মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্পের অধীনের শিক্ষকরা তিন মাস চাকুরী করার পর কর্তৃপক্ষ এক হাজার ৭০টাকা বেতন দেয়া নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রায় ৬শ শিক্ষক উপজেলা মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্প অফিস ঘেরাও করলে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাটি ঘঠেছে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের প্রোগ্রাম অফিসে।
জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্পে ৬ জেলার মধ্যে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলায় গত জানুয়ারী হতে ৬ ইউনিয়নে ৩শ স্বাক্ষরতা কেন্দ্র বা স্কুল করার কথা রয়েছে।
প্রতিটি কেন্দ্রে একজন পুরুষ ও একজন মহিলা শিক্ষক নিয়োগের নিয়ম রয়েছে। সূত্রে আরো জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৮মার্চ) দুপুরে উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসে ৬শ শিক্ষক তিন মাসের বেতন নেওয়ার জন্য এলে এক হাজার ৭০টাকা বেতন হাতে দেওয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
নিয়োগপত্রে প্রতি মাসে শিক্ষকদের বেতন ২৪শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহসহ তিন মাসে শিক্ষকদের বেতন আসে ৭হাজার দুই শত টাকা। তিন মাস পর উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার শিক্ষকদের হাতে এক হাজার ৭০টাকা ধরে দিয়ে কাগজে স্বাক্ষর নিচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক ও সুপারভাইজার এ প্রতিনিধিকে অনিয়মের বিষয়ে তুলে ধরেন।
অফিস সূত্রে প্রকাশ, কুতুবদিয়া দ্বীপের ৬ ইউনিয়নে ৩শ মৌলিক স্বাক্ষরতা কেন্দ্র নির্বাচন করে সংযোগ বাংলাদেশ এনজিও। গত জানুয়ারী মাস হতে মৌলিক স্বাক্ষরতা কেন্দ্র চালু করার কথা থাকলেও অধিকাংশ কেন্দ্র চালু করতে পারেনি শিক্ষকরা। তাই ৮০টি কেন্দ্রের শিক্ষকরা জানুয়ারী মাসের বেতন পাচ্ছেন বলে উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ বেলাল উদ্দিন নিশ্চিত করেন।
শর্ত থাকে যে, প্রতিটি কেন্দ্রের শিক্ষকরা আপাতত মূল বেতনের অর্ধেক বেতন পাবেন। তিন মাস অন্তর মূল্যায়নের পর বাকি টাকা পরিশোধ করা হবে। এ প্রকল্পের ২০টি কেন্দ্রের জন্য একজন সুপারভাইজারসহ মোট ১৫জন সুপারভাইজার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সুপারভাইজারদের জন্য প্রতি মাসে ২৪শ টাকা ভাতা ধরা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে এ প্রকল্পের অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা জানুয়ারী মাসের বেতন না পেলেও প্রকল্প অফিসারের পকেটে যাচ্ছে সব টাকা। যেমনি দেখা গেছে, প্রত্যেক ইউনিয়নে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ৫দিন করে বুনিয়াদি মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিল।
উক্ত প্রশিক্ষনে ৬শ শিক্ষকের স্থলে ৪২৯জন শিক্ষককে ৪দিন প্রশিক্ষণ দিয়ে একদিনের প্রশিক্ষনের টাকা আতœসাত করে।
এ ছাড়াও ১৭১জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া নি। জানা গেছে, প্রশিক্ষণ বাবদ ৫দিনের জন্য প্রতি শিক্ষকের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ২০৩২টাকা। কিন্তু প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষকদের হাতে ১৩শ টাকা ধরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক ও সুপারভাইজারগণ নিশ্চিত করেন।এ ছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে উপকরণ দেয়ার কথা থাকলেও প্রকল্প কর্মকর্তা এবং সংযোগ বাংলাদেশ এনজিও তা সরবরাহ করেনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ বেলাল উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, জানুয়ারী মাসে যারা মৌলিক স্বাক্ষরতা কেন্দ্র চালু করেছে তাদের বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে।
বঞ্চিতরা উশৃংখলতা করছে। তবে কেন্দ্রের সংখ্যা কয়টি জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। অনিয়মের ব্যাপারে কথা উঠলে ইউএনও’র সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন।
দক্ষিণ ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান ছৈয়দ আহমদ চৌধূরী অভিযোগ করে বলেন যে, এ প্রকল্পের অধীনে প্রত্যেক ইউনিয়নে মৌলিক স্বাক্ষরতা কেন্দ্রের শিক্ষকদের নিয়ে গণজমায়েত ও উদ্বুদ্ধকরণ সভা করার জন্য ৪হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। তার ইউনিয়নে উদ্বুদ্ধকরণ সভা হয়নি।
বরাদ্দকৃত টাকা আতœসাত করেছে। একই অভিযোগ দ্বীপের ৬ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার রায়ের সাথে কথা হলে তিনি জানান, মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্পের জানুয়ারী মাসের শিক্ষকদের ভাতা বিতরণের জন্য বলা হয়েছে। অনিয়মের অভিযোগ পেলেই তদন্ত করা হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএ
No comments:
Post a Comment