স্বর্ণ ব্যবসায়ী হত্যাকান্ড, এখনও আতঙ্ক কাটেনি ভাড়াটিয়াদের!-একুশে মিডিয়া - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

ক্লিক করুন

Breaking News

Home Top Ad

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday, 12 July 2018

স্বর্ণ ব্যবসায়ী হত্যাকান্ড, এখনও আতঙ্ক কাটেনি ভাড়াটিয়াদের!-একুশে মিডিয়া


একুশে মিডিয়া,  ষ্টাফ রিপোর্টার:

স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষের খন্ডিত লাশ উদ্ধার হওয়ার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে আমলাপাড়ার সেই বাড়ীর ভাড়াটিয়ারা। কেসি নাগ রোডের নজরুল ইসলাম ঠান্ডুর বাড়ির ভাড়াটিয়ারা রাতে ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। ফ্লাটের ভেতরের বাথরুমে রাতে একা যেতেও তারা ভয় পাচ্ছে।

নীচ তলার ভাড়াটিয়া মিন্টু সাহার স্ত্রী বলেন, ফ্লাট বাড়ি। বাইরে কি হয়, না হয় কিছুই জানা যায় না। লাশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা স্বাভাবিকভাবেই বসবাস করেছি।
লাশ পাওয়া যাওয়ার পর থেকে আমাদের খাওয়া, ঘুম সব বন্ধ। কখনো ভাবতেও পারিনি এমন কিছু হতে পারে। ভয়ে রাতে ঘরের বাইরেও যাই না। আমাদের মধ্যে আতঙ্ক ঢুকে গেছে, ঘরে একা ভয় পাই। খবরটা শুনার পর থেকে আমার শাশুড়ির ব্লাড প্রেসার বেড়েছে। আমার দুই ছেলের কাউকে এখন আর বাইরে যেতে দেই না। আশ্চর্য ব্যাপার একজন মানুষকে মেরে ফেলল আর আমরা কেউ জানতেও পারলাম না! দোতলায় কেউ মশলা বাটলেও আমরা তার শব্দ পাই।
কিন্তু হ্যা, দুর্গন্ধ পেয়েছিলাম, তবে ভাবিনি এমন কিছু হতে পারে। উনি ব্যাচেলর মানুষ, হার্টের রোগী, আমরা তার সঙ্গে তেমন কথাও বলতাম না। তার বাসায় কেউ আসতো না, বাপন সরকার বাবু ছেলেটা শুধু আসত। উনার সম্পর্কে কখনো খারাপ শুনিনি আর দেখিনি। তবে শুনেছিলাম স্বর্ণের কিছু হেরফের উনি করেছিলেন।
তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া বলেন, জানলে একটা, না জানলে আরেকটা। আগে যদি জানতাম তাহলে হয়তো ভয়ে এ বাসায় থাকতাম না। আমরা কেউ লাশ দেখতে যাইনি। ঘটনার পর থেকে নিচেও যাই না। ২২-২৩ বছর ধরে এখানে আছি। কখনো এমন কিছু ঘটেনি। আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি এমন কিছু ঘটতে পারে।
প্রতিবেশীদের তথ্যমতে, ঠান্ডু মিয়ার ৪তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকতো পিন্টু দেবনাথের ওস্তাদ অপু রায়। অপু রায়ের পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন পিন্টু। প্রায় ১৫ বছর পূর্বে অপু রায় পরলোক গমন করলেও সে বাড়িতেই অপু রায়ের স্ত্রী সন্তানদের সঙ্গে থেকে যায় পিন্টু।
অপু রায়ের ছোট ছেলে ক্যান্সারে মৃত্যু বরন করলে প্রায় পাঁচ বছর আগে বিক্রমপুরের গ্রামের বাড়ি চলে যায় অপু রায়ের পরিবার। তবে বাসায় একাই থেকে যান পিন্টু। সে হিসেবে প্রায় ২২ বছর যাবৎ একই বাসায় পিন্টু ভাড়া থাকতো। এই কয়েক বছরে মাঝে মধ্যেই পিন্টুর বাসায় প্রবীর ঘোষসহ অন্যান্য বন্ধুদের আনাগোনা ছিলো বলেও তারা জানান।
পিন্টু দেবনাথ বাসায় একা থাকলেও দোতলায় তার প্রতিবেশী অখিল মন্ডল ও রতন দত্ত থাকেন পরিবারসহ।
প্রবীর ঘোষ নিখোঁজ হওয়ার দিন বাসায়ই ছিলেন অখিল ও তার পরিবার। অখিল মন্ডল জানান অন্যসব দিনের মতো ওইদিনও আমরা খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়ি। বাড়ির পরিবেশ স্বাভাবিকই মনে হয়েছে। রাতে কোন আওয়াজও কানে আসেনি। তাছাড়া ওনারা মালিক মানুষ ভিআইপিভাবে চলে তাই আমাদের সঙ্গে তেমন কথা বার্তা হতো না।
উল্লেখ্য, ১৮ জুন আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টার সময় একটি ফোন পেয়ে প্রবীর ঘোষ নিজ বাসস্থান থেকে বের হন। এরপর থেকে তাকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। ১৯ জুন সকাল ১০টা থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়ায় প্রবীর ঘোষের বাবা ভোলানাথ ঘোষ নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় জিডি করেন।
পরে মুক্তিপন দাবি করায় নারায়ণগঞ্জ মডেল থানায় অপহরণ মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত ভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়।
ডিবি পুলিশ প্রবীর ঘোষের মোবাইল ট্র্যাকিং করে প্রথমে প্রবীরের মোবাইলসহ বাপন ভৌমিককে আটক করে। পরে তার তথ্য মতে আটক করে পিন্ট দেবনাথকে। এক পর্যায়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাদের পর পিন্টুর দেয়া তথ্য মতে সোমবার (৯ জুলাই) রাত ১১ টার দিকে শহরের আমলাপাড়া কেসিনাগ রোডের রাসেদুল ইসলাম ওরফে ঠান্ডু মিয়ার ৪তলা ভবনের সেফটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে তিনটি ব্যাগে ভর্তি প্রবীর ঘোষের ৫ টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু পা দুটি পাওয়া যায়নি।
পরে মঙ্গলবার (১০ জুলাই) রাতে ঠান্ডু মিয়ার বাড়ির দুই বাড়ি পর একটি ড্রেন থেকে প্রবীর ঘোষের পা দুটি উদ্ধার করে ডিবি।
গ্রেপ্তারকৃত পিন্টু দেবনাথ (৪৭) কুমিল্লার মেঘনা থানার চন্দনপুর এলাকার মৃত সতীশ দেবনাথের ছেলে। নারায়ণগঞ্জ শহরের ১৫ আমলাপাড়া কেসি নাগ রোডের ঠান্ডা মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকে।
আর বাপন ভৌমিক ওরফে বাবু (২৭) কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার ঠেটালিয়ার কুমদ ভৌমিকের ছেলে। সে কালিরবাজার কাজী ভবনে মা স্বর্ণ শিল্পালয়ে কাজ করে। একুশে মিডিয়া।

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages