সিরাজগঞ্জে জন্মদিনের কথা মনে না থাকায় শিক্ষিকার আত্মহত্যা!। একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Friday 26 April 2019

সিরাজগঞ্জে জন্মদিনের কথা মনে না থাকায় শিক্ষিকার আত্মহত্যা!। একুশে মিডিয়া


সবুজ সরকার, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:>>>
সিরাজগঞ্জে জন্মদিনের কথা মনে না থাকায় বাবা-মা’র সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করলেন প্রিয়াঙ্কা সাহা(২৫) নামে এক শিক্ষিকা। তিনি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পিপুলবাড়িয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকা ও সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার গোশলা রোডের বলরাম সাহার মেয়ে।
মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছ লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। ওই দিন রাতেই ঘুরকা মহাশ্মসান ঘাটে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।

এ ব্যাপারে নিহত প্রিয়াঙ্কা সাহার বাবা বলরাম সাহা ও মা বন্দনা সাহা জানান, ২২ এপ্রিল সোমবার ছিলো প্রিয়াঙ্কার জন্মদিন। ওইদিন বিকেলে সে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে তার বান্ধবীদের সাথে মোবাইলে জন্মদিন নিয়ে কথা বলছিলো। এসময় তারা মেয়ের কাছে নিশ্চিৎ হন ওইদিন প্রিয়াঙ্কার জন্মদিন। এসময় প্রিয়াঙ্কা আমাদের উদ্দেশ্য করে বলে, তোমরা আমার বাবা-মা, আর তোমরাই আমার জন্মদিনের কথা ভুলে গেলে! তবে এ মন্তব্য করার পরও  সে সবার সাথে স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলছিলো। রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রিয়াঙ্কা নিজের শোবার ঘরের পাশে অন্য একটি ঘরে শুতে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর মা বন্দনা সাহা প্রিয়াঙ্কাকে রাতের খাবার খেতে ডাকাডাকি করেন। এসময় প্রিয়াঙ্কার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি ছোট মেয়ে ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের ছাত্রী অন্তরা সাহাকে বিষয়টি জানান। পরে অন্তরা তার বোন প্রিয়াঙ্কাকে মোবাইল করলেও তা রিসিভ করেনি। সকাল সোয়া আটটার দিকে নাস্তা করার জন্য পরিবারের সদস্যরা তাকে ডাকাডাকি করে। কিন্তু প্রিয়াঙ্কার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং প্রতিবেশীদের ডেকে এনে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। এসময় ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচানো প্রিয়াঙ্কার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়। ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যায় নিহতের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে রাতে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।  
    প্রিয়াঙ্কার বোন বড় ও সিরাজগঞ্জ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা বর্ণালী সাহা জানান, প্রিয়াঙ্কা লেখাপড়ায় ছিলো বেশ ভালো। নাট্যজগৎসহ সাংস্কৃতিক জগতে ছিলো তার বিচরণ। তবে কোথাও গেলে বাবা, মা অথবা বোনদের কাউকে সাথে নিয়ে যেতো। একা কোথাও যেতো না। তিন বোনের মধ্যে পিয়াঙ্কা ছিলো মেঝো। এ বছরই রাজশাহী বিশ্বদ্যিালয় থেকে নাট্যকলা বিষয়ে ফাস্টক্লাস পেয়ে মাষ্টার্স পাশ করে। পরীক্ষা শেষে গত বছরের ডিসেম্বরে সিরাজগঞ্জে চলে আসে। প্রায় আড়াই মাস আগে শিক্ষকা হিসেবে চাকরী হয় সদর উপজেলার পিপুলবাড়িয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তিনি আরো জানান, আমরা তিন বোন নিজেদের মধ্যে ছিলাম বেশ খোলামেলা। নিজেদের ভালোমন্দ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হতো। আমাদের বাবা-মা দুজনেই অসুস্থ্য। প্রিয়াঙ্কার একটাই ভাবনা ছিলো কি করে অসুস্থ্য বাবা-মাকে ভালো রাখা যায়।
তিনি জানান, সম্প্রতি প্রিয়াঙ্কার মতামত নিয়েই পরিবার থেকে ওর বিয়ের জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছিলো। ও শুধু বলতো ভালো ঘরে বিয়ে দিও, অসুস্থ্য বাবা-মা’র পাশে যেন দাাঁড়াতে পারি। এসময় তিনি এ ঘটনার সাথে প্রেম সংক্রান্ত কোন বিষয় জড়িত নয় বলে দাবি করেন। তবে- স্বভাবগত ভাবে প্রিয়াঙ্কা ছিলো অভিমানী, জেদি ও রাগী। কী কারণে পরিবারের সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে এভাবে চলে গেলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। সিরাজগঞ্জ সদর থানার এসআই মেহেদী জানান, জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে পরিবারের সদস্যদের সাথে মনমালিন্যের কারণে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত শেষে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।



একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages