ওসমান হোসাইন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম):
দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষের চিকিৎসাসেবার প্রধান ভরসা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। ২ হাজার ২০০ শয্যার এ হাসপাতাল প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩ হাজার ৩০০ জন ভর্তি রোগীকে সেবা দেয়, যা হাসপাতালের ধারণক্ষমতার তুলনায় প্রায় ১ হাজার ১০০ জন বেশি।
চমেক হাসপাতালের ওপর চাপ কমাতে সরকার ৫০০ শয্যার আরেকটি নতুন হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে কর্ণফুলী উপজেলায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে তিনি কর্ণফুলী উপজেলার ক্রসিং এলাকায় নতুন উপজেলা ভবনের পাশে খলিল মীর কলেজ সংলগ্ন জমি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি হাসপাতাল নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এখানে হাসপাতাল নির্মিত হলে শুধু কর্ণফুলী উপজেলা নয়, পার্শ্ববর্তী আরও অন্তত তিনটি উপজেলার জনগণসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, একান্ত সচিব ডা. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রয়া ত্রিপুরা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মৎ জেবুন্নেসা প্রমুখ।
এর আগে গত ১৬ মার্চ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা পটিয়ার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিণখাইন এলাকায় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশের একটি স্থান পরিদর্শন করেন। সে সময় আইডিয়াল স্কুল কর্তৃপক্ষ ১ একর এবং স্থানীয় পর্যায়ে আরও ১ একর জমি প্রদানের প্রস্তাব করেন। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাসপাতাল নির্মাণের জন্য অন্তত ১০ একর জমি প্রয়োজন।
স্থানীয়দের মতে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, পটিয়া ও কর্ণফুলীসহ কক্সবাজার এবং বান্দরবান জেলার রোগীরা চমেক হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। তবে দূরত্বের কারণে যাতায়াতে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হয় এবং অনেক সময় মুমূর্ষু রোগীরা হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যায়।
সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ একর জমি প্রয়োজন। সম্ভাব্য স্থান ইতোমধ্যে পরিদর্শন করা হয়েছে। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হাসপাতাল নির্মাণে আগ্রহী। দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "এই
হাসপাতাল নির্মিত হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষ উন্নত চিকিৎসাসেবা পাবে।"
No comments:
Post a Comment