সাগরের তীরে বসে আকাশের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন মহাবিশ্বের তারার মোট সংখ্যা পৃথিবীর বালুকণার চেয়ে বেশি। এমন মন্তব্য করেছেন একজন আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী। আশির দশকের নিজের জনপ্রিয় টিভি শো কসমস এ তিনি এই মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু এটা আসলে কতটা সত্যি?
আকাশের তারা কি আসলে গণনা করা সম্ভব:আমরা এখন সেটাই মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করব। অধ্যাপক গ্যারি গিলমোর ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, যিনি মহাবিশ্বে তারার সংখ্যা গণনা করছেন অনেক বছর ধরে। যুক্তরাজ্যের চালানো প্রকল্প গাইয়া’র নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে একটি ইউরোপীয় মহাকাশযান, যেটি এখন আকাশের মানচিত্র তৈরির কাজ করছে।
![]() |
আমাদের মহাবিশ্বে কত তারা আছে, তা গণনার জন্য গাইয়া দল এখন তাদের ডাটা ব্যবহার করে মিল্কি-ওয়ে বা ছায়াপথের একটি বড় ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছে। অধ্যাপক গিলমোর বলছেন, প্রতিটি তারার পরস্পরের থেকে দূরত্ব অনুযায়ী পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে দুইশো কোটির চেয়ে বড় তারা রয়েছে। অর্থাত্ ইউরোপের অংশে যদি মোট তারার এক শতাংশ থাকে, তাহলে আমাদের ছায়াপথে হয়ত সব মিলিয়ে বিশ হাজার কোটি তারা আছে।
![]() |
কিন্তু এতে কেবল একটি ছায়াপথের হিসাব। মহাবিশ্বে বেশিরভাগ ছায়াপথে আমাদের ছায়াপথের মতই তারা থাকে। অধ্যাপক গিলমোর বলছেন, সে কারণে আমরা একে গড় হিসাব তৈরির কাজে লাগাতে পারি। অর্থাত্ যদি মোট ছায়াপথের সংখ্যা ধারণা করা যায়, তাহলে তারার সংখ্যা বের করা সম্ভব হবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য সেটা হয়ত বড় সমস্যা নয়। যদি দশ হাজার ছায়াপথ থাকে, একটিতে হয়তো বিশ হাজার কোটি করে তারা আছে।
![]() |
এবার সাগর তীরের অংক:শুরুতেই হিসাবে নিতে হবে বিশ্বের সব সাগরের তীরে ঠিক কি পরিমাণ বালু থাকে। এজন্য সমুদ্র পৃষ্ঠের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা পরিমাপ করতে হবে। সেজন্য সাগরের তীরের হিসাব করলে হবে না, হিসাব করতে হবে উপকূলীয় এলাকার পরিমাপের। এ নিয়ে অবশ্য বিশেষজ্ঞরা যেমন একমত হতে পারেন না তেমন, উপকূলীয় এলাকার মাপ বাড়ে কমে। স্থির থাকে না।
![]() |
তারপরেও বিবিসি একজনের সঙ্গে কথা বলেছে যিনি একটি সংখ্যা জানিয়েছেন। উপকূল নিয়ে গবেষণা করে এমন প্রতিষ্ঠান ডেল্টারসের গবেষক জেনাডি ডনসিটস বলছেন, পুরো পৃথিবীর উপকূলের পরিমাপ করা বিশাল দুঃসাধ্য এক কাজ। ওপেন স্ট্রিটম্যাপের মতো ফ্রিম্যাপ ব্যবহার করে কম্পিউটার ডাটার মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে বরফাচ্ছন্ন এলাকাসহ উপকূলীয় এলাকার দৈর্ঘ্য ১১ লাখ কিলোমিটারের মতো।
![]() |
যার মধ্যে তিন লাখ কিলোমিটার এলাকা বালুময় সৈকত। এখন যদি তারার সংখ্যার সঙ্গে তুলনা করতে হয়, তাহলে দেখা যাবে, মহাবিশ্বে তারার সংখ্যা ১০ সেক্সটিলিয়ন, যেখানে বালুকণার সংখ্যা হবে চার সেক্সটিলিয়ন। তাহলে এটি ঠিকই যে মহাবিশ্বে বালুকণার চেয়ে তারার সংখ্যা বেশি। বিবিসি।একুশে মিডিয়া।’
ভিডিও দেখুন:
No comments:
Post a Comment