সংলাপে সীমাবদ্ধ রাকসু নির্বাচন, ছাত্র নেতাদের ক্ষোভ - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Tuesday 26 November 2019

সংলাপে সীমাবদ্ধ রাকসু নির্বাচন, ছাত্র নেতাদের ক্ষোভ


একুশে মিডিয়া, রাবি প্রতিনিধি:>>>
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের জন্য কমিটি ঘোষণা করা হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। সেই থেকে আশায় বুক বেঁধেছিল বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
নির্বাচনে সহাবস্থান নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সংলাপ শুরু করে রাকসু কমিটি। তবে দীর্ঘ দশমাস ধরে শুধুই সংলাপে সীমাবদ্ধ থাকায় সংলাপের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রাকসু নির্বাচন আদৌ হবে কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর মাঝে।
রাকসু সংলাপ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জানুয়ারি ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানকে আহŸায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই থেকে কমিটি গঠনের পর ১২টি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন, ৯টি অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন এবং ৪টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে গত ৭ ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপ শুরু হয়।
এবং সর্বশেষ ২০ সেপ্টেম্বর শাহ মখদুম হলে রাকসু সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে নির্বাচনকে ঘিরে আর কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। নির্বাচনের এই দীর্ঘসূত্রিতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বর্তমান প্রশাসনের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ছাত্র সংগঠনের নেতারা। তারা মনে করেন, বর্তমান প্রশাসন দিয়ে রাকসু নির্বাচন সম্ভব না।
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমরা রাবি শাখা ছাত্রলীগ রাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছিল হলগুলোর সাথে সংলাপ শেষ করে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাকসু নির্বাচনের আয়োজন করবে। সংলাপ শেষ হওয়ার পর যদি কোন কর্যকর পদক্ষেপ দেখতে না পাই, তাহলে আবার কথা বলব। যাতে দ্রæত রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।
বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন লোক দেখানো সংলাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে অপমান করছে অভিযোগ করে রাবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, রাকসু নির্বাচন নিয়ে আমরা রাবি শাখা ছাত্রদল হতাশ। একটা লোক দেখানো সংলাপের মাধ্যমে ৩৮ হাজার শিক্ষার্থীর স্বপ্নকে অপমান করেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। রাকসু সকল শিক্ষার্থীর আবেগের জায়গা ও দাবি আদায়ের প্লাটফর্ম।
এটা নিয়ে প্রশাসনের লজ্জাজনক প্রতিশ্রæতি দেওয়া অন্যায়। শিক্ষার্থীদের সাথে যারা রাকসু নিয়ে এমন নাটক করছে তাদের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। এই প্রশাসনের মাধ্যমে রাকসু নির্বাচন আদ্যো সম্ভব না। যদি এই দুর্নীতিগ্রস্থ প্রশাসনের পর নতুন কোন প্রশাসন আসে তখন হয়তো নির্বাচন সম্ভব। তারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্থ কিভাবে রাকসু নির্বাচনে ভালো রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করবে। বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে অনেকেই দুর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।
জবাবদিহিতার জায়গা এড়িয়ে যেতেই প্রশাসন রাকসু নির্বাচন দিচ্ছে না মন্তব্য করে ছাত্র ইউনিয়ন রাবি সংসদের সভাপতি শাকিলা খাতুন বলেন, বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু নির্বাচন না দিয়ে অনেক জবাবদিহিতার জায়গা এড়িয়ে যেতে পারে। রাকসু থাকলে এগুলো পারতো না। ক্যাম্পাসে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন অনেক কিছুই করছে শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়া কে তোয়াক্কা করে না।
রাকসু নির্বাচন বাদে ক্যাম্পাসে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, হল প্রাধ্যক্ষ নির্বাচন, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের নির্বাচনসহ সকল ধরনের নির্বাচন হয়। কিন্তু রাকসু নির্বাচন হয় না। কারণ তাদের একটা ভয় আছে রাকসু নির্বাচন হলে জবাবদিহিতার জায়গা তৈরি হবে। প্রশাসন চায় না ছাত্র নেতৃতের মাধ্যমে জবাবদিহিতার জায়গা তৈরি হোক। এজন্যই রাকসু নির্বাচন দিচ্ছে না।
এবছর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না দিলে কঠোর আন্দোলনে হুশিয়ারি দিয়ে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা রাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম। সব ছাত্র-সংগঠন রাকসু নির্বাচনের জন্য একমত হয়ে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে। অবশেষে আমরা যখন আন্দোলনে নামলাম তখন প্রশাসন রাকসু নির্বাচনের কথা বলে বিভিন্ন সংলাপের আয়োজন করল। ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ শেষ হওয়ার পর তারা বিশ^বিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের সাথে সংলাপ শুরু করল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দেখছি সংলাপের নামে নাটক করছে। কোন দৃশ্যমান ফলাফল আমরা এখনও দেখতে পাইনি।
আমরা প্রশাসন কে ডিসেম্বর পর্যন্ত সুযোগ দিয়েছি তারা সব কাজ শেষ করুক। এর ভিতরে যদি তারা স্বেচ্ছায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করে জানুয়ারি থেকে আবার আন্দোলনে নামবো। আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে সে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্রশাসনের দক্ষতার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে রাবি বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর শাখা সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু হাসান বলেন, বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের রাকসু কেন্দ্রিক যে উদ্যোগ এটা শুধু মাত্র টালবাহানা। তারা কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যদি রাকসু নির্বাচন ও প্রশাসনের জবাবদিহিতামূলক জায়গা তৈরি করতে চাইতো তাহলে একটা ছাত্রপরিষদ ডেকে ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামত, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে রাকসু বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করত। আসলে কার্যত কোন পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে না।
শুধু মাত্র আইওয়াস করছে শিক্ষার্থীদের সামনে। তারা চায় না প্রশাসনিক কাঠামো তে কোন জবাবদিহিতার জায়গা তৈরি হোক। কারণ তারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্থ, নীতিগ্রস্থ। প্রশাসনিক কাঠামো পরিচালনার জন্য যে দক্ষতা দরকার তাদের সে দক্ষতা নেই। রাকসু হলে তাদের যে ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধারের জায়গা সেটা থাকবে না।
রাকসু নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রাকসু সংলাপ কমিটির সভাপতি প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিগত দিনগুলো আমাদের ব্যস্ততার মধ্যে কেটেছে। বিশ^বিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম তাই রাকসুর ব্যাপারে কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি নি। এরপরে সামনে সমাবর্তন, সমাবর্তনের পরে আমরা আবার রাকসু নির্বাচনের কাজ পুনরায় শুরু করবো।
দীর্ঘ সূত্রিতার বিষয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে একটু সময় লাগবে। আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন।





একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages