দেশজুড়ে করোনা ভাইরাস মহামারীর এই সময়ে অনন্য ভূমিকায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Sunday 19 April 2020

দেশজুড়ে করোনা ভাইরাস মহামারীর এই সময়ে অনন্য ভূমিকায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী


রেখা মনি, রংপুর:
অসহায় দরিদ্রের ঘরে চাল-ডাল নেই-পৌঁছে দিচ্ছেন, হাসপাতালে রোগী ভর্তি করতে হবে-নিয়ে যাচ্ছেন, করোনায় মারা গেছেন আপনজনের মতো মমতা নিয়ে পাশে থেকে জানাজা ও দাফনে অংশ নিচ্ছেন।
দেশজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির এই সময়ে এমন অনন্য এক ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাত-দিন কাজ করছেন এই বাহিনীর সদস্যরা। এ কাজে নেমে রীতিমতো অসহায় মানুষের ত্রাতারূপে আবিভূর্ত হয়েছেন তারা। যেখানেই সমস্যা সেখানেই সবার আগে কাছে পাওয়া যাচ্ছে পুলিশকে।
বিভিন্ন সময়ে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য গণমাধ্যমের সংবাদ শিরোনাম হলেও সেসব ছাপিয়ে দেশের করোনাভাইরাস সংকটে গণমাধ্যমে শুধু নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে।
মাইক হাতে জনসাধারণকে সচেতন করা থেকে শুরু করে জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো, শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা করা, চিকিৎসা না পেয়ে থানায় হাজির হওয়া মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, ঘরে থাকা মানুষের কাছে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পৌঁছে দেওয়া, কোয়ারেন্টিন থেকে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা, লকডাউন এলাকায় মানুষের যাওয়া-আসা নিয়ন্ত্রণ এমনকি করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া মানুষের মৃতদেহ দাফনসহ সংকটকালীন এ সময়ে অনেক দায়িত্বই পালন করছে পুলিশ।
করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে মানুষ যখন একে অন্যের বিপদেও কাছে যাচ্ছেন না। তখন মানুষের পাশে থেকে পুলিশ সদস্যরা এ বাহিনীকে এক ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সময়ে পুলিশ সদস্যের কাজ প্রশংসার দাবি রাখে। তারা ঝুঁকি নিয়ে মাঠে আছেন। যদিও মাঠপর্যায়ের বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য ন্যূনতম সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়াই দায়িত্ব পালন করছেন। এতে করে অল্পসময়েই পুলিশ কমিউনিটিতে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর পুলিশ আক্রান্ত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে হিমশিম খেতে হবে। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) নির্দেশনা মেনে পুলিশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
পুলিশ সদর দফতর বলছে, বাহিনীটির সব সদস্যের জন্য মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজারের মতো সুরক্ষা সরঞ্জাম ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম নিশ্চিতে কাজ চলছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের সুরক্ষা সরঞ্জাম একেবারে অপ্রতুল। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেওয়া মাস্ক পেয়েছেন অনেকেই। তবে সেটি ভাইরাস প্রতিরোধী এন-৯৫ অথবা সার্জিক্যাল নয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশ সদর দফতর এবং ডিএমপি সূত্রে, করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৫৮ জন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৭ জনই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন বিভাগের কর্মরত। এ ছাড়া সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন, এমন ৬৩৩ জন পুলিশ সদস্যকে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গরোধে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য মাঠে রয়েছেন। দুই লক্ষাধিক সদস্যের এ বিশাল বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখার কাজ করে চলেছেন। ঝুঁকি থাকলেও পুলিশ সদস্যরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে জাতির যে কোনো দুর্যোগ ও ক্রান্তিকালে পুলিশ জনগণের পাশে থেকেই কাজ করেছে। পুলিশ তো আর ভয়ে ঘরে বসে থাকে না। তবে সবার আগে পুলিশের নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর অন্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক তৌহিদুল হক গণমাধ্যম কর্মীকে বলেন, নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পুলিশ নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। তাদের কাজগুলো ব্যাপক প্রশংসার দাবি রাখে। তবে শুধু আবেগ না, পেশাদারিত্বের পরিচয় বেশি দিতে হবে।




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages