শঙ্খের ভাঙনে বিলীনের পথে বাঁশখালীর রাতাখোর্দ্দ জেলে পাড়া। একুশে মিডিয়া - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

ক্লিক করুন

Breaking News

Home Top Ad

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Wednesday, 14 August 2019

শঙ্খের ভাঙনে বিলীনের পথে বাঁশখালীর রাতাখোর্দ্দ জেলে পাড়া। একুশে মিডিয়া

সহায় সম্বল হারিয়ে নিরুদ্দেশ বাঁশখালী সাধানপুরের অর্ধশতাধিক পরিবার! ছবি: একুশে মিডিয়া
শাহ্ মুহাম্মদ শফিউল্লাহ :>>>
শঙ্খের খর¯্রােতা ভাঙনে দিনের পর দিন বসত বাড়ী হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের উপকূলবর্তী রাতাখোর্দ্দ জেলে পাড়ার বাসিন্দারা। এক সময় শতাধিক পরিবার নিয়ে এই জেলে পাড়া ছিল একটি মুখরিত পল্লীতে।
বর্তমানে এই জেলে পল্লীর বসতি ও স্থাপনা গুলো নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়ায় এখানকার বাসিন্দারা শঙ্কিত থাকে সব সময় জোয়ারের তোড়ে কখন হারিয়ে যায় নিজেদের মাথা গুজার একমাত্র আশ্রয়স্থল টুকু এই ভয়ে। বুধবার (১৪ আগষ্ট) সকালে ভাঙন কবলিত সাধনপুরের রাতাখোর্দ্দ জেলে পল্লীতে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, এখানকার বাসিন্দারা অতি শঙ্কিত অবস্থায় দিন যাপন করছে।

বিশেষ করে নদী পাড়ে যাদের বসতি তারা শঙ্কায় থাকে কখন জোয়ারের তোড়ে নিজেদের বসতঘর বিলীন হয়ে যায় এই আশংকা। স্থানীয়রা জানান, জোয়ারের তোড়ে গত এক সপ্তাহে প্রায় ৫-৬টি ঘর নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। বসতঘর হারিয়ে যাওয়া অনেকে নিকটবর্তী আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে আছে। ইতিমধ্যে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে শান্তু দাশ, মতিলাল দাশ, বাহাদুর দাশ, জয়রাম দাশ, সমর শর্মা, সূর্যসেন দাশ, সাধু দাশ, সুরজিত দাশ, সূর্যসেন দাশ, মনদুলা দাশ, বিমল দাশ, শুভধন দাশ, উদ্ভব দাশ, সমীর দাশ, শ্রীদাম দাশ, চিত্ত দাশ, শ্রীরাম দাশ, বন্দনা দাশ, দুলাল শর্মা, মোঃ আখতারুজ্জমান বাবু, মোঃ সেলিম, মোঃ নুরুল আমিন, সুজন দাশ, জয়লাল দাশ, গোপাল জলদাশ ও সুনীল জলদাশের বসতঘর। স্থানীয় প্রতিবন্ধী ইয়াছিন আলী জানান, যখন জোয়ার আসে তখন এই এলাকার বাসিন্দাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। আবার যখন ভাটা নামে তখন আতংকে থাকে কখন ভেঙে পড়ে ঘর বাড়ি। এই ভাবেই কাটে এই এলাকার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা। স্থায়ীভাবে যতদিন এই সমস্যার সমাধান না হয় ততদিন পর্যন্ত এই এলাকার বাসিন্দারা জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় থাকবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আজিজুল হক জানান, এক সময় এই এলাকায় শতাধিক পরিবারের বসতি থাকলেও শঙ্খের ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকে নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। অতিশয় ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এই এলাকাটি সাগর গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে। সাধনপুর ইউনিয়নের শিক্ষানুরাগী ও সমাজকর্মী কে.এম সালাহউদ্দীন কামাল বলেন, এখানে অবস্থিত কয়েকটি গ্রাম ইতিমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। রাতাখোর্দ্দ গ্রামটি বিলীনের পথে। তাছাড়া জাপন সরকার ও হীড বাংলাদেশ নির্মিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। রাতাখোর্দ্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দুই বার ভাঙনের পর বর্তমানে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে আনা হয়। গৃহহারা মানুষ গুলো অসহায় দিন যাপন করছে। এই এলাকার ভাঙন রোধে স্থায়ী ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী। নচেৎ নতুন নতুন এলাকা নদীগর্ভে নিশ্চি‎হ্ন হয়ে পড়বে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ধীমান কৃষ্ণ চৌধুরী বলেন, সাধনপুরের রাতাখোর্দ্দ এলাকার ভাঙন কবলিত অংশে ডাম্পিং এর মাধ্যমে জিও ব্যাগ বসানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই কাজের জন্য প্রায় ৮৭ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ওই কাজের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।
সাধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন চৌধুরী খোকা বলেন, এই গ্রামে যারা বসতঘর হারিয়েছে তাদেরকে আশ্রয়ন প্রকল্পে স্থান দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ওই এলাকায় একটি খাস জায়গা রয়েছে যেখানে তাদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে শঙ্খের থেকে এই এলাকাকে বাঁচানোর বাঁশখালী সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় জরুরী ভিত্তিতে একটি কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে জিও ব্যাগ ফেলানোর মাধ্যমে এই এলাকাটাকে রক্ষা করার জন্য কিন্তু প্রবল ¯্রােতের কারণে এই এলাকাতে বর্তমানে কাজ করা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বাঁশখালীর শঙ্খের ভাঙন রোধে পাউবো ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে করে জরুরী ভিত্তিতে এসব ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আশারাখি সাধারণ জনগণের দুঃখ লাগবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবো সকলের সহযোগিতায়।




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages