সাজেদুল ইসলাম টিটু, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি:>>>
আজ বুধবার দুপুরে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে অসহায়,দুস্থ ও দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত দুলাল ওরফে কটাকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন মানবিক সংগঠন মানবতার দেওয়ালের উদ্যোক্তা দেওয়ান রাসেল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,পৌর প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক আহসান হাবিব,সিনিয়র সহ-সভাপতি সাজেদুল ইসলাম টিটু,সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দুলাল, কবি আব্দুল বাকী,সমাজ সেবক,মামুনুর রশীদ প্রমূখ।
উল্লেখ্য,কিছুদিন পূর্বে কিডনি ড্যামেজ জনিত রোগে অসুস্থ হোটেল বয় দুলাল ওরফে কটাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবতার দেওয়ালের পক্ষ থেকে তাকে এ সহযোগীতা প্রদান করা হয়।
নিচে পূর্বের সেই পোষ্টটি সংযোজন করা হলঃ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
পাঁচবিবির হোটেল বয় দুলাল ওরফে কটাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন,মানবিক সাহায্যের আবেদন
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
দুলাল হোসেন নাম হলেও জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌরসভার মানুষ তাকে কৌটা বা কটা নামে চেনে। বুদ্দি হওয়ার পর থেকে পাঁচবিবি সদরের রাখী সুইটমিট,খুশি,দেওয়ান,জয় হোটেল সহ বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ম্যাসিয়ার বা হোটেল বয় হিসেবে মানুষকে খাবার পরিবেশন করে আসছেন দুলাল ওরফে কটা।
হোটেলে তার হাতের খাবার খায়নি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। আমি নিজেও তার পরিবেশন করা খাবার বহুবার খেয়েছি। তার অসুস্থতার খবরটি শুনে খুবই খারাপ লাগলো। এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে এক সময়ের টগবগে যুবক দুলাল ওরফে কটা।
চার মাস পূর্বে ধরা পড়েছে তার দুটি কিডনি ড্যামেজ হতে চলেছে। শরীরে জোরবল পাচ্ছেনা। মুখ সহ পুরো শরীর ফুলতে শুরু করেছে। পিঠের পিছনে কোমরে প্রচন্ড ব্যথা। এমন দুরারোগ্য ব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধার পর দিন খাটা দিন খাওয়া এই মানুষটি এখন হোটেলে কাজ করতে পারছেনা।
তার পরিশ্রমের টাকা দিয়ে বাড়িতে চাল কিনতে হয়। চার মেয়ের পিতা সে,হোটেলের কাজের রোজগার দিয়ে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে পাঁচবিবি নাকুরগাছি বিএমআই কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী তার ছোট মেয়ে। স্ত্রী ও এই মেয়েকে নিয়ে এখন তার সংসার।
অসুস্থতার কারণে রোজগার বন্ধ হওয়ায় স্ত্রী ও মেয়ের মুখে খাবার তুলে দিতে ব্যর্থ কটার নিকট নিজের চিকিৎসা করা দুরুহ ব্যাপার। বেশি অসুস্থতার কারণে গত কয়েকদিন কাজ করতে না পারায় বাড়িতে চুলা জ্বালা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রতিবেশি দু/একজন কিছু চাল দেওয়ায় কোন রকম এখনো বেঁচে আছে পরিবারটি।
ছোট থেকে খেটে খাওয়া মানুষ সে। সাহায্য চেয়ে মানুষের কাছে হাত পাতেনি কখনো। কারো নিকট থেকে কিছু সহযোগীতা নিতে বড্ড সংকোচ তার। সে নিজে থেকে পৌর প্রেসক্লাবে সাহায্যের জন্য আসেনি। পৌর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দুলাল তাকে নিয়ে এসে ছিলেন।
তার জীবনের বর্ণনা শুনে উপস্থিত পাঁচবিবি পৌর প্রেসক্লাবের দুজন সাংবাদিক তাকে তাৎক্ষণিক কিছু টাকা সহযোগীতা করতে চাইলে সে নিতে সংকোচ করে।
যার বাড়িতে চাল নেই,যে কিনা টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেনা, অথচ,সাহায্য নিতে তার সংকোচ। এদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। যারা না খেয়ে থেকেও সংকোচের কারণে মানুষের নিকট চাইতে পারেনা,দান করার ব্যাপারে তাদেরকেই প্রধান্য দেওয়ার কথা আমাদের ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে। এরাই সাহায্য পাবার প্রকৃত যোগ্য।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় দুলাল ওরফে কটার বয়স ছিল পাঁচ/ছয় বছর। তখন থেকে হোটেলে প্লেট পরিস্কার করা দিয়ে কাজের শুরু। অসুস্থ হওয়ার পূর্ব মুহুূত পর্যন্ত একটানা প্রায় পঞ্চাশ বছর এই পেশার সঙ্গে জড়িত সে। তার বর্ণনা অনুযায়ি পাঁচবিবির সর্ববৃহৎ হোটেল রাখী সুইটমিটে সে একটানা তের বছর কাজ করেছে। এ ছাড়াও জয়পুরহাট,সান্তাহার,হিলির বিভিন্ন হোটেলে কাজের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে সে।
১৯৭৯ সালে রাখী সুইটমিটে তার প্রতিদিনের হাজিরা ছিল মাত্র পাঁচ টাকা। সেই বছর সে বিয়ে করে। রাখী সুইটমিটের প্রয়াত স্বত্তাধিকারী জিতেন বাবু পাঁচবিবির বিশিষ্ট কিছু ব্যাক্তির সুপারিশে দুই টাকা বাড়িয়ে দিয়ে তখন তার হাজিরা সাত টাকা নির্ধারণ করে দেন।
বিয়ের পর খুশি হয়ে শশুর বাড়ি থেকে জামাই দুলাল ওরফে কটাকে দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। নিজে বিভিন্ন ভাবে আরো দুহাজার টাকা সংগ্রহ করে এবং এনজিও থেকে এক হাজার টাকা ঋন নিয়ে পাঁচ হাজার টাকায় পাঁচবিবি পৌর এলাকার দক্ষিণ গোপালপুরে দুই শতাংশ জায়গা কিনে ১৯৭৯ সাল থেকে বাড়ি করে সেখানেই বসবাস করছে সে।
এই অসহায় পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী ব্যাক্তিটিকে বাঁচাতে সর্ব শ্রেণির মানুষের সহযোগীতা কামনা করছি।
দুলাল ওরফে কটার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে,করতে পারেন,এই নাম্বারে- 01831-928315.
যদি কোন হৃদয়বান ব্যাক্তি অর্থনৈতিক ভাবে এ পরিবারটিকে সাহায্য করতে চান,তবে দুলাল ওরফে কটার ছোট মেয়ের বিকাশ একাউন্টে সহযোগীতা করতে পারবেন,এই নাম্বারে-01737-913546.
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment