আল আমিন মুন্সী:
কয়েদিন আগেও দুচোখ ভরা স্বপ্নের হাতছানি ছিল পলাশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থী মাইশা আক্তারের।
লেখা-পড়া শেষ করে ভালো একটি চাকরি করে সংসারের হাল ধরবে সে। লেখা-পড়ায়ও একজন ভালো শিক্ষার্থী ছিল মাইশা আক্তার। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস।
আজ তার নিজেরই অর্থ অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে। কোমড়ের হার ভেঙে পড়ে আছে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে। মাইশাকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে গেলে তার একটি অপারেশন করা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেই অপরাশেনের ব্যয় হবে প্রায় এক লাখ টাকা।
কিন্তু মাইশার বাবার কাছে এক লাখ টাকা জোগার করা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। তিনি নিজেও একটি দুর্ঘটনায় পড়ে অচল হয়ে এখন ঘর বসা।তবুও সমাজের কয়েক জনের কাছ থেকে হাত পেতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা জোগার করেছেন তিনি। কিন্তু এক লাখ টাকা কোনো ভাবেই জোগার করতে পারছেন না মাইশার বাবা।
যেকারণে মাইশার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাটি অনিশ্চিত। বলছিলাম,নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার গড়পাড়া গ্রামের দিনমজুর মোখলেছুর রহমানের ছোট মেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী মাইশা আক্তারের কথা। গত আগস্ট মাসের ২৮ তারিখে পেয়ারা পাড়তে গিয়ে টিনের চাল থেকে পড়ে কোমড়ের হার ভেঙে যায় তার। বর্তমানে সে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি আছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে,বাবা মোখলেছুর রহমান মেঘনা গ্রæপে শ্রমিকের কাজ করতেন। সেখানে একটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অচল হয়ে প্রায় চার বছর ধরে তিনি ঘর বসা। মোখলেছুর রহমানের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মাইশা আক্তার তৃতীয়। বড় বোনের মেয়ে হয়েছে। মেঝো বোন প্রাণ কোম্পানিতে চাকরি করে সংসার চালানোর পাশাপাশি ছোট বোন মাইশার লেখা-পড়ার খরচ বহন করতেন।
মাইশা মেধাবী ছাত্রী হওয়ায় পরিবারের সবার স্বপ্ন ছিল তাকে লেখা-পড়া শিখিয়ে উচ্চ শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলার। মাইশারও দুচোখ ভরা স্বপ্নের হাতছানি ছিল লেখা-পড়া শেষ করে চাকরি করার মাধ্যমে অভাব-অনটনের সংসারের হাল ধরার। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস।
দুর্ঘটনার কারণে বর্তমানে মাইশার জীবন বাঁচানোটাই যেনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে তার পরিবারের মধ্যে। মাইশার চিকিৎসার জন্য সরকারের সহযোগিতা সহ স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের কাছে আকুল আবেদন করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
পলাশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, মাইশা আক্তার একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল। গরীব ঘরের সন্তান হওয়ায় স্কুলে পড়াকালীন সময় তাকে সব শিক্ষকরা সহযোগিতা করতো। তার এমন দুর্ঘটনা সত্যিই বেদনাদায়ক। আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment