![]() |
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে দেশে এক শতক জাগাজমি নাই। শশুরির(শ্বশুর) জাগায় ঘর বাইধে(বেঁধে) বউ ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকি। ৬৭বছর বয়সে ভ্যানের প্যাডেল মাইরে পেটের ভাত যোগাড় করতে হচ্ছে।
আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, যুদ্ধের সময় যারা দেশের সঙ্গে বেইমানি করেছে। যে রাজাকাররা দিনে দুপুরে জবাই করেছে। মা-বোনের ইজ্জত নেছে (নিয়েছে)। তারা আজকে গাঁয়(গায়ে) আতর লাগায়ে ভ্যানে উঠে বলে সাহেব আলী জোরে চালা। কান্না জড়িত কন্ঠে কথাগুলো এভাবেই বলছিলেন নড়াইলের নলদী ইউপির চরবালিদিয়া গ্রামের হত দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি সাহেব আলী।
বর্তমানে যিনি নড়াইল পৌর এলাকায় বরাশুলা গ্রামে শ্বশুর বাড়ি ঘর বেধে বসবাস করছেন। তিনি জানান, ৪৭ বছর ধরে ভ্যান চালাচ্ছি। এ কি একজন মুক্তিযুদ্ধার পুরস্কার? এ জন্য কি দেশটাকে স্বাধীন করেছিলাম? মুক্তিযুদ্ধা হয়েছি বলে সরকার থেকে যে ভাতা দেয় এতে কি সংসার চলে? আমার ওষুধ কিনতে তো সে টাকা শেষ হয়ে যায়। স্বল্প শিক্ষিত কিশোর সাহেব আলী রাজনীতি জানতেন না। শুধু জানতেন নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। দেশের অর্থ অন্য দেশে না গেলে ভাল ভাবে থাকতে পারব। অভাব দুর হবে। রক্ত ঝরলো, যুদ্ধ শেষ হল, অভাব তবু শেষ হলো না।
৪৭ বছরের প্রাপ্তি বলতে রয়েছে সীমাহীন অভাব আর সামাজিক অবজ্ঞা। চারটি মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে এই মুক্তিযোদ্ধার। অর্থাভাবে তিনটি মেয়েকে লেখাপড়া না শিখিয়েই বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। ক্লান্ত সাহেব আলী বর্তমানে সংসার চালিয়ে বেকার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বড় চিন্তায় আছেন। মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলীর আশা তার মৃত্যুর আগে যেন সকল যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারদের বিচার দেখে যেতে পারেন।
স্থানীয়দের দাবি সাহেব আলীর মত হত-দ্ররিদ্র মুক্তিযোদ্ধারা যেন একটু ভালভাবে জীবন যাপন করতে পারেন। সাহের আলীর, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, ছেলে মেয়েদের সরকারী চাকুরীর জন্য অনেক নেতার বাড়িতে ধরনা দিলেও কোন কাজে আসেনি।
সরকার থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। অনেক ঘুরাঘুরি করেও তিনি বাড়ি পাননি। সরকারকে বাড়ি নির্মান করে দেয়ার দাবি জানান তিনি। ডিসি আনজুমান আরা বেগম, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলীর বাড়ি নির্মাণের জন্য আবেদন করলে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএ
No comments:
Post a Comment