বাংলা নববষকে বরণ করতে মৃৎশিল্পী আর মিষ্টির কারিগররা ব্যস্ত। একুশে মিডিয়া - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

ক্লিক করুন

Breaking News

Home Top Ad

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday, 11 April 2019

বাংলা নববষকে বরণ করতে মৃৎশিল্পী আর মিষ্টির কারিগররা ব্যস্ত। একুশে মিডিয়া


উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■:>>>
কয়েকদিন পরেই বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। একে বরণ করতে আগ্রহের কোনো কমতি নেই বাসীর। নড়াইলে চৈত্র সংক্রান্তি থেকে শুরু করে পুরো বৈশাখ মাস জুড়েই বিভিন্ন স্থানে বসবে বৈশাখী মেলা। বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে নববর্ষের বৈশাখী মেলা।
আর এ মেলাকে সামনে রেখেই নড়াইল জেলার মৃৎশিল্পী আর মিষ্টির কারিগররা পার করছেন ব্যস্ত সময়। নড়াইলের নিষিনাথ তলায় বৈশাখী মেলার অন্যতম আকর্ষণ মাটির তৈরি খেলনাসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র।
বৈশাখী মেলায় মাটির খেলনা ও তৈজসপত্র বিক্রির প্রস্ততি নিতে চৈত্র মাসের শুরু থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জেলার প্রায় ৪ সহস্রাধিক মৃৎশিল্পীরা। পুরুষদের কাজে সহযোগিতা করতে ঘরে বসে নেই ওইসব পরিবারের নারীরা।
বৈশাখী মেলার খেলনা তৈরির মাধ্যমে হাতেখড়ি দিচ্ছে পাল পাড়ার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিশুরাও।
সরেজমিনে নড়াইলের পালপাড়ায় দেখা যায়, কর্মমুখর কুমার পাড়ায় কোথাও হচ্ছে মাটি থেকে কাদা তৈরির কাজ, কোথাও হচ্ছে নানা আকারের পাত্র তৈরি। পণ্য তৈরি শেষে শুকানো হচ্ছে তা। সবশেষে দেয়া হচ্ছে রং তুলির আঁচড়। এখানকার পণ্য নিয়ে কুমাররা বেরিয়ে পড়বেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বৈশাখী মেলায়। সেসব মেলায় নিজেদের বানানো পণ্যের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করবেন তারা।
নড়াইলের পাল পাড়ার মৃৎশিল্পী, তরণী পাল, প্রবীণ সুখেন পাল ও গৃহবধূ শিল্পী রানী পাল জানান, তারা প্রত্যেকেই মেলার জন্য মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলনা ও তৈজসপত্র তৈরি করছেন। চাহিদার কথা চিন্তা করে পুতুল, ব্যাংক, আম, কাঁঠাল, হরিণ, ঘোড়া, হাতি, মাছ, ময়ুর, সিংহসহ হরেক রকম শিশু খেলনা, ঘর গৃহস্থালির হাড়ি, পাতিল, ঢাকনা, ঝাজর, কলসসহ নানা তৈজসপত্র, ঘর সাজানোর জন্য ফুলদানি, টবসহ নানান জিনিসপত্র তৈরি করছেন।
নড়াইলের এলাকার হারান পাল বলেন, নতুন প্রজন্মের সন্তানরা এখন তাদের পূর্ব পুরুষদের পেশায় আসতে চাইছে না। কারণ আগের মতো এখন আর তৈজসপত্রের একচেটিয়া ব্যবসা নেই। নেই তেমন মর্যাদাও। পাল পাড়ার সন্তানরা এখন পড়াশোনা শিখে চাকরিতে আগ্রহী।
হরেক স্বাদের মিষ্টি ছাড়া বৈশাখী মেলা কল্পনাও করতে পারে না নড়াইলের লোকজন। এছাড়াও সারাদেশেই রয়েছে নড়াইলের মিষ্টির কদর। রসগোল্লা, জিলাপি, দধি, মাসকলাই আমিরতী, রসমালাই, সন্দেশ, কালোজাম, চমচম তৈরি করতে দুধ, চিনি, গুড়, মাসকলাইসহ অন্যান্য উপকরণ ক্রয় এবং মিষ্টি তৈরি করার কাজে দম ফেলার ফুসরত নেই ঘোষপাড়ার নারী-পুরুষদের।
জেলায় এ পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রায় ৬ হাজার লোক। নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি বিক্রির প্রতিষ্ঠানরে ব্যবস্থাপক জানান, আমাদের মিষ্টির চাহিদা এমনিতেই ব্যাপক।
এছাড়াও পহেলা বৈশাখে অতিরিক্ত ৪০-৫০ মণ মিষ্টি বিক্রি বেশি হবে। তাই কারিগররা এখন ভীষণ ব্যস্ত। জেলার ৩টি উপজেলাতেই রয়েছে কম বেশি শিল্পীদের ঘুম নেই চোখে। নড়াইলের বৈশাখী মেলা ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন শিল্পীদের সম্পর্ক, নড়াইল প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ, এ প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, বলেন, নড়াইলের বর্তমান বাজারে সিরামিক, প্লাস্টিক ও ধাতব তৈজসপত্রের সহজ প্রাপ্যতা ও সহজলভ্যতার জন্য বাঁশ-বেত ও মৃৎশিল্পের ব্যবসায় অনেকটাই ধ্বস নেমেছে।
এসব পেশার সঙ্গে জড়িতরা অনেকটাই মানবেতর জীবন যাপন করছে। এসব শিল্পী ও কারিগরদের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নইলে কালের আবর্তে হারিয়ে যাবে বাঙালীর আদি ঐতিহ্য। তিনি আরো জানান, বৈশাখ মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব।
নতুন বর্ষকে বরণের পাশাপাশি উৎসবকে পরিপূর্ণতা দেয় বৈশাখী মেলা। বৈশাখী মেলা শুধু গ্রামেই নয়, শহুরে মানুষদের বাঙালির ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।






একুশে মিডিয়া/এমএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages