![]() |
একুশে মিডিয়া, গাইবান্ধা প্রতিনিধি:>>>
দিলে
খাই না দিলে উপোষ থাকি এগলে হামারে গাইবান্ধার মানসের জীবনযাত্রা বছরের পর
বছরে দয়ার দানে বাঁচি আর বানের জলে ভাসি। প্রতি বছর বসতভিটা হারিয়ে
স্বপরিবারে এলাকা ছাড়ি ঢাকা সিলেট চট্রগ্রামে রাজশাহী গিয়ে রিক্সা চালাই,
কুলিগিরি করি। পরিবারের নারীরা পরের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে। একটু আয় করে যা
জমায় তা বছরে বছরে বাপ দাদার ভিটা রক্ষায় এসে আবার সব হারিয়ে ফেলি।
গাইবান্ধা নদী বেষ্টিত এলাকার বানভাসী অতিদরিদ্র মানুষ গুলো এভাবে আক্ষেপ
করে উপরোক্ত কথা গুলো বলেন।
স্বাধীনতার
আগে ও পরে দেশের অনেক অংশে উন্নয়ন হলেও বন্যা হতে রক্ষায় স্থায়ী কোন
পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বন্যা দুর্গত বান ভাসি মানুষদের বাঁধ ভাঙ্গা কান্না
থামছেই না। বছরের পর বছর সংস্কার ও নদী ভাঙ্গন রোধের দোহাইয়ে কোটি কোটি
টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুলোর দায়িত্বহীনতার কারণে
কাজের কাজ কিছু হয়নি। বানের পানিতে সব ভাসিয়ে যাওয়ায় আবারো বরাদ্দ নেওয়া
হয়েছে। কিন্তু জন্মপাপি গাইবান্ধার মানুষ আজও বানের জলে ভাসিয়েই চলছে।
গাইবান্ধার
ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে
প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদীর
বাঁধ ভাঙ্গা পানি এখনও নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। তবে বন্যা কবলিত
এলাকার পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি সংকট,
স্যানিটেশনের অব্যবস্থা, গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলা
প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা ও গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা এবং ৪৯টি
ইউনিয়নের ৩৮৩টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা
দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৩২৮ জন। ৪৪ হাজার ৭৯২টি বসতবাড়ি বন্যায়
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮০টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৭৪ হাজার ১০৪ জন অসহায় মানুষ
আশ্রয় নিয়ে আছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ১৫০ মে.
টন চাল, ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৬ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট ত্রাণ
মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া গেছে। সেখান থেকে ইতোমধ্যে ৯শ’ ৫০ মে. টন চাল, ১০
লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৫ হাজার ৬শ’ শুকনো খাবার দুগর্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ
কাজ চলছে।
এদিকে
গাইবান্ধা সদর উপজেলার গোদারহাট, কুঠিপাড়া, কোনারপাড়া, ধুতিচোরা, বাগুড়িয়া ও
কামারজানি এলাকার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শন ও বন্যা
দুর্গত মানুষের সাথে মতবিনিময় শেষে গিদারী ইউনিয়নের গোরাইন গ্রামে বন্যার্ত
পরিবারের মাঝে ত্রান সামগ্রী (খাবারের কার্টুন, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট
ও জ্যারিকেন) বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুল মতিন।
পানি
উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, রোববার ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা হ্রাস
পেয়ে বিপদসীমার ১০১ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সে.মি উপর দিয়ে
প্রবাহিত হয়। এছাড়া করতোয়া নদীর পানি নতুন করে বৃদ্ধি না পেলেও এখনও
বিপদসীমার ৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য,
স্বাধীনতার আগ হতে এ পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলার ৬৫ শতাংশ মানুষ বানের জলের
প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। দরিদ্র মানুষ গুলো কে নিয়ে ত্রান ও দয়ার দানের
রাজনীতি পরিহার করে। স্থায়ী সমাধানে পরিকল্পনা গ্রহন করে অত্র এলাকার
অবহেলিত নাগরিকদের অধিকার খাদ্য,বস্ত্র,বাসস্থান,স্বাস্থ্
একুশে মিডিয়া/এমএসএ




No comments:
Post a Comment