দিদার হোসাইন, একুশে মিডিয়া:ই-একুশে মিডিয়া
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী উপকূল শেখেরখীল ইউপির জলকদর খালের বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকার ফলে চরম দুর্ভোগ ও অনিশ্চিত জীবন যাপন করছে স্থানীয় অন্তত ১০ হাজার মানুষ।
২২ আগস্ট (মঙ্গলবার) সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়,২ নং ওয়ার্ডের শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ থেকে সরকার বাজার হয়ে মইজ্জারছড়ী এলাকার সুইচ গেইট পর্যন্ত প্রায় ১/২ কি.মি.বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকার ফলে আমাবস্যা -পূর্ণিমার জোয়ারের স্রোতে প্রতিনিয়তই প্লাবিত হচ্ছে পুরো এলাকা, চরম দুর্ভোগ ও নির্ঘুমে রাত পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকায় বসবাসরত সহস্রাধিক পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ।
বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকায় একদিকে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে অপরদিকে বর্ষার মৌসুমে সাম্প্রতিক টানা বর্ষনে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা না থাকায় পুকুর,মৎস্য প্রজেক্ট, ক্ষেতখোলা ও কৃষি জমি যেনো জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।এতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলেও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে।
২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ শামসুল আলম জানান, মইজ্জরছড়ী টেকের সুইস গেইট দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ থাকায় পুরো এলাকার বসতঘর পানি ঢুকে অনেক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদ আলম ফারুকী সাহেব নিজ উদ্যোগে এলাকার লোকজন নিয়ে বন্ধ সুইচ গেইটটি খোলে দিয়ে পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা করাতে পানিবন্দী থেকে মানুষ মোটামুটি মুক্তি পেয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মওলানা মোর্শেদ আলম ফারুকী বলেন,বেড়িবাঁধের প্রায় কাজ শেষের পথে, কিন্তু এক/দেড় কি.মি. বেড়িবাঁধ এখনো পর্যন্ত অরক্ষিত থাকার কারণে টানা বর্ষন ও বাঁধ উপড়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে বেশি পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করে উপজেলায় দেয়া হয়েছে।প্লাবিত হওয়ার পর ওয়াফদা ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমানসহ এলাকাটি পরিদর্শন করা হয়।
বিশেষ করে এই এলাকাটি বাণিজ্যিক এলাকা,সমুদ্রে মৎস্য আহরণ করতে যাওয়া বেশির ভাগ বোট এই এলাকা থেকে বরফ সংগ্রহ করে থাকে এবং এখান থেকেই ট্রাকে ট্রাকে ইলিশসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাপ্লাই করা হয়।ফাঁড়ির মূখ থেকে সরকার বাজার হয়ে মইজ্জারছড়ীর উত্তরাংশ পর্যন্ত বেড়িবাঁধ জোয়ারের স্রোতে খালে বিলীন হয়ে যাওয়াতে ওই বাঁধে ইউনিয়ন পরিষদের কর্মসূচির কাজ থেকে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার মাটি ভরাট করা হয়েছিল, কিন্তু জোয়ারের স্রোতে আবারও সব বিলীন হয়ে গেছে।এরই মধ্যে ওয়াফদা থেকে একটি বরাদ্দ দিয়েছে,ওই বরাদ্দ থেকে মাটি ভরাট করার জন্যে গাছের খুঁটি স্থাপন করা হয়, কিন্তু এখনো মাটি ভরাট করতে পারেনি,তবে ইঞ্জিনিয়ার মাটি ভরাট করার আশ্বাস দিয়েছে।আর পানি নিষ্কাসনের জন্যে মইজ্জারছড়ী টেকের সুইস গেইটটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই এটি যথাযথ খোলা রাখা দরকার, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর আমলে ওই সুইস গেইট এলাকায় একটি খাল খনন করা হয়েছিল,কিন্তু অধিকাংশ জায়গা -জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ার কারণে খালটি ভরাট করে জমি মালিকরা বসতঘর নির্মাণ করে ফেলেছে। যার ফলে সুইস গেইটটি বন্ধ হয়ে গেছে,এখন আমি সেটা নতুন ভাবে খোলে দিয়েছি যাতে পানি নিষ্কাসন করা ব্যবস্থা যথাযথ থাকে।
এছাড়াও ৩ নং ওয়ার্ডের শেখেরখীল ইউপি সড়ক, নাপোড়া -শেখেরখীল উচ্চ বিদ্যালয় সংযোগ সড়ক, রাজপুরী কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন দাখিল মাদ্রাসা সংযোগ সড়ক পাহাড়ি ঢলের স্রোতে বিলীন হয়ে যাওয়াতে বেহাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে,এতে স্কুল,মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা স্কুল, মাদ্রাসায় যাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে,নাপোড়া -শেখেরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করার জন্যে ইউপি চেয়ারম্যান নিজস্ব অর্থায়নে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। সড়ক গুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয়রা।
এব্যাপারে ওয়াফদা ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমান জানান,পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)থেকে গত বছর ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, জোয়ারের পানির স্রোতরোধ করতে ওই বরাদ্দ থেকে গাছের খুঁটি এবং ড্রাম সীট দেয়া হয়েছিল, কিন্তু ওই বরাদ্দের টাকা এখনো পর্যন্ত পাইনাই যার কারণে মাটি ভরাট করতে পারিনি,আর বরাদ্দটা কেটে দিয়েছে,এখন আপাতত কোন বরাদ্দ নেই।পরবর্তীতে কোন বরাদ্দ আসলে কাজ করতে পারবো। অন্যথায় কাজ করার কোন সুযোগ নেই। তবুও প্রয়োজনে আপনারা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাঁশখালী অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন বলেও জানান মুজিব
No comments:
Post a Comment