ছবিঃ সংগৃহীত
একুশে মিডিয়া, ঢাকা রিপোর্ট:
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যকে অমানবিক ও চরম প্রতিহিংসার বহি:প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বাহানা। মামলার তারিখ পড়লেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন’- আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দলের সভাপতি শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাঁর প্রতিহিংসার ভান্ডার এতই বড় যে, প্রতিদিন তিনি অবান্তর, অসত্য, কটুবাক্যের স্রোত বইয়ে দিলেও তাঁর সেই ভান্ডার খালি হয় না।
বুধবার (২৫ জুন) নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গতকালও কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে রিপোর্ট করেছে বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তাই তাঁকে আদালতে হাজির করা যায়নি। সরকারী-বেসরকারী এবং বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক’রা বলছেন তিনি অসুস্থ। তাহলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে শেখ হাসিনা সেটাকে নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারেন ?
যেহেতু বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলো চলমান, সুতরাং এই মামলাগুলোকে প্রভাবিত করতেই বেগম জিয়াকে নিয়ে সরকার প্রধান বিভিন্ন ফোরামে বক্তব্য দিচ্ছেন। আমি দলের পক্ষ থেকে আবারও বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও মন্ত্রী পদমর্যাদার নেতারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিন সিটি নির্বাচনে। সড়ক-মহাসড়ক দখল করে নির্বাচনী সভা-সমাবেশ করছেন তারা। বড় পিকআপ ভ্যানে বিশাল কালার মনিটর লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনে এসব অভিযোগ দেয়ার পরেও তারা সরকারের মুখ চেয়েই কাজ করছে। বর্তমানে ইলেকশন-গেট কেলেঙ্কারীর মূল হোতা আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনগুলোকে অন্যায়ভাবে সরকারের অনুকুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি বারবার উপেক্ষা করছে কমিশন। এই নির্বাচন কমিশনের কাছে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা অরন্য রোদন, গল্পকথা মাত্র। গণতন্ত্র মানে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সম্মতির ভিত্তিতে শাসন। আর এই গণসম্মতির প্রতিফলন ঘটে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। যে নির্বাচন স্বাধীন ক্ষমতাবলে নিরপেক্ষ দক্ষতার সাথে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বর্তমান কমিশন সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারছে না। সরকারী ভোট সন্ত্রাসের বৈধতা দেয়ার সিলমোহর হয়ে নির্বাচন কমিশন একের পর এক যে পর্বতপ্রমান অন্যায়গুলোকে জায়েজ করছে। নিত্য নতুন মডেল তৈরী করার জন্য একদিন তাদের চড়া মাশুল দিতে হবে।
তিনি বলেন, সারাদেশে বন্দুকযুদ্ধের নামে চলছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, এরই অংশ হিসেবে সোনারগাঁওয়ে ছাত্রদল নেতা আলমগীর হোসেন বাদশা র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আমি এই নৃশংস ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নিহতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং নিহতের স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর আইনজীবী সমর্থকগণ কর্পোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও শোভাযাত্রা করছে। এই মিছিলে পাবলিক প্রসিকিউটর, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এবং স্পেশাল পিপিগণ অংশগ্রহণ করেছেন, যা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার পরও তারা কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় আমি দলের পক্ষ থেকে নিন্দা জানাচ্ছি, অবিলম্বে নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর আহবান জানাচ্ছি।
অনুরুপভাবে রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক। উক্ত দু’টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারী কর্মকর্তারাও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকা মার্কার পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে।
অনুরুপভাবে রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক। উক্ত দু’টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারী কর্মকর্তারাও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকা মার্কার পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে।
গত পরশু দিন সিলেটে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দু’টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে সহজে ভোট কারচুপি করার জন্যই এই মামলা দায়ের।
আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ধানের শীষ প্রতীক সমর্থকরা হেনস্তার শিকার হচ্ছে। আটককৃত মনোনীত পোলিং এজেন্টসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের রাজশাহী ও রাজশাহী মহানগরীর বাহিরের বিভিন্ন থানার মামলায় চালান করে রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
অজ্ঞাত নামা মোবাইল নং-০১৭১০৪৩৪৩০১ থেকে ফোন করে নির্বাচনী এজেন্ট ও রাজশাহী জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী মোসাঃ রোকসানা বেগম টুকটুকি-কে বলা হয়-সে নির্বাচনী প্রচারণা করলে পুলিশ দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। টুকটুকি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে মতিহার থানা একটি সাধারণ ডায়েরী করে।
২৩ জুলাই ১৬ নং ওয়ার্ড ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীর প্রচার কাজে উক্ত ওয়ার্ড যুবলীগ কর্তৃক বাধা ও হুমকি প্রদান করা হয়। গত ২৩ জুলাই রাতে ১৯ নং ওয়ার্ডে ধানের শীষের ০৮টি ফেস্টুন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। গতকাল রাতে ধানের শীষের ৯ নং ওয়ার্ড নির্বাচনী কার্যালয় ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বলেও অভিযোগ করেন তিনি। একুশে মিডিয়া।”
No comments:
Post a Comment