![]() |
বাঁশখালী উপজেলা ও ১৪ ইউনিয়নের ওয়েব সাইট নেওয়া ছবি। |
মোহাম্মদ ছৈয়দুল আলম, চট্টগ্রাম:
সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ দেশের প্রাচীনতম একটি স্থানীয় সরকারী প্রতিষ্ঠান। এটি তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের সবচেয়ে কাছের সরকার বলে পরিচিত রয়েছে।
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলা, পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে অধিকাংশ ওয়েবসাইটে সঠিকভাবে কোন তথ্য নেই বলেই চলে।
বর্তমান সরকারের ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্চে দেশ, তখনই থেমে আছে বাঁশখালী উপজেলার সকল সরকারি অনলাইন তথ্য বাতায়নগুলো। ফলে বিশ্বায়নের ডিজিটাল যুগে এসেও সমাজের সচেতন মহলের বাধা পয়ে পড়েছে বাঁশখালী উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা প্রাপ্তি তথ্যগুলো থেকে।
২০১০ সালের ১১ নভেম্বর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয় থেকে এবং নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রশাসক মিস হেলেন ক্লার্ক ভোলা জেলার চর কুকরিমুকরি ইউনিয়ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একযোগে সারাদেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদে একটি করে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) উদ্বোধন করেন।
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপিত তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক কেন্দ্র ইউডিসি পরিষদকে নতুন মাত্রা প্রদান করে।
উদ্বোধনের ৮ বছর পরেও বাঁশখালী উপজেলা, পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে তথ্য সেবা কেন্দ্র থেকে সাধারণ মানুষ তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে। যদিও সরকারি ভাবে প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ এই সব ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
প্রতিটি ইউনিয়নের নিজস্ব ওয়েবসাইটে কেবলমাত্র পুরনো সব তথ্যই ভেসে বেড়াচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে একজন করে পুরুষ বা নারী উদ্যোক্তা রয়েছে। তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুগোপযুগী করে গড়ে তুলে এসব জায়গায় বসানো হয়েছে। প্রতিনিয়ত ইউনিয়নের মানুষের মাঝে তারা সেবা প্রদান করছে।
তথ্য অনুসদ্ধানে আরও জানা যায়, বাঁশখালীর ১৪টি ইউনিয়নের সরকারি ভাবে খুব উন্নতমানের উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। তার মধ্যে কম্পিউটার, মডেম, পাওয়ার সাপ্লাই (ইউপিএস), প্রিন্টার, ওয়েবক্যাম, টেবিল, চেয়ার, হোয়াইটবোর্ড, ডিজিটাল ক্যামেরা, আইপিএস, মহান মুক্তিযোদ্ধ ও ইতিহাস সমৃদ্ব দলিলসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সামগ্রী।
কিন্তু বিগত ২০১৬ সালের ২৮ মে ইউপি নির্বাচনের পর জনপ্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে বাঁশখালী উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইটে কোন তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে এমনটি জান গেছে। যার ফলে নতুন কোন কিছুই জানা সম্ভবপর হচ্ছে না। এতে করে প্রকৃত তথ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সচেতন নাগরিকরা।
বাঁশখালী উপজেলা সাইটে প্রবেশ করে দেখা যায়, উপজেলা প্রশাসন ছাড়া বাকী তথ্যগুলো নেই কোন পরিবর্তন, যেমন উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের তালিকা দেখে কারো সাথে যোগাযোগ করতে ওয়েব সাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোবাইল নম্বরে ফোন করলে তারা বলেন, এখন বাঁশখালীতে নেই বদলী হয়ে অন্য উপজেলা কর্মরত আছেন।
বাঁশখালী উপজেলায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের তালিকাগুলো ভিন্নভাবে সেট করার থাকলেও উপজেলা প্রশাসনের মেনুর সঙ্গে উপজেলা টেকনিশিয়ান এর নাম, ছবি ও মোবাইল নম্বরসহ তার তথ্যগুলো সুন্দরভাবে আপলোড রয়েছে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষমতা এখন প্রায় শেষের পথে, কিন্তু সাইটে লিংক থাকলেও নেই কোন তথ্য।
বাঁশখালী পৌরসভা মেনুতে প্রবেশ করে দেখা যায়, পৌর কাউন্সিলরগণের তালিকায় নেই বর্তমান কাউন্সিলরের নাম, ছবি ও মোবাইল নম্বর, আছে বর্তমানের তালিকায় সব তথ্যগুলো
বাঁশখালী উপজেলা ১৪টি ইউনিয়নের ওয়েবসাইটের তথ্যগুলো:
পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ওয়বসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের কোন তথ্য নেই বলেই চলে।
সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইটে এ প্রবেশ করে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন চৌধুরৗ (খোকা) নাম ও ছবি, কিন্তু সে কোন মুক্তিযুদ্ধা নন, তার জীবিনীতে রয়েছে অন্য এক জন মুক্তিযুদ্ধার ইতিহাস। সাইট লিংক এই ভুল তথ্য ছাড়া আর কোন তথ্য নেই ।
খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, কিছু সঠিক তথ্য আপলোড রয়েছে।
বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, কয়েকটা আপলোড করলেও সঠিকভাবে কোন তথ্য নেই।
কালীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইট এ একাধিক বার প্রবেশ করার চেষ্টা করলেও প্রবেশ করা যায় নি।
বৈলছড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউ সচিব ছাড়া অন্য কোন নেই সঠিব তথ্য।
কাথরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যানের ছবি ছাড়া নেই অন্য কোন সঠিক তথ্য।
সরল ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, কিছু কিছু তথ্য আপলোড রয়েছে।
শীলকূপ ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, কোন তথ্য আপলোড নেই।
চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়া নেই কোন সঠিক তথ্য।
গন্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যানের তথ্য ছাড়া আর কোন নতুন তথ্য আপলোড করা হয় নি।
শেখেরখীল ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েব সাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, এই ইউনিয়নের কোন তথ্য আপলোড নেই বলেই চলে।
পুঁইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যা, ইউপি চেয়ারম্যানের তথ্য ছাড়া নতুন তথ্য আপলোড করা হয় নি।
ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যানের তথ্য ছাড়া আর কোন তথ্য আপলোড নেই।
বাঁশখালী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার ফোরামের সভাপতি ও খানখানাবাদ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ইয়াছিন আরাফাত একুশে মিডিয়াকে জানান, ভাষ্যমতে বিগত বেশ কিছুদিন যাবৎ ওযেব র্পোটালে আপলোড সমস্যা দেখা দিয়েছে সেহেতু অনেকক্ষেত্রে তথ্য আপলোড করতে সম্ভব হয়নি কিন্তু এই বিষয়ে কাজ করতে বাঁশখালী'র সকল উদ্যোক্তা তৎপর রয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলা টেকনিশিয়ান মাহমুদুল হকের প্রোফাইলটি উপজেলা প্রশাসনের মেনুতে থাকলেও তিনি একুশে মিডিয়াকে বলেন, আমার দায়িত্ব শুধু মাত্র উপজেলা পরিষদের, প্রশাসনের মেনুতে প্রোফাইল কেনো প্রশ্নে তিনি বলেন, এইটা ভুলে হয়েছে, তথ্য আপলোড়ের বিষয়ে তিনি বলেন, পাসওয়ার্ড সমস্যা কারণে ওয়েবসাইটে লগ ইন ঠিকভারে করা যাচ্ছে না। উপজেলায় কর্মরর্ত সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের তথ্যগুলো নিজ নিজ আপলোড করেন, সঠিক তথ্য আপলোড না করলে, সেটা তাদের বিষয়।
কালীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আ.ন.ম শাহাদত আলম একুশে মিডিয়াকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না, এইটা আমি দেখবো এবং ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তাও বেশি অভিজ্ঞ না হওয়ার কারণে ওয়েব সাইটের তথ্যগুলো আপলোড সহ বিভিন্ন কাজে কিছু ত্রুটি রয়েছে। প্রয়োজনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আলাপ করবো।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা ্আক্তার একুশে মিডিয়াকে বলেন, উপজেলা টেকনিশিয়ান কিছু দিন না থাকা কারণেই কিছু তথ্য আপলোড করা হয় নি, আজ থেকে টেকনিশিয়ান কাজ করছে, আগামীকাল থেকে উপজেলা সব তথ্য ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment