একুশে মিডিয়া প্রতিবেদক:ই-একুশে মিডিয়া
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাঁশখালী উপকূলে কয়েক হাজার ফিশিং বোটে করে জেলেরা ধরছে অবিরত সব ধরণের সামুদ্রিক মাছ। সাগরে মাছ সংরক্ষণ ও প্রজননের জন্য গত ২০ মে থেকে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত সব ধরণের মাছ ধরার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা সরকার জারি করেছিল। ২০১৪ সাল থেকে চলে আসা এই নিয়মে আজ থেকে আরও ২০ দিন মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। অথচ বাঁশখালীতে সহ¯্রাধিক ফিশিং বোটের মালিকরা প্রকাশ্যে সাগর উপকূলে গত ২৫ জুন থেকে সাগরে মাছ ধরতে আঁট বেঁধে সাগরে নেমে পড়েছে। বরফকল বন্ধ রাখার জন্য সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ২৪টি বরফ কল অবিরত চলছে। স্থানীয় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে প্রথম দিকে কয়েকটি বরফ কলের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিলেও তা বরফকলের মালিকরা ভিন্ন কৌশল ও ভিন্ন কায়দায় আবারো চালু করেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাঁশখালীর শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ, সরকার বাজার, চাম্বল বাংলা বাজার, ছনুয়া কুতুবদিয়া ঘাট, খানখানাবাদ কদমরসুল, ঈশ্বর বাবুর হাট, গন্ডামারা খাটখালী সহ বিভিন্ন মাছ ধরার স্পটে প্রকাশ্যে ফিশিং বোট থেকে মাছ নামানো এবং ফিশিং বোটে বরফ ভর্তির কাজ চলছে। প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকে মাছ চালান দেয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বাঁশখালীর হাট-বাজারগুলোতে সব ধরণের সামুদ্রিক মাছে সয়লাব হয়ে গেছে। প্রতিদিন চলছে সমুদ্র থেকে আহরিত মাছ। উল্লেখিত স্থানগুলোতে অন্ততঃ বিভিন্নস্তরের ২ হাজার জেলে মাছ ওঠা-নামা, বরফ ওঠা-নামা, মাছ ধরার নৌকার বিভিন্ন ধরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বাঁশখালী ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি এয়ার আলী বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কয়েক হাজার ফিশিং বোট সাগরে নেমেছে ঘটনাটি ঠিক। তবে ওইসব ফিশিং বোট ইলিশ মাছ ধরছে না। সবধরণের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তিনি বলেন, সাগরে শুধু ভয়ে আমরা বোট নামাতাম না কিন্তু অন্যান্য এলাকার ফিশিং বোট অবাধে নেমেছে। তাই আমাদের জেলেরা এখবর পেয়ে ফিশিং বোট নামিয়েছে।
তবে খানখানাবাদের জেলে আবু তায়েব ,শেখেরখীলের ফিশিং বোটের মালিক মো. শুক্কুর, চাম্বলের জেলে শিব্বির আহমদ বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আমরা ফিশিং বোট সাগরে নামানোর পক্ষে নই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তা কঠোরভাবে দমন করা উচিত। কেউ সাগর থেকে মাছ ধরবে কেউ ধরবে না। তাতো হয় না।
বাঁশখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান চৌধুরী বলেন, নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে স্থানীয় জেলেদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ করা হয়েছে। যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাগরে নেমে অভিযান চালানোর জন্য দ্রুতগামী জলযান না থাকায় আমাদেরকে তা কোষ্টগার্ডের ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে কিছু ফিশিং বোট সাগরে মাছ ধরছে তা খবর পেয়েছি।
কোষ্টগার্ডের বিসিজি বেইস চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক কমান্ডার মো. হাসান মাহমুদ বলেন, সাগরে মাছ ভর্তি ফিশিং বোট দেখলে এবং ট্রাক ভর্তি মাছের সঠিক তথ্য পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
No comments:
Post a Comment