নাটোরে ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনির উপস্থিতিতে দাদা ও নানির বিয়ে - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday 22 October 2020

নাটোরে ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনির উপস্থিতিতে দাদা ও নানির বিয়ে

একুশে মিডিয়া, রিপোর্ট:


নাটোরে ১০৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের সঙ্গে ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধার ধুমধাম করে বিয়ে দিয়েছেন এলাকাবাসী। গত বুধবার রাতে নাটোর সদর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। পাত্র মৃত ইমান আলীর ছেলে ১০৫ বছর বয়সের আহাদ আলী মন্ডল ওরফে আদি ও পাত্রী সোনা মিয়ার মেয়ে ৮০ বছরের আমেনা বেগম’।

নাটোর সদর উপজেলার পুকুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ আহাদ আলী’। এক যুগ আগে তাঁর স্ত্রী মারা গেছেন। বুধবার রাতে তিনি একই গ্রামের বৃদ্ধা আমেনা বেগমকে বিয়ে করেন। আমেনার স্বামী মারা গেছেন প্রায় ১০ বছর আগে। দুজনেরই ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনি আছে। এই বিয়েতে তাঁরাও উপস্থিত ছিলেন। দুই প্রবীণের বিয়ে ঘিরে গ্রামজুড়ে চলছে আনন্দ উৎসব’।

গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আহাদ আলী প্রায় এক যুগ ধরে টিনের চৌচালা ঘরে একাই বসবাস করছিলেন। তাঁর চার ছেলে ও তিন মেয়ের আলাদা সংসার হয়েছে’। তাঁরা তেমন খোঁজ-খবর নেন না। পান-সিগারেট বিক্রি করে নিজের খরচ চালান তিনি। তিনি হাসিখুশি মানুষ’। এত দিন দ্বিতীয় বিয়ের কথা বললেও তিনি রাজি হননি। হঠাৎ গ্রামবাসীর অনুরোধে তিনি তাঁর প্রয়াত ছোট ভাই টুলু মণ্ডলের স্ত্রী আমেনা বেগমকে বিয়ে করতে রাজি হন। আমেনার দুই মেয়ে। বিয়ের পর তাঁরা শ্বশুরবাড়ি চলে গেছেন’।

বিয়ের আয়োজন সম্পর্কে গ্রামবাসীর কাছ থেকে জানা গেল, বুধবার রাতে আহাদ-আমেনার সন্তান ও নাতি-নাতনি, গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের দেনমোহর ৫০ হাজার ৬৫০ টাকা’। বিয়ের আসরে নববধূকে ৬৫০ টাকা দামের একটি নাকফুল দিয়েছেন আহাদ। বিয়ের পর তাঁরা যখন বাড়িতে ফিরছিলেন, তখন গ্রামজুড়ে চলছিল আনন্দ উৎসব’।

আমন্ত্রণ না জানালেও আয়োজনে যোগ দেন শতাধিক মানুষ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নবদম্পতিকে দেখতে বহু মানুষ তাঁদের বাড়িতে ভিড় জমান। অনেকেই তাদের পাশে বসে ছবি তোলেন। বাড়ির বাইরে চলছিল বউভাতের আয়োজন। গ্রামবাসীই উদ্যোগী হয়ে বউভাতের আয়োজন করেন। খাওয়া-দাওয়া হবে রাতে’।

আহাদ আলীর ছোট ছেলে কুরবান আলী জানালেন, ব্যস্ততার কারণে তাঁরা বাবার খোঁজ নিতে পারেন না। বাবার বিয়েতে তাঁরা খুশিই হয়েছেন’।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খন্দকার ওমর শরীফ চৌহান’। তিনি বলেন, বর-কনে একই গ্রামের মানুষ। কনে আহাদ আলীর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী থাকায় ওই বাড়িরই বউ ছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছিলেন। বিয়ের মাধ্যমে তিনিও আগের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গেলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই বিয়েতে ভীষণ খুশি। গ্রামবাসীর আমন্ত্রণে দম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি’।

বৃদ্ধ বয়সে বিয়ে করার ব্যাপারে আহাদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিজের মানুষ (স্ত্রী) না থাকার যে কী কষ্ট, তা বলি বোঝাতে পারব না। তাই শেষ বয়সে একটা সঙ্গী লিলাম। আশা করি সময়টা ভালোই কাটপি।’ তিনি বলেন, ‘বয়স হলেও এখন চলাফেরা ভালোই করতে পারি। নিজে ইনকাম করি। সংসার করা খুব কঠিন হবে না’।

আমেনা বেগম বলেন, ‘একা আর কত দিন থাকব। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন নিজের একটা আশ্রয় দরকার। তাই বিয়ে করেছি। সবাই দোয়া করবেন’।

 

 

 

একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages