আল আমিন মুন্সী:
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় আফিয়া আক্তার (১৬) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকারীরা ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর ঘরের সিঁধ কেটে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় তুলে নিয়ে হত্যা করে বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায় বলে দাবি পরিবারের। তবে প্রতিবেশী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এ হত্যকান্ড ব্যাপক রহস্যময় বলে জানা যায়। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের গজারিয়া বাজার এলাকায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ নিহতের ভাই বোনসহ ৫ জনকে আটক করেছে। নিহত আফিয়া আক্তার গজারিয়া গ্রামের আজাহার মিয়ার মেয়ে। সে গজারিয়ার উলুম দাখিল মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিহতের বাবা আজাহার মিয়া জানান, রাতে আফিয়া তার বড় দুই বোনের সাথে রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়লে হত্যাকারীরা ঘরের সিঁধ কেটে ঘুমন্ত অবস্থায় আফিয়াকে তুলে নিয়ে হত্যা করে বাড়ির পাশে ফেলে যায়। পরে রাতে শোয়া অবস্থায় বোনরা তাকে বিছানায় না পেয়ে ঘরের সিঁধ কাটা দেখে বাহিরে খোঁজাখুঁজি করে।
এক পর্যায়ে ঘরে পূর্ব পাশে মাথায় রক্তাক্ত অবস্থায় আফিয়াকে পড়ে থাকতে দেখে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আফিয়াকে মৃত ঘোষণা দেয়। তবে পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, আফিয়ার সাথে তার ভাইদের প্রেম জনিত বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি ছিল। প্রায় সময়ই তারা আফিয়াকে মারধর করতো। প্রত্যক্ষদর্শী শাহিনুর নামে এক প্রতিবেশী জানান, আফিয়ার সাথে পাশের গ্রামের রাসেল মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
এ নিয়ে প্রায় সময়ই আফিয়ার পরিবারের সাথে তার ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার মধ্যরাতে হঠাৎ করে চিৎকার শুনতে পাই। পরে ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশে দেখি আফিয়ার দুই ভাই সাখাওয়াত ও আলম রক্তাক্ত অবস্থায় আফিয়াকে ধরাধরি করে ঘরের ভিতর নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় কি হয়েছে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় কিছুই হয়নি।এর কিছুক্ষণ পর একটি ভ্যান গাড়ি এনে আফিয়ার ভাইয়েরা তাকে ভ্যানে করে হাসপাতাল নিয়ে যায়। পরে সকালে জানতে পারি আফিয়া মারা গেছে।
এ দিকে হত্যাকান্ডে খবর পেয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের দুই ভাই সহ পাঁচ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে পলাশ থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের মাথায় ও গলায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বোনের প্রেমজনিত বিষয় নিয়ে ভাইদের সাথে ঝগড়ার বিষয়টি শুনেছি।
হত্যার সার্বিক দিক বিবেচনা করে নিহতের বড় দুই ভাই, দুই বোন ও বোন জামাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুত এই হত্যাকান্ডে রহস্য উদ্ঘাটন হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment