![]() |
একুশে মিডিয়া, শফিউর রহমান সেলিম, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
‘রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি/ দেবার কিছু নাই/ আছে শুধু ভালবাসা/ দিয়ে গেলাম তাই’।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনি তফসিলের আগে নিজের শেষ নির্বাচনি জনসভায় এভাবেই ময়মনসিংহবাসীকে বিদায় জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে চলমান সংলাপের মধ্যেই আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই জনসভায় বক্তব্য রাখেন দলটির সভাপতি। যদিও সংলাপের বিষয়ে কোনো কথঅ তিনি বলেন নি। আগামী নির্বাচনে ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের কাছে আমার এই আবেদন থাকবে, জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন ভোট দেবেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এহতেশামূল আলম ও জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল। আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি, সাংগঠনিক সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আহমদ হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ধর্মমন্ত্রী আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন প্রশাসক ইকরামূল হক টিটু প্রমূখ। নবগঠিত ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন ঘোষনা দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সিটি কর্পোরেশনের প্রতিকী চাবি উপহার দেন জেলার স্থানীয় নেতারা।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দরিদ্রমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দারিদ্র যেখানে ৪০ ভাগ ছিল তা ২১ ভাগে নেমে এসেছে। এর আগে যেভাবে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন, আগামীতে সেভাবে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে এই দারিদ্রসীমা আমরা যাতে আরও ৫-৬ ভাগ কমিয়ে আনতে পারি সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশকে আমরা ভিক্ষুকমুক্ত করবো। যারা কর্মক্ষম না তাদেরকে আমরা ভাতার ব্যবস্থা করে দেবো। এই বাংলাদেশ জাতির পিতার বাংলাদেশ। কেউ ভিক্ষুক থাকবে না, কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না। কেউ অশিক্ষিত থাকবে না। তিনি বলেন, আমাদের যুব সমাজ, আমাদের তরুণরাই আমাদের শক্তি। তিনি এসময় যুবকদের উদ্দেশ্যে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যেই এই বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ। আমরা এখানেই থেমে থাকছি না। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। শত বছরে বাংলাদেশ কিভাবে উন্নত হবে সেই পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। ২১০০ সালের পরিকল্পনাও আমরা নিয়েছি। এজন্য দরকার আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা।
‘বাংলার মানুষ যেন ভালভাবে বাচতে পারে’ এটা নিজের কর্তব্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলার মানুষ যেন দুবেলা পেট ভরে খেতে পারে। প্রতিটি মানুষের ঘর থাকবে। কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে নাÑএটাই আমি চাই। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমি জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছি, কোনো মানুষ যেনো গৃহহারা না থাকে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর পাবে।
ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার জন্য ১৯৫ টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর ও উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালি বিভাগ নামকাওয়াস্তে না। এই বিভাগে একটা বিভাগীয় সদর দপ্তর করার প্রকল্পের ইতোমধ্যে আমরা করে দিয়েছি। যে কাজগুলি আমরা করেছি, সেই কাজগুলি সম্পন্ন করতে হবে।
এই এলাকার কর্মস্থানের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে আমরা মানুুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। প্রত্যেকটা মানুষ যেন ভালভাবে চলতে পারে। নিজের ভেতর একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলতে হবে।
ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন, আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয়ের প্রধান হাতিয়ার হবে বাংলাদেশের নারীরা। তিনি বলেন, সজিব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তিনি বলেন বিদ্যুতের আলোতে আলোকিত হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগ। ওবায়দুল কাদের আরো বলেন দেশে ১৬ কোটি মানুষের ১৫ কোটি মোবাইল। ১০ কোটি মানুষের ঘরে ঘরে এখন ইন্টারনেট।
দুপুর থেকেই ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহ জেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সার্কিট হাউস মাঠের জনসভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে আসতে থাকে। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment