একুশে মিডিয়া, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :
ঝিনাইদহ
সদর উপজেলার কালিচরনপুর ইউনিয়নের মহিষাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সাইদ হোসেনের
স্ত্রী শান্তি খাতুন বিগত ৫বছর ধরে ব্রেণ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ভুগছে।
স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে তাকে জমি বিক্রয় করে অর্থ যোগাতে হয়েছে। জায়গাজমি
বিক্রয় করেও অর্থ যোগতে পারছে না সাইদ। তারপরও অর্থের অভাবে আত্মীয় স্বজনসহ
বিভিন্ন দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছে । এমতাবস্থায় ঝিনাইদহ সমাজসেবা দপ্তর থেকে
শান্তি খাতুনের চিকিৎসা বাবদ ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা সরকারি ভাবে
অনুদান দেন। আর সেই টাকাতে ভাগ বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন মেম্বর পিন্টু
শিকদার।
শান্তি খাতুনের ফুপা শ্বশুরের ছেলে জুয়েল
বলেন, গত ৫ইং আগষ্ট আমি আমার মামাতো ভাই ও তার স্ত্রী শান্তি খাতুন এবং
মেম্বর পিন্টু শিকদার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যায় সাইদের স্ত্রীর
অনুদানের চেক আনতে। সেখান থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার সোনালী ব্যাংকের একটি
চেক প্রদান করে। সেই চেক ভাঙাতে আমরা সোনালী ব্যাংকে যায় ভাবির নামে
ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট করতে, যাতে করে আমরা টাকা উঠাতে পারি। ভাবিদের কাছে কোন
টাকা না থাকায় আমি তাদেরকে ১০০০/- এক হাজার টাকা দিয়। এর মধ্যে দুপুরের
খাবারের বিরতি দিলে ভাবিকে নিয়ে আমার নানার বাড়িতে চলে আসি । পরে আমি
দোকানের কাজে ব্যস্ত থাকায় আমার নানার সাথে করে ভাবিকে পাঠিয়ে দিয় সোনালী
ব্যাংকে। কিছুক্ষণ পরে আমার নানা আমাকে ফোন দিয়ে বলে মেম্বরদের মতিগতি আমার
ভালো লাগছে না আমি চলে আসছি এই বলে আমার নানা চলে আসে। পরে যখন আমার
মামাতো ভাবি (শান্তি) টাকা ওঠায়ে আমার দোকানে আসে, আমি ভাবিকে জিজ্ঞাসা করি
কত টাকা দিয়েছে। ভাবি আমাকে বলে ৩২ হাজার টাকা দিয়েছে বাকি টাকা মেম্বরের
কাছে। একথা শুনে আমি রাগ করে আমার ১ হাজার টাকা নিয়ে নিয় এবং ভাবিকে বাড়িতে
পাঠিয়ে দিয়।
অসুস্থ শান্তি খাতুন বলেন, আমার স্বামী,
ফুপাতো দেবর জুয়েল ও মেম্বর ঝিনাইদহে যায় সমাজসেবার অনুদানের টাকা আনতে।
সেখান থেকে মামাদের কাছে ৫০,০০০/- (পঞ্জাশ হাজার) টাকার একটি চেক দেয়। সেই
চেক ভাঙাতে আমরা সোনালী ব্যাংকে যায়। ব্যাংকে আমার নামে একটি এ্যাকাউন্ট
খুলতে জুয়েলের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়ে এ্যাকাউন্ট খুলি। দুপুরে
খাবারের বিরতি দেওয়ার সময় আমি অসুস্থবোধ করলে আমার দেবর জুয়েল আমাকে তার
নানার বাড়িতে নিয়ে যায়। সে সময় আমার স্বামী আর মেম্বর ব্যাংকে ছিলো। এরপর
তারা আমাকে ফোন দেয়। পরে জুয়েলের নানার সাথে আবাররো ব্যাংকে যায় এবং টাকা
উঠায়। আমার স্বামী আমার হাতে ৩২ হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি যেতে বলে। বাকি ১৮
হাজার টাকা আমার স্বামী মেম্বরকে দেয়। এই নিয়ে আমার স্বামীর সাথে বাড়িতে
অনেক গোলযোগ করি।
শান্তি খাতুনের স্বামী সাইদ হোসেন
জানান, ৫ই আগষ্ট আমরা স্ত্রীর অনুদানের টাকা আনতে ঝিনাইদহে যায়। জেলা
প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ নিজ হাতে আমাদের চেক প্রদান করে। আমরা সেই চেক
ভাঙাতে সোনালী ব্যাংকে গেলে সেখানে একটি এ্যাকাউন্ট করতে বলে, সে সময় আমার
ফুপাতো ভাই জুয়েলের নিকট থেকে ১ হাজার টাকা ধার নিয়ে ব্যাংকে একটি
এ্যাকাউন্ট করি। এর পর বিকালে আমার স্ত্রী, আমি ও মেম্বর মিলে ব্যাংক থেকে
৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করি। আমার স্ত্রীর হাতে ৩২ হাজার টাকা দিয় এবং বাকি
টাকা আমার কাছে রেখে দিয় মেম্বরকে দিবো বলে।
শান্তি
খাতুনের শ্বাশুড়ি ও প্রতিবেশি কাশেম ও জাহাঙ্গীর জানান, শান্তি খাতুন
ঝিনাইদহ থেকে টাকা উঠায়ে বাড়িতে আসার পর, শান্তি খাতুন ৩২ হাজার টাকা
পেয়েছে আর বাকি ১৮ হাজার টাকা মেম্বর নিয়েছে বলে ঝগড়া করতে থাকে। এরপর এই
কথা জানাযানি হলে সাংবাদিক আসে। সাংবাদিকরা নিউজ করার পরে মেম্বর গোপনে
টাকা ফেরত দিয়ে আপোস করে নেয়। এখন তারা ঘটনাগুলো অস্বীকার করছে।
এব্যাপারে মেম্বর পিন্টু শিকদারের সাথে মোবাইল ফোনে ০১৯৬৬৭৭৫৮৪৮ এই নম্বরে যোগাযোগ করলে তার সাথে কোন যোগাযোগ করা যায়নি।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment