রাতের আধারে ছাত্রলীগের পকেট কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Saturday 3 April 2021

রাতের আধারে ছাত্রলীগের পকেট কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

আল-আমিন মুন্সী:

নরসিংদীর পলাশে রাতের আধারে 'পকেট কমিটি' ঘোষণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। শনিবার দুপুরে উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার খানেপুর গ্রামে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৪ সালে গঠনতন্ত্র মেনে সম্মেলনের মাধ্যমে পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপ। ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সম্পাদক মো. দারুস সালাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান শামীম নেওয়াজসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।

তাদের উপস্থিতিতে উপজেলা ছাত্রলীগের সকল ইউনিটের ডেলিগেটদের ভোট প্রদানের মাধ্যমে শেখ মোহাম্মদ রাজনকে সভাপতি ও আপেল মাহমুদ শাহীনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।

কিন্তু সম্প্রতি নবগঠিত কমিটি ঘোষণা করা হয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম (ফেসবুকে), যা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র বহির্ভূত ও অগণতান্ত্রিক। এতে আরও বলা হয়, গঠনতন্ত্র অনুসারে তৃণমূলের সভা ডেকে তাদের মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রে নাম পাঠানোর কথা থাকলেও উপজেলা ছাত্রলীগের বেলায় কোনো সভা ডাকা হয়নি।

কেনো এমন হল তা খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে, সম্প্রতি স্থানীয় একটি বর্ধিত সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেনের একটি বক্তব্যকে ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উপজেলা ছাত্রলীগের সকল ইউনিট একসঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা ছাত্রলীগ ও তাঁর সকল ইউনিট ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই ফেসবুকে ৮ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি প্রচার শুরু হয়।

এতে আরও বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে বর্তমান কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি করার ক্ষেত্রে বর্তমান কমিটিকে জেলা কমিটিকে লিখিত বা মৌখিকভাবে জানাতে হয়। অথচ বর্তমান কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে বা হয়েছে এই মর্মে জেলা কমিটি থেকে কোনো লিখিত বা মৌখিক নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই কমিটির ঘোষণা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র বহির্ভূত। এই বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসিবুল হাসান মিন্টুর অবস্থান কি তাও জানা যাচ্ছে না।

তবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমাদের জানিয়েছেন, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই কমিটি সম্পর্কে তিনি কিছুুই জানেন না।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনের সভাপতিত্বে এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান, ডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রাজন আহম্মেদ, চরসিন্দুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শফিউল আলম, গজারিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ঘোড়াশাল শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সমশের খান, সিনিয়র সহসভাপতি মো. রুবেল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন ও শিল্পাঞ্চল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বুলবুল ইসলাম প্রমুখ। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, উপজেলা ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মীকে কিছু না জানিয়ে রাতের আধারে এই পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ অর্থের বিনিময়ে পকেট কমিটির অনুমোদন করিয়েছেন। যা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র ও আদর্শ বিরোধী এবং অবৈধ। অযাচিত লোকজন দিয়ে এই কমিটি গঠনের ফলে সংগঠনের সুনাম নষ্টের পাশাপাশি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে।

দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের বাদ দিয়ে স্থানীয় সাংসদ তাঁর নিজস্ব বলয় তৈরি করার জন্য অজনপ্রিয় ও 'প্রার্থী হতে চান না' এমন ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটির ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন ঘোষিত ওই ভুয়া কমিটিতে যাকে সভাপতি করা হয়েছে সেই রনি প্রধানের নির্দিষ্ট বয়স ও ছাত্রত্বই নেই।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম কিছুদিন আগে মাদকসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৮ মার্চ রোববার রাতে পলাশ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়।

এতে রনি প্রধানকে সভাপতি ও আরিফুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট এই নতুন কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়।আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা না করে নবগঠিত কমিটি ঘোষণা করায় উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হতবাক হন। এর প্রতিবাদে পরদিন বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা ছাত্রলীগ।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজন তাঁর বক্তব্যে বলেন, আগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার আগেই কাউন্সিল না করে রাতের আধারে 'পকেট কমিটি' গঠনের প্রতিবাদে আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন।

আমরা তো সারাজীবন ছাত্রলীগে থাকবো না, তবে এমন পকেট কমিটি উপজেলা ছাত্রলীগ চায় না। আমরা চাই দ্রুত এই পকেট কমিটি বাতিল করে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি নবগঠিত কমিটিকে প্রতিহত করা হবে।

 

 

একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages