মোঃ জাকির হোসেন, জেলা প্রতিনিধি:>>>
রাজধানীর কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর ইউনিয়নের মুগারচর থেকে আদালতের নির্দেশে মৃত্যুর ১৬ দিন পর সালেহা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান সোহেল, পুলিশ পরিদর্শক ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান টিটুর উপস্থিতিতে পুনঃতদন্তের জন্য মরদেহটি উত্তোলন করা হয়।
মামলার এজহারে জানা যায় বহু দিন যাবত ইউসুফ আলীর স্ত্রী সালেহা বেগম দের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিলো বিবাদী পাশের বাড়ির জিয়ার উদ্দীন (৫০) পিতা আশ্রাফ আলী, সিরাজুল (৩৫) পিতা হাসান আলী, হাসান আলী পিতা ইদ্রিস আলী, আশ্রাফ আলী পিতা হাসান আলী, সাইফুল পিতা সিদ্দিক মিয়াদের।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিবাদীরা সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সালেহা বেগমের উপর হামলা করে। এসময় সালেহা বেগমের ছেলে সালাউদ্দিন (২৭) ও তার স্ত্রী ফারজানা (২১) কে মেরে আহত করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা লুট করে।
পরে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় সালেহা বেগমকে স্যার সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি নিয়ে আসে। আসামিরা তাদের ভয় ভীতি দেখালে সে ১২ জানুয়ারি পুনরায় অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এদিকে এলাকাবাসী ও বিপক্ষ দলের অভিযোগ এটা সাজানো মামলা! স্থানীয় আলী হোসেন, তোফায়েল, যুবায়ের, নজরুলসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মৃত সালেহা বেগমের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
আলী হোসেন বলেনন, আমরা সবাই তার জানা যায় অংশগ্রহণ করলেও কারো মুখে শুনিনি এটা হত্যা ছিলো। এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, পুলিশ কাউকে জানানো হয়নি কারো হামলার আঘাতে সে মারা যায়।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান সোহেল জানান, সঠিক তদন্তের স্বার্থে মরদেহ কবর থেকে উত্তলন করা হলো। তদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃতি কারণ যানা যাবে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল আলী জানান, এটা হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু আমার জানা নেই। ব্যাপারে কোন পক্ষই আমাকে জানায়নি। সে কি ভাবে মারা গেলো তাও জানিনা। এটা হত্যা মামলা হলে কারো কাছে কিছু না বলে তদন্ত ছাড়া কবর দেয়ার কথা না।
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি মারা যায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানার রোহিতপুর ইউনিয়নের মুগারচর গ্রামের ইউসুফ আলীর স্ত্রী সালেহা বেগম। এর দুই দিন পর ১৪ জানুয়ারি বেলা ২:৩০ মিনিটে তার ছেলে সালাউদ্দিন বাদী হয়ে পাঁচ জনের নামে মামলা করে। সেদিন রাতেই আটক করা হয় মামলার ১, ২ ও ৩ নং আসামি জিয়ার উদ্দীন, সিরাজ ও হাসান আলীকে।
ঘটনার সাথে থানায় অভিযোগ বা কোনো মামলা না হওয়ায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই সালেহার মরদেহ দাফন করা হয়। পরবর্তীতে গত ১৪ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় সালেহা বেগমের ছেলে সালাউদ্দিন বাদী হয়ে জিয়ার উদ্দীন, সিরাজ, হাসান আলী ও তার সহযোগীদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার তদন্তে ১৬ দিন পর কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
সালেহার ভাই আহসান উল্লাহ বলেন, আসামিদের হুমকির কারণে মামলা করার সাহস পাইনি, এখন মামলা করেছি। আমার বোনের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, আদালত থেকে আমরা এই মামলার তদন্তভার পেয়েছি। তদন্তে অনেকটুকু এগিয়েছি। ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের অনুমতিক্রমে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে আমরা সালেহার মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করেছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে হত্যার সঠিক কারণ জানা যাবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment