পুলিশের এএসপি আলমগীরের বৃক্ষরোপণের আগ্রহ দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন বহু মানুষ-একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Saturday, 28 July 2018

পুলিশের এএসপি আলমগীরের বৃক্ষরোপণের আগ্রহ দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন বহু মানুষ-একুশে মিডিয়া


একুশে মিডিয়া, ময়মনসিংহ রিপোর্ট:
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সার্কেলের এএসপি মো. আলমগীর (পিপিএম) বিপুল পরিমান গাছের চারা লাগিয়ে মানুষের মাঝে সাড়া জাগিয়েছেন।পুলিশের এই কর্মকর্তার বৃক্ষরোপণের আগ্রহ দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই তাদের বাড়ির আশ-পাশে বৃক্ষরোপণ করছেন। বৃক্ষরোপণে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করাই পুলিশ মহলে সুনাম কুড়িয়ে চলছেন এএসপি আলমগীর।

হালুয়াঘাট সার্কেলের এএসপি মো. আলমগীর (পিপিএম) বলেন, ২০০৩ সালে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানায় ওসি হিসেবে যোগদানের পরপরেই থানায় সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নেই। এর পর থেকেই বৃক্ষরোপণের প্রতি আমার আগ্রহ বাড়তে থাকে। সেখানে লেবু, কমলা, পেয়ারা, নারকেল, জাম এবং রেইনট্রিসহ প্রায় ৩ শতাধিক গাছ রোপন করি।

পর্যায়ক্রমে ওসি থাকা কালিন সময়ে ২০০৫ সালে আড়াই হাজার থানায় ৫০টি ফলজ গাছ, ২০০৯ সালে সেনবাগ থানায় অর্ধশতাধিক ফলজ গাছ, ২০১১ সালে পানছড়ি থানায় দেড়শতাধিক ফলজ গাছ রোপন করি। ২০১৭ সালে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সার্কেলের এএসপি হিসেবে যোগদানের পরেই ওসিদের সহযোগিতা নিয়ে ধোবাউড়া থানায় সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি আম, লিচু, চালতা, আনার, আমড়া এবং পেয়েরাসহ প্রায় ৩ শতাধিক ফলজ গাছ রোপন করি।

এছাড়াও হালুয়াঘাট থানায় দেড় শতাধিক ফলজ গাছ এবং সর্বশেষ এ বছরের জুলাই মাসে তারাকান্দা থানায় ৬ একর জমির মধ্যে সাড়ে তিনশ ফলজ গাছ রোপন করেছি। তিনি আরো বলেন, অনেক জায়গায় গাছে ফলন ধরেছে। পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গাছের ফল খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রিও করতে পারছে। আমার দেখাদেখি অনেকেই বৃক্ষরোপণের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। জীবনের বাকি সময়টুকুও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করে যেতে চাই।

এখন মানুষ আমাকে পুলিশ কর্মকর্তার বদলে বৃক্ষ পাগল হিসেবে চিনে। আড়াই হাজার পৌরসভার মেয়র সুন্দর আলী বলেন, ওসি আলমগীর সাহেব থাকাকালিন সময়ে আমাদের থানায় বৃক্ষরোপণ করে গেছেন। আজ আমরা তার লাগানো বিভিন্ন গাছের ফল খাচ্ছি। পুলিশের এই কর্মকর্তার দেখাদেখি আমাদের এলাকাতেও অনেকেই বৃক্ষরোপণ শুরু করে ছিল তা এখনও অব্যাহত আছে।

পানতড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তাহের বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তা তার দায়িত্বের বাহিরে যে সমাজে উন্নয়নমূলক ভূমিকা রাখতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ওসি আলমগীর। তার বৃক্ষরোপণ আমাদের উপজেলায় সাড়া জাগিয়েছে। তিনি সহজেই সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যেতেন এবং বৃক্ষরোপণে উৎসাহী করতে মাদক থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিতেন।

কলমাকান্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, তিনি পুলিশ সেটা কখনও সাধারণ মানুষকে ভাবতে দিতেন না। মানুষের সাথে তার সম্পর্ক ছিল বন্ধু সুলভ। তিনি থাকা কালিন সময়ে আমাদের থানার চেহারা বদলে গিয়ে ছিল। তার রোপনকৃত গাছের ফল এখন খাচ্ছে পুলিশ।

হালুয়াঘাট ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ বলেন, সার্কেল এএসপি আলমগীর একজন নীতিবান পুলিশ অফিসার। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েমসহ প্রতি শুক্রবার রোজা রাখেন। আমাদের সমাজে এমন পুলিশ অফিসার পাওয়া দূরুহ। তার চিন্তা-ধারণা পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। তিনি সুযোগ পেলেই স্কুল, কলেজ এবং গ্রাম গঞ্জে ঘুরে বেড়ান।

শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষকে বৃক্ষরোপণে আগ্রহী করার পাশাপাশি মাদক ও বাল্য বিয়ে থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেন। তার প্রচেষ্ঠায় গত এক বছরে হালুয়াঘাট এবং ধোবাউড়া উপজেলায় ৩০টির মত বাল্য বিয়ে বন্ধ হয়েছে।

ধোবাউড়া থানার ওসি মো.শওকত আলম বলেন, এএসপি স্যারের কল্যাণে আমাদের থানার পরিবেশ সুন্দর হয়েছে। মানুষ থানায় এসে বিভিন্ন গাছের ফল খাওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছে। ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃক্ষরোপণ করার জন্য সকলকে নির্দেশনা করলেও এএসপি আলমগীর ২০০৩ সাল থেকেই বৃক্ষরোপণ করে যাচ্ছেন এবং সাধারণ মানুষকে বৃক্ষরোপণে আগ্রহী করছেন। এটি আমাদের পুলিশের জন্য গর্বের বিষয়। এই বৃক্ষরোপণ পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্ব রাখবে।

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages