দোহারে লকডাউনে বাড়ি ও দোকান ভাড়া মওকুফ করার দাবি - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Saturday 4 April 2020

দোহারে লকডাউনে বাড়ি ও দোকান ভাড়া মওকুফ করার দাবি


মোঃ জাকির হোসেন, জেলা প্রতিনিধি:
করোন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘর থেকে বাইরে আসছেন না মানুষ। হঠাৎ আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার শ্রমজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের দুশ্চিন্তাটাই বেশি। এছাড়া বেসরকারি চাকুরিজীবীরাও আছেন মাস শেষ হয়ে গেছে ঘর ভাড়া দেওয়ার ভয়ে।
ঢাকার দোহার উপজেলা হচ্ছে বানিজ্যিক ও উন্নত নগরী। জীবিকার তাগিদে দোহার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কর্মজীবি মানুষদের থাকতে হয় ভাড়া বাসায়, থাকেন শিক্ষকগণও। এমনিতেই বছর শেষে দিতে হয় বাড়তি ভাড়া। দোহারের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের বেতন খুবই কম। তার ওপর বর্তমান পরিস্থিতিতে কর্মক্ষেত্রে যেতে না পারা, শিক্ষার্থীদের টিউশনি, কোচিং ক্লাস বন্ধ থাকায় আয়ের উৎস থেমে গেছে। 
দোহার উপজেলার জয়পাড়া, নারিশা, মেঘুলা, কার্তিকপুরসহ আরও কিছু এলাকা হচ্ছে বানিজ্যিক এলাকা। এই এলাকাগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। বানিজ্যিক এলাকা হওয়ায় এসব এলাকায় দোকান ভাড়াও অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক বেশি। এসকল এলাকার কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান ছাড়া সমস্ত দোকান ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসা বন্ধ রেখে দোকান ভাড়া দেওয়াটা ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এয়াড়াও দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে যারা চাকরি করেন তাদের বেতন পাওয়ার আশা কম। যারা দিনমজুরি করেন তাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলার মেঘুলা এলাকার শিক্ষক নাজির আহম্মেদ জানান, ‘আমি মনে করি যারা বাড়ি ভাড়া দিয়ে সংসার চালায় তাদের বিষয়টা ভিন্ন। কারণ দোহারে বেশিরভাগ পরিবারের সদস্য প্রবাসী। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ বাড়িওয়ালা ও দোকান মালিকরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। তাই করোনার কারণে ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া না নিলে বাড়িওয়ালাদের খুব সমস্যা হওয়ার কথা না। তাছাড়া করোনার কারণে গোটা দেশ একধরনের অবরুদ্ধ। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের বিনা বেতনে ছুটি দিয়েছে। বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা এই দুঃসময়ে বাড়ি ভাড়া কোথা থেকে দেবেন?
দোহারের জয়পাড়া বাজারের ব্যবসায়ী কামরুল হোসেন বলেন, আমরা ব্যাবসায়ীদের ১২ মাস ব্যাবসা ভালো হয়না। ব্যাবসার মৌসুমে ব্যাবসা ভালো থাকে। বাকী মাস গুলোমতে আমরা মূলধন থেকে খরচ বহন করি। এর মাঝে দেশের মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে যে দুর্যোগ মুহুর্তে দোকানের মালিক ও বাসাবাড়ির মালিকদের উচিৎ ১/২মাসের ভাড়া মওকুফ করা। যেখানে মানুষ ভাত পাচ্ছে না সেখানে বাড়িভাড়া দেবে কীভাবে?'   
দোহারের কার্তিকপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা রাসেল পেশায়ে একজন ছোট টেইলার্স এর দোকানদার। তিনি বলেন, দুই কক্ষের বাসা ভাড়া দিতে হয় ৫ হাজার টাকা। তার বাইরে বিদ্যুৎ বিল। ভাড়া বাসায় নানা ধরনের সমস্যা থাকলেও সব হজম করছি, প্রতিবছর বিভিন্ন বাহানায় ৫০০/১০০০ হাজার টাকা ভাড়া বাড়ান বাড়ির মালিকগণ। বাড়িওয়ালার সঙ্গে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কথাও বলা যায় না। এখন করোনাভাইরাসের কারণে বাসায় অলস সময় কাটাচ্ছি। স্টাফ বেতন, দোকান ভাড়া, বাসা ভাড়া সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছি। বাড়িওয়ালা যদি ভাড়া মওকুফ করে দেন, তাহলে আমার মতো ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী ও দরিদ্ররা উপকৃত হতো।
করোনার কারণে ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় কয়েকজন বাড়ির মালিক এক বা দুই মাস বাসা ভাড়া না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এয়াড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে বসবাসরত নিম্নমধ্যবিত্ত যেসব পরিবার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন তাদের একমাসের ভাড়াও মওকুফ করার জন্য বাড়িওয়ালাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি জানান, বাড়িওয়ালারা যদি একমাসের ভাড়া মওকুফ করেন তাহলে সিটি করপোরেশন তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মাসের পানির বিল মওকুফ করবে। আর কেউ যদি এই দুর্দিনে মানুষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করেন তাহলে নেওয়া হবে যথাযথ ব্যবস্থা। 
এদিকে এমন পরিস্থিতিতে সারাদেশের ভাড়াটিয়াদের বাসাভাড়া, দোকানভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিলসহ সব ধরনের ইউটিলিটি বিল মওকুফের দাবি জানিয়েছে ভাড়াটিয়া পরিষদ। ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি মো. বাহারানে সুলতান বাহার ও সাধারণ সম্পাদক খাতুনে জান্নাত ফাতেমা খানম যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।



একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages