ করেন, আমার মিনি নামে এক ভাইপো ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। টাকা চাওয়ায় সেই আমার বিরুদ্ধে ভুয়া ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছে। তিনি জানান এর আগেও র‌্যাব, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কোন সত্যতা পায় নি। আগামী ৫ নভেম্বর তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে যাবেন বলেও স্বীকার করেন।




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages