
একুশে মিডিয়া, ঢাকা রিপোর্ট:
রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় তিন কলেজছাত্রের মৃত্যু আর বাসের দরজার ধাক্কায় রক্তাক্ত তরুণীকে মৃত ভেবে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া নিয়ে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। আলোড়ন তোলা মর্মান্তিক দুটি প্রশ্নই এড়িয়ে যান মন্ত্রী।
শুধু মন্ত্রী কিছুটা হেসে বলেন- বটে, যার যেটুকু অপরাধ, তার শাস্তি হবে ততটুকু। কিন্তু মন্ত্রীর মুখে ছিল চওড়া হাসি। যা নিয়ে এই বক্তব্যের কারণে উঠেছে তুমুল সমালোচনা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মন্ত্রীর সেই বক্তব্যের সমালোচনা করছেন অনেকেই। তুষার খান নামে একজন লিখেন, ‘মৃত্যুর কথা শুনেও একজন মন্ত্রী কী করে হাসতে পারে?’
রিজওয়ান হোসেন বাপ্পী লিখেন, ‘আসলে কিছু বলার ভাষা আমি পাচ্ছি না...আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি......এতো ভয়াবহ ঘটনার পর একটা মানুষ এইভাবে হাসতে হাসতে উত্তর দিতে পারে?’

রবিবার (২৯ জুলাই) দুপুরে বিমানবন্দর সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা কলেজ ছাত্রদের গায়ে বাস তুলে দেন এক চালক। এ ঘটনায় এক ছাত্রী আর নিহত দুই জন এবং আহত অন্তত ১০ জন। তারা রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ছাত্র। তাদের মধ্যে ছয় জন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি।
একই দিন সচিবালয়ে একটি অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন নৌমন্ত্রী। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। তারপরও সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, তিনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বলে।
মন্ত্রী শুরুতে বলবেন না বলেও পরে শুরু করেন কথা। এ সময় তিনি পুরোটা সময় হাসতে থাকেন। হাসতে হাসতেই তিনি বলেন, এ প্রোগ্রামের সঙ্গে কি এটা রিলেটেড? তবে আমি শুধু বলবো, দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা দোষী প্রমাণিত হলে তাদের শাস্তি দেয়া হবে।
সাম্প্রতিক একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও তাতে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিকরা আরও প্রশ্ন করলে মন্ত্রী সেগুলো এড়িয়ে দ্রুত সভাকক্ষ ত্যাগ করেন।
তার আগে শাজাহান খান বলেন, ‘নর্থ সাউথের শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগ উঠা হানিফ পরিবহণের শ্রমিকদের বিরুদ্ধেও প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গতকাল মৃত্যুর খবরে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের চওড়া হাসির জবাবে আজ প্রথমে মানববন্ধনে নামে শীক্ষার্থীরা। তবে পুলিশ মানববন্ধনে বাধা দিলে তারা এয়ারপোর্ট রোড বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এই বিক্ষোভ থেকে শীক্ষার্থীরা অবিলম্বে ঘাতক বাস চালককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবি জানায়। একইসঙ্গে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগও দাবি করেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এয়ারপোর্ট রোড বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। যার ফলে ওই এলাকায় সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। একুশে মিডিয়া।’
No comments:
Post a Comment