বাঁশখালী ছনুয়ার ‘মামলাবাজ’ ছাবের থেকে মুক্তি চান ব্যবসায়ীরা!-একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Wednesday 5 December 2018

বাঁশখালী ছনুয়ার ‘মামলাবাজ’ ছাবের থেকে মুক্তি চান ব্যবসায়ীরা!-একুশে মিডিয়া



এনামুল হক রাশেদী, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) থেকে:
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নে নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দা ছাবের আহমেদ প্রকাশ ওরফে রোহিঙ্গা ছাবেরের বিরুদ্ধে। তার মামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না এলাকার ব্যবসায়ীরাও। দীর্ঘদিন থেকে কোনো কারণ ছাড়া অহেতুক মামলা দিয়ে ফাঁসানোর কথা বলে অনেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, নিজের বউকে দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনকে মিথ্যা মামলা দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাবের আহমেদ প্রকাশ ওরফে রোহিঙ্গা ছাবের চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানার ১২ নম্বর ছনুয়া ইউনিয়নের শুকলাল পাড়ার বাসিন্দা। ছাবেরের তিনটি স্ত্রী থাকলেও তৃতীয় স্ত্রী জোছনা বিবির (৩০) সঙ্গে সংসার করছেন তিনি। জোছনার সাথে সংসার করলেও প্রকৃতপক্ষে তাদের কোনো বিয়ের কাবিন নেই। এ নিয়ে ছাবেরের পরিবারের সাথেও অনেকবার কথাকাটাকাটি হয়েছে। এমনকি ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক তাদের সম্পর্ককে অবৈধ বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে একটি দোকানে চুরির ঘটনায় ছাবেরকে প্রকাশ্যে গণধোলাই দেওয়া হয়। তারপর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে তার থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়। অপমান সহ্য করতে না পেরে ছাবের এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরে চলে যান। সেখানে চকবাজারের ছৈয়দ শাহ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থেকে রিকশা চালাতেন। পরে ওই গ্যারেজ থেকে একটি রিকশা চুরির ঘটনায় তাকে ধোলাই দেওয়া হয়।
ঘটনার পরের দিনে একটি সালিশ হয়। সেখানে ছাবের জোছনাকে বিয়ে করার আশ্বাস দেন। পরে জোছনাকে নিয়ে তিনি বাঁশখালীর ছনুয়ায় নিজ বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে আসার পর ছাবের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। তা ছাড়া ছাবের একটি বোট ডাকাতির মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি বলেও জানা যায়।
তারপর চট্টগ্রাম থেকে ছাবের টেকনাফ চলে যান। সেখানে তরকারি বিক্রি করতেন তিনি। দীর্ঘদিন সেখানে থাকা অবস্থায় রোহিঙ্গা নারী জোছনার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে রাতে অবৈধভাবে মেলামেশা করতে গিয়ে এলাকার কয়েকজন যুবক ছাবেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
চুরির ঘটনায় যে ব্যবসায়ীরা ছাবেরের বিচার করেছিলেন এখন তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী।
২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আহামদ শফি (৩৮), শাহাবুদ্দিন (৩২), মো. বেলাল (৩০) ও শহর মুল্লুক (৩৬) নামে কয়েকজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ চট্টগ্রামে একটি মামলা করেন ছাবেরের বোন রাবেয়া বেগম। পরে সেটি তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্ত শেষে মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হলে পুলিশ তাদের সতর্ক করে।
ব্যবসায়ী জাগের হোসেন, আহাম্মদ শফি, ছৈয়দ নূর, মোহাম্মদ রিদওয়ান, মনজুর আলমসহ অনেকে ছাবেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ছাবের একজন মামলাবাজ। তিনি এলাকায় ফিরে এসে নিজের বউ ও বোনকে দিয়ে বিভিন্ন জনকে মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন। এমন একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে আমির হোসেন (৩০) নামের এক ভ্যানচালককে। এমনকি মামলার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবিরও অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. নাজমুল হাসান একুশে মিডিয়াকে জানান, তদন্তকালে বাদীর অভিযোগ সাক্ষ্য-প্রমাণে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। জমিসংক্রান্ত বিরোধ থেকে সৃষ্ট আক্রোশমূলক ভাবে বিবাদীদের হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন বাদী।


মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ছাবের জানান, তিনি কারো বিরুদ্ধে মামলা করেননি। তার বউকে নির্যাতন করার অভিযোগ করেছেন তিনি।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন আহমেদ একুশে মিডিয়াকে বলেন, ‘কেউ যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে তার শাস্তি হবে। আইন সবার জন্য সমান। যদি এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনি ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি কি না, জানতে চাইলে ছাবের দাবি করেন, এখন তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
এ বিষয়ে ১২ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ চৌধুরী একুশে মিডিয়াকে বলেন, ‘আমি তাকে ঠিক চিনতে পারছি না। আপনি ওয়ার্ড মেম্বারের সাথে কথা বলেন।’


৫ নম্বর ইউপি সদস্য আবদুল ওয়াসেফ একুশে মিডিয়াকে বলেন, ‘এলাকায় তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। চুরি করার অপরাধে জনসম্মুখে তার বিচার হয়েছিল। তারপর থেকে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। রোহিঙ্গা একটি মেয়েকে বিয়ে করে এলাকায় এসে পুনরায় খারাপ কাজ করছে। নিজের বউ এবং তার বোনকে নিয়ে বিভিন্ন জনের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। মামলায় নিরীহ মানুষকেও মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।


একুশে মিডিয়া/এমএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages