![]() |
একুশে মিডিয়া ডেস্ক:
ইসলামী বিশ্ব বিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগের এক ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতন ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ওই শিক্ষকের বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ উপলক্ষে শনিবার (৭ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করে তারা।
মানববন্ধনে ‘আমার বোনের উপর হুমকি কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘শিক্ষক নামের কুলাঙ্গারের বহিস্কার চাই’, ‘যৌন হয়রানি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’ সহ বিভিন্ন প্রতিবাদীমূলক স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ও প্লাকার্ড প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া অনতিবিলম্বে অভিযুক্ত সঞ্জয় কুমার সরকারের শাস্তির দাবি জানান তারা। পাশাপাশি নারী নির্যাতন রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরো গতিশীল হওয়ারও দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারীর কাছে জানতে চাইলে তিনে বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রাথমিক যাচাই বাচাই করে সত্যতা পেলে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের নিকট হস্তান্তর করা হবে।’
প্রসঙ্গত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার নিজ বিভাগের ঝুমুর (ছদ্মনাম) নামে এক ছাত্রীকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের ফলে ছাত্রীটি গত ৫ জুলাই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। বর্তমানে সে পরিবারের হেফাজতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
ঝুমুরের (ছদ্মনাম) সহপাঠীদের ভাষ্যমতে, সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের মোবাইলে মধ্য রাতে ফোন ও ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে আসছে। তবে পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ করিয়ে দেয়ার ভয়ে কোনো ছাত্রীই তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায়নি।
এরপর গতবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের আয়োজনে দেশরত্ম শেখ হাসিনা হলে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসাকারীর নিকট ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক ছাত্রী ওই বিভাগের শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে ছাত্রী উত্যক্তের অভিযোগ করেন। এর পরদিন উপাচার্য ওই বিভাগে গিয়ে সব শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সঞ্জয়কে এ বিষয়ে সতর্ক করেন।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সঞ্জয় কুমার ওই ছাত্রীকে তার রুমে ডেকে বিভিন্ন হুমকি দেন। এছাড়া ওইদিনের পর থেকে সঞ্জয় কুমার ওই ছাত্রীটিকে চোখে চোখে রাখেন। তবে ভুক্তভোগী (ঝুমুর ছদ্ম নাম) ওই ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার উপরও চোখ রাখেন। বিভাগের শিক্ষার্থীদের মতে, সঞ্জয় কুমারের ধারণা ঘনিষ্ঠ বান্ধবী হওয়ার সুবাদে ঝুমুর (ছদ্ম নাম) ওই ছাত্রীকে প্ররোচনা দিয়ে তার বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দিয়েছে।
পরবর্তীতে ২য় সেমিস্টার পরীক্ষায় ওই ছাত্রীসহ ঝুমুর (ছদ্ম নাম) সঞ্জয় কুমারের ১২৩ ও ১২৫ নং কোর্সে ফেল করেন। এরপর ঝুমুর (ছদ্ম নাম) কোর্সে ফেল করার বিষয়ে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বললে সঞ্জয় কুমার তাকে রুমে ডেকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেন। সর্বশেষ গত ১ জুলাই ঝুমুরের (ছদ্ম নাম) ৩য় সেমিস্টারের ভাইভা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ঝুমুরকে (ছদ্ম নাম) বিভিন্নভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করে সঞ্জয় কুমার। এরপর থেকে সে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং অস্বাভাবিক আচারণ করতে থাকে।
এ বিষয়ে তার সহপাঠীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ভাইভার পর থেকে ঝুমুর (ছদ্ম নাম) মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) সকাল থেকে তাকে হলে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তাকে শেখ হাসিনা হলের একটি রুম থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন না হওয়া তার পরিবারকে বিষয়টি জাননো হয়। বর্তমানে সে পরিবারের হেফাজতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment