একুশে মিডিয়া, নড়াইল সদর প্রতিনিধি:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই সন্নিকটে। আর এ কারণে নড়াইলে যাতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের নিকট এ সব কথা বলেন তিনি।
এ সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম এর সাথে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ শরফুউদ্দিন, নড়াইল সদর থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইলিয়াস হোসেন, নড়াইল জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান, নড়াইল জেলা বিশেষ শাখার ডিআইও-১।
গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা, সহ সাধারণ সম্পাদক আকতার মোল্যা, সাংগঠনিক সম্পাদক বুলু দাস, ক্লাবের সকল সদস্যবৃন্দসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
মতবিনিময় সভা চলাকালে নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায় পুলিশ সুপারকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কি কি প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, সর্বদা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে পুলিশ। পুলিশ নির্বাচনে কারও পক্ষপাতিত্ব করে না। সব জায়গায় শৃঙ্খলা বজায় রক্ষার্থে এবার নির্বাচনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।
এছাড়াও নির্বাচনকালীন সময়ে ভদ্রবেশী দুষ্কৃতিকারীদের ধরতে সাদা পোশাকেও পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া গ-গোলের সম্ভাবনা আছে এমন কেন্দ্রগুলোতে থাকবে বাড়তি সতর্কতা। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে এ্যাকশান।
এক্ষেত্রে কারও কোনো সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না। এক কথায় কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চাইলে পুলিশ তাকে কঠোর হস্তে দমন করবে। পুলিশের মধ্যে নির্বাচনে গ্রুপিং থাকতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার জানান, আমার ডিপার্টমেন্টে কেউ কোনো অপরাধ করে পার পায় না।
সম্প্রতি ইয়াবাসহ এসআই মানিক গ্রেফতার, কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শমসেরকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করার ঘটনাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখিয়ে তিনি আরও বলেন, কোনো পুলিশ যদি নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব করার চেষ্টা করে তাহলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না।
বর্তমানে পুলিশ সুপারের কাছে বিবিধ বিষয়ে কি পরিমাণ অভিযোগ আসছে এবং তিনি সে সকল অভিযোগ কিভাবে নিষ্পত্তি করছেন জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, প্রতিদিন পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনেক অভিযোগ আসতেই থাকে। কিন্তু কোনো অভিযোগ আমলে নেওয়ার পূর্বে তার প্রাথমিক তদন্ত করি। প্রাথমিক তদন্তে যদি অভিযোগের সত্যতা দেখা দেয় তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করি।
কারণে অনেকে এই অভিযোগকে পুঁজি করে নিরীহ লোকদের ফাঁসিয়ে থাকে। এছাড়াও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে নড়াইলের বেশ কয়েকটি গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিবাদ নিষ্পত্তি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার জানান, মানুষ একটি সামাজিক জীব। আর মানুষ যদি নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করে মারামারি, হানাহানি করে তাহলে তাদেরকে সভ্য সমাজের বাসিন্দা বলা যায় না। এজন্য আমার কর্ম এলাকা নড়াইলের মানুষের মধ্যে যাতে সামাজিক বন্ধন ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায় এলক্ষ্যে আমি স্বউদ্যোগে এ সকল বিরোধ মিমাংসা করে থাকি। এছাড়াও পুলিশের মৎস্য অ্যাকুরিয়াম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যে জায়গায়টিতে পুলিশ মৎস্য অ্যাকুরিয়াম করেছি ওটা আগে মানুষের কাছে বিরক্তিকর একটি জায়গা ছিল।
এছাড়াও ওই নালা থেকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতো যা পথচারীদের কষ্টের কারণ ছিল। এ বিষয়টি অনুধাবন করে আমি ওই নালাটি পরিষ্কার করিয়ে সেখানে মাছ চাষ শুরু করেছি। সেই সাথে ওখানে বিনোদনের সুবিধার্থে পানির ফোয়ারা এবং বসার স্থানও তৈরি করেছি, যা নড়াইলবাসী সাদরে গ্রহণ করেছে।
মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাস কি নড়াইল থেকে সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়েছে কি না নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়ের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাস সামাজিক ব্যধি। এদেরকে খুব সহজেই সমাজ থেকে বিতাড়িত করা সম্ভব নয়। তবে নড়াইল জেলা পুলিশ নিয়মিত অভিযান ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে নড়াইল জেলা প্রায় মাদকশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাইরের জেলা থেকে কিছু মাদকব্যবসায়ী নড়াইলে মাদক প্রবেশের চেষ্টা করে থাকে। আমাদের গোয়েন্দা শাখাসহ বিভিন্ন টিম সর্বদা সতর্ক থাকায় আমরা এরূপ বেশ কয়েকটি মাদকের চালান এবং মাদকব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। বেশি বেশি মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো ও পুলিশকে সহায়তা করার জন্য তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধও করেন।
একুশে মিডিয়া/এমএ
No comments:
Post a Comment