
ছবি: সংগৃহীত
একুশে মিডিয়া, আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
থাইল্যান্ডে গুহায় আটকে পড়া ১২ কিশোর ফুটবলারদের মধ্যে ছয়জনকে বাইরে বের করে এনেছেন উদ্ধারকারীরা। আর এতে উৎকণ্ঠা কমছে পরিবারগুলোর। রবিবার (৮ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে অত্যন্ত সুদক্ষ ডুবুরি দল। উদ্ধারকারী দলে ১৩ জন বিদেশি ডুবুরি ও থাই নৌবাহিনীর পাঁচজন ডুবুরি রয়েছেন।
একেকজন কিশোরকে দুই জন করে ডুবুরি তাদের তত্ত্বাবধানে বের করে আনছেন। পুরো পথ পার হতে তাদের অন্তত ছয় ঘন্টা করে সময় লাগছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আটকে পড়া ১৩ জনকে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বের করে আনা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার কাজ আজ দ্বিতীয় দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। প্রথম দিনে চারজনকে উদ্ধার করা হয় এবং আজ দ্বিতীয় দিন উদ্ধার করা হয় দুই জনকে। বাকিদের উদ্ধারের জন্য তৎপরভাবে কাজ করছে ডুবুরিদল।
তবে, সিএনএনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গুহা থেকে কিশোর ফুটবলারদের মুখে মুখোশ পরিয়ে বের করে আনা হয়েছে। এছাড়া বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, উদ্ধার হওয়া কিশোরদের বাবা-মাকেও হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। স্বজনরা নিশ্চিতভাবে জানেন না কোন ছয় জনকে বের করে আনা হয়েছে। আটকে পড়া এক কিশোরের বাবা বার্তা সংস্থা রয়টরসকে বলেছেন, ‘কোন বাচ্চাদের বের করা হয়েছে, তা আমাদের জানানো হয়নি, আমরা হাসপাতালেও যেতে পারছি না।’ এসব অভাব-অভিযোগ স্বত্বেও সরকার চুপ। তাদের পক্ষ থেকে শুধু বলা হচ্ছে - তারা হাসপাতালে ভালো আছে, সুস্থ আছে।
চ্যাং রাই প্রদেশের গভর্নর নারংসাক অসোতানাকর্ন, যিনি এই উদ্ধার তৎপরতার নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি সোমবার (৯ জুলাই) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘তারা (ছয়জন) বেশ উৎফুল্ল। সকালে জানিয়েছিল তাদের খিদে লেগেছে, তারা বাসিল দিয়ে রান্না ভাত খেতে চেয়েছে।’
কেন উদ্ধারকৃতদের বাবা-মায়েদেরও আশপাশে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছেনা - সেই প্রশ্ন করা হলে, গভর্নর অসোতানাকর্ন বলেন, সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘সেই ঝুঁকি কাটলেই এ ব্যাপারে ডাক্তারারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তখন বাবা-মায়েদের জানালার কাঁচের বাইরে থেকে তাদের ছেলেদের দেখতে দেওয়া হবে।’
কেন নাম-পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে - এই প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনও সিংহভাগ বাচ্চাই গুহার ভেতরে আটকে আছে। এ অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার নাম-পরিচয় বলা যথার্থ নয়। ‘নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হতে পারে।’
কী ধরণের সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে?
দু সপ্তাহ ধরে পাহাড়ের গুহার গভীরে প্রায় অন্ধকারে আটকা পড়ে আছে এই কিশোর দলটি। অক্সিজেনের সমস্যা রয়েছে। ছয়দিন আগে সন্ধানের আগ পর্যন্ত প্রায় অনাহারেই ছিল তারা।
এই অবস্থায় কোন ধরণের সংক্রমণের ঝুঁকিতে তারা পড়তে পারে?
ব্রিটেনের চিকিৎসক ড অ্যালেক্স রো, যিনি অভিযাত্রীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়ে অভিজ্ঞ, বলেন, ঐ ১২ জন কিশোর দু ধরণের সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকবে।
এক, গুহার ভেতরের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া এবং বাদুর জাতীয় প্রাণীর শরীর থেকে ছড়ানো জীবাণু থেকে ফুসফুসে বিপজ্জনক সংক্রমণ হতে পারে। সেটা হলে শ্বাসকষ্ট হয়। দুই, গুহার ভেতরে সাধারণত ইঁদুরের উপদ্রব থাকে। ইঁদুরের প্রস্রাব থেকে ছড়ানো জীবাণুর কারণে জন্ডিস এবং লিভারের সমস্যা হতে পারে। একুশে মিডিয়া।



No comments:
Post a Comment