মো: মনিরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া:
কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের লেমশীখালী ইউনিয়নের মহিলা লবণ চাষী রাজিয়া বেগমের করুন কাহিনী বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হয়। সংবাদটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল হক মীর এর দৃষ্টি গোচর হলে অনেক ব্যস্ততার মাঝে কাজে পাকে খোজ-খবর নিয়ে রাজিয়া বেগমকে উপজেলা অফিসে নিয়ে আসেন। তিনি লবণ চাষী রাজিয়াকে মা হিসেবে সম্বোধন করেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল হক মীর তার uno kutubdia ফেইসবুক আইডিতে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি লিখেন-"মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে কুতুবদিয়ায় লবণ মাঠে শ্রমিকের কাজ করছেন হতভাগী মা রাজিয়া" শিরোনামে কালের কন্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক জনাব তোফায়েল আহমেদসহ আরো কয়েকজনের ফেইসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেখতে পেয়ে ওই পরিবারটির খোঁজ নিলাম, ঠিকানা বের করলাম। উক্ত পরিবারটি অত্র উপজেলার লেমশীখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা।
ইচ্ছে ছিল আমি নিজেই ওই অসহায় মায়ের বাড়িতে যাব। কিন্তু অফিসিয়াল বেশ কিছু কাজ হাতে থাকায় উনাদেরকে আমার অফিসে নিয়ে আসার জন্য করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কার্যক্রমে নিয়োজিত উক্ত লেমশীখালী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক জাহিদুল ইসলামকে একটি গাড়িসহ পাঠালাম।
উনারা আমার বাংলোর নিচ তলার অফিসে আসলে আমি মা সম্বোধন করে উনার কাছে সব জানতে চাইলাম। উনার পরিবারের বিস্তারিত খোঁজ খবর নিলাম।
তখন তার অসহায়ত্ব এবং দূরবস্থার কথা আরো ভাল করে জানতে পারলাম। কথা প্রসংগে জানতে পারলাম স্বামী পরিত্যক্তা জনাব রাজিয়া বেগমের একমাত্র মেয়ে উম্মে হাবিবা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির একজন মেধাবী ছাত্রী। তার রোল নং ০১।
তিনি চান তার একমাত্র মেয়েটিকে পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করতে। এজন্য তিনি অপরের জমি বর্গা হিসাবে নিয়ে এই গরমে প্রচণ্ড তাপদাহ সহ্য করে নিজেই লবণ চাষ করেন। কিন্তু অর্থাভাবে উনার এই মেধাবী মেয়েটির পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার পথে।
উনাদের পরিবারের বিস্তারিত জেনে জনাব রাজিয়া বেগমকে বললাম, মা আপনার মেয়ে উম্মে হাবিবা আমার বোন। তাৎক্ষণিকভাবে উনাদেরকে কথা দিলাম-
১.উম্মে হাবিবার পড়ালেখার সকল খরচ আমি বহন করব।
২. তার স্কুল ড্রেস, কেডস এবং যাবতীয় শিক্ষা উপকরণের ব্যবস্থাকরণ। উল্লেখ্য, তার স্কুল ড্রেস এসিল্যান্ড দিবেন মর্মে জানিয়েছেন।
৩.গৃহহীন এই পরিবারের জন্য সরকারিভাবে একটা গৃহ নিমার্ণ করে দেওয়া হবে।
৪. স্বামী পরিত্যক্তা ভাতার ব্যবস্থা
৫. ভিজিডি'র চাল পাওয়ার ধারাবাহিকতা নিশ্চিতকরণ
৬.তাৎক্ষণিকভাবে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২০ কেজি চাল, ৪কেজি ডাল, ২ লিটার তেল, ৪কেজি আলু, ২ কেজি লবণ প্রদান।
৭. এছাড়া এই পরিবারের বিপদে-আপদে আর্থিক সহায়তা প্রদান সহ যাবতীয় বিষয়ে দেখভালের দায়িত্বও বহন করা হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment