১০৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ঘোড়াঘাট সড়ক প্রশস্ত করন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম তদন্ত শুরু - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday 16 January 2020

১০৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ঘোড়াঘাট সড়ক প্রশস্ত করন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম তদন্ত শুরু


একুশে মিডিয়া, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি:>>>
উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় পলাশবাড়ী-গাইবান্ধা সড়ক প্রশস্ত করন প্রকল্প গ্রহন করে সরকার। তিনটি প্যাকেজে এই প্রকল্পের মোট ব্যায় ধরা হয়েছে ১শ ৩ কোটি টাকা। বিগত বছরের শেষ দিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আপেল জানান প্রথম প্যাকেজে গাইবান্ধা শহর হতে ঢোলভাংগা সাকোয়া ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ১৩ কি.মি রাস্তায় ৫০ কোটি টাকার কাজ ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে শুরু করে।
২য় প্যাকেজ সাকোয়া হতে পলাশবাড়ী জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৮ কিমি সড়কে ৪০ কোটি টাকার কাজ যথারীতি ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শুরু করে। এবং সর্বশেষ ৩য় প্যাকেজে পলাশবাড়ী জিরো পয়েন্ট হতে ঘোড়াঘাট পর্যন্ত ৯ কি.মি সড়ক ১৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা ব্যায়ে পুর্বের ন্যায় পৃথক ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শুরু করে। ৩টি প্যাকেজে ৯টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১শ ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে মোট ৩০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করন কাজ বর্তমানে  অব্যাহত রয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, প্রকল্পের শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহন করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো। ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় ৮টি ব্রিজ নির্মাণ করার কথা থাকলেও শুধু মাত্র ঢোলভাংগায় ১টি ব্রীজ পুর্ণঃ নির্মান করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৭টি ব্রীজের দু পার্শ্বে জোড়াতালি ঢালাই দিয়ে সম্পুর্ণ নতুনের মতই তৈরী করা হয়েছে।
যা টেকসই হবেনা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ৩০ কি.মি সড়কের বিভিন্ন স্থানে পুকুর ডোবা ও খাল রয়েছে এসব স্থানে ব্রিক ওয়াল ও প্যালাসাইটিং নির্মান করার কথা থাকলেও অধিকাংশ স্থানে তা করা হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে রাস্তার বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। রাস্তায় খননের পর রোলারিং ও কিউরিং ঠিক মত না করার ফলে সড়কের অধিকাংশ স্থান দেবে গিয়ে খালা খন্দে পরিনত হয়েছে। বার বার জোড়া তালি দিলেও খালাখন্দ কিছুতেই পুরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
রাস্তার পুরাতন কার্পেটিং তুলে যৎ সামান্য নতুন ইট, পাথর ও বালি মিশিয়ে রোলারিং করা হয়েছে যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে মনে করেন সচেতন মহল।কার্পেটিং করার সময় নিম্ন মানের বিটুমিন চিট পাথরের পরিবর্তন বড় পাথর ব্যবহার করার অভিযোগও রয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে। প্রকল্প এলাকার ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে তুলশিঘাট ও পলাশবাড়ী-গাইবান্ধা বাসষ্ট্যান্ডে প্রায় ৪০০ মিটার কনক্রিট ঢালাই কাজ ধরা হয়েছে। এসব স্থানে নিম্নমানের রড ও প্রয়োজনের তুলনায় কম সিমেন্ট ব্যবহার করে ঢালাই করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
এছাড়াও ঘোড়াঘাট সড়কের মেরীরহাট নামক স্থানে ড্রেন নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তারা জানান, নিম্ন মানের ইট বালু সিমেন্ট ও চিকন রড ব্যবহার করে ড্রেন দুটি নির্মাণ করা হয়েছে ২/৪ বছর টিকবে কিনা সন্দেহ আছে। কার্পেটিং এর আগে রাস্তা ভাল ভাবে পরিস্কার করে বিটুমিন ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও তা ভালভাবে পরিস্কার না করেই বিটুমিন ব্যবহার করে কার্পেটিং করা হচ্ছে।
ফলে কার্পেটিং এর টেকসই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীরা। ১শ ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত রাস্তার কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এমন নিম্ন মানের কাজ করছেন বলে দাবী করেন সচেতন মহল।
তারা আরো বলেন, কতিপয় সরকার দলীয় বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা, কতিপয় সাংবাদিক, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তার কারনে সরকারের সর্ববৃহত এই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে ১৪ জানুয়ারী উল্লেখিত কাজটি তদন্তে আসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট গাইবান্ধায় সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রংপুর এর সহকারী পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান ১৪ জানুয়ারি দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট গাইবান্ধায় সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা এর পরিচালকসহ এনফোর্সমেন্টের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 
তিনি আরো জানান, টিম তথ্য সংগ্রহ সাপেক্ষে জানতে পারে, গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলায় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের জন্য ১০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়, যার সম্পাদন প্রক্রিয়া ৩টি প্যাকেজের মাধ্যমে চলমান। টিম সরেজমিনে ব্রিজ নির্মাণের কাজ পর্যবেক্ষণ করে এবং কাজের গুণগত মান যথাযথ হয়েছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে। মতামত প্রাপ্তি সাপেক্ষে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে অভিযান পরিচালনাকারী টিম।




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages