থমকে গেছে স্পোটর্স ম্যান কালুর সংসার। একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday 14 February 2019

থমকে গেছে স্পোটর্স ম্যান কালুর সংসার। একুশে মিডিয়া


একুশে মিডিয়া, রাবি প্রতিনিধি:>>>
জন্মগতভাবে এক পা ছোট, এক পা বড় মোখলেছুর রহমান কালুর। ছোট বেলায় প্রচন্ড খেলাধুলার প্রতি ঝোঁক ছিলো। খেলোয়াড় হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও শারিরীক প্রতিবন্ধী হওয়ায় উপায় মেলেনি। আর পরিবারের উপর দারিদ্র্যের কষাঘাতে লেখাপড়াও বেশি দূর এগোইনি। কিন্তু খেলার নেশা তিনি ছাড়িতে পারেননি। ছোটবেলা থেকেই স্টেডিয়ামে ঘুরাঘুরি করতেন। 
মাঠে খেলা চললে বাউন্ডারির পাশের বল কুড়িয়ে দিতেন। মাঝে মধ্যে স্কোর বোর্ড এর রান পরিবর্তন করে দিতেন স্বেচ্ছায়। এভাবেই কবে থেকে যে রাজশাহী জেলা স্টেডিয়ামের স্পোটর্স ম্যান হয়ে উঠলেন তা এখন আর মনে  করতে পারেন না। মনে পড়বে কী করে? তিনি তো এখন মৃত্যুও সাথে পাঞ্জা লড়ছেন! কথাও ঠিকমত বলতে পারেন না।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রেইন স্টোক করার পর থেকে রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনের এক সময়ের পরিচিত মুখ কালু মিয়ার দিন কাটে চার দেয়ালের মাঝে। অসহায় পরিবারে আরো দ্ইু সদস্য, কালু মিয়ার স্ত্রী বেবি বেগম ও মেয়ে সনিয়া খাতুন। স্ত্রী আর মেয়ে কোনো ভাবে দিন পার করছেন। স্বামীর অসুস্থতায় ডাক্তার দেখানো, ঔষুধ কেনার খরচ, তিনটি পেট চালিয়ে মাস আর পার হতে চায় না! বাধ্য হয়ে হাত পাততে হয় মানুষের কাছে।    
অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কারনে কালু মিয়ার মেয়ে সনিয়া পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। ইচ্ছা ছিলো পড়ালেখা শেষ করে সংসারের জন্য কিছু করার। কিন্তু এইচএসসি পাশ করে অর্থের অভাবে আর ভর্তিই হতে পারেননি। এখন বাড়িতেই দিন কাটে তার। মা বাইরে অর্থের সন্ধানে গেলে অসুস্থ বাবাকে দেখতে হয়।
রাজশাহীর ক্রীড়া জগতের প্রায় সবাই কালু মিয়াকে চেনেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট, বর্তমান তরুণ ক্রিকেটার সাব্বির রহমানসহ অনেকেই জানেন কালু মিয়ার অসুস্থতা ও পরিবারের দূর্দশার কথা। অসুস্থতার শুরুর দিকে সাব্বির দেখতে গিয়েছিলেন তাকে। অর্থনৈতিক কিছু সহযোগিতাও করেছিলেন। 
শারিরীক প্রতিবন্ধী কালু মিয়া স্পোটর্স ম্যান এর দায়িত্ব পালন কালে তিন থেকে চার বার ক্রিকেট বলে আক্রান্ত হন। তার বাম পায়ের থোড়ায় তিনবার বল লাগার কারনে অস্ত্রপ্রচার হয়েছে। এজন্যও তিনি শারিরীকভাবে বেশ অসুস্থ।
কালু মিয়া স্টোক করে অসুস্থ হওয়ার পর রাজশাহী ক্রিড়া সংস্থায় সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করে পরিবার। সেসময় মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দেয়া হয়। যা দিয়ে কিছুই হয়নি। এরপর আর কোনো সাড়া মেলেনি।
স্বামীর চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। মাসে তিন হাজারের বেশি টাকার ঔষুধ খরচ, তিনটি পেট চালানো। টাকার জোড়ার করা এক প্রকার অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় বেবি বেগমের কাছে। বাধ্য হয়ে তিনি টাকার জোড়ার করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন। শিক্ষার্থীদের কাছে ধরনা দেন। সহযোগিতার জন্য আকুতি জানান। তিন মাস আগে তিনি শিক্ষার্থীদের মুখে জানতে পারেন ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগ নেতা এহসান মাহফুজ অসহায়দের পাশে দাঁড়ান। একদিন পরিচয় হয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এহসানের সঙ্গে। এরপর থেকে পরিবারটিকে পথে বসার হাত থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন এহসান। 
কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান, ‘আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি পরিবারটি খুব অসহায় অবস্থায় আছে। আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখে এসেছি তাদের দুর্দশা। কালু আঙ্কেল খুবই অসুস্থ। ঠিক মত কথা বলতে পারেন না। আমরা তাদেরকে কিছু হেল্প করার চেষ্টা করেছি। ছোট একটা ব্যবসা দাঁড় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সেই হেল্প যথেষ্ট ছিলো না। ব্যবসাও দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি। সমাজের বৃত্তবানরা একটু এগিয়ে আসলেই খুব সহজে সমস্যাটা সমাধান হয়ে যেতো।
বেবি বেগমের কন্ঠেও একই সুর। তিনি সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি সদয় আহ্বান করে করে বলেন, ‘আমাদের একটু মাথা গোজার ঠাঁই আছে। আমার মেয়ে ইন্টার পাশ। তাকে একটা চাকুরির ব্যবস্থা করে দিলে আমাদেরকে মানুষের কাছে আর হাত পাততে হতো না।




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages