ঝিনাইদহ
কালীগঞ্জের এক হতদরিদ্র কৃষকের ১০ শতক জমির ধরন্ত বেগুন ক্ষেত কেটে দিয়েছে
দূর্বৃত্তরা। রোববার গভীর রাতে কে বা কারা এই ক্ষেত কেটে দিয়েছে। এতে ওই
কৃষকের কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে
উপজেলার সাইটবাড়িয়া গ্রামের মাঠে বাপ্পির মোল্যার ক্ষেতে। তিনি ওই গ্রামের
আনছার আলি মোল্যার ছেলে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ ও
কৃষিকর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি
সাধারন ডাইয়েরীর প্রস্ততি চলছে।
কৃষক বাপ্পি
মোল্ল্যা জানান, মাঠে নিজের কোন চাষযোগ্য জমি নেই। আমি পরের ক্ষেতে কামলার
কাজ করি। পাশাপাশি এনজিও থেকে ঋন তুলে নিজের একমাত্র ১০ শতক জমিতে শসার চাষ
করেছিলাম। কিন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়েছিল।
এরপর নতুন উদ্যোমে নতুন
আশা নিয়ে ধারদেনার মাধ্যমে বেগুনের চাষ করেছিলাম এবার রাতের আঁধারে কে বা
কারা ক্ষেতের সমস্ত বেগুন গাছ কেটে আমার পাজর ভেঙে দিয়েছে। আমার জানা মতে,
আমি কারও ক্ষতি করিনি। সারাদিন মাঠে কাজ করি রাতে বাড়িতে ঘুমায়।
আবার সকালে
চলে যায় ক্ষেতের কাজে। এরপরও আমার শত্রু কারা ? আর যারা এটা করেছে তাদেরই
বা কি লাভ ?। এখন কি করে সারাবছর সংসার চালাবো আর কি করেই বা এনজিওর টাকাসহ
ধারদেনা পরিশোধ করবো এ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তত্তিপুর
পুলিশ ফাঁড়ির এস আই তপন দাস জানান, সকালে খবর পেয়ে বাপ্পির বেগুনক্ষেত
দেখতে গিয়েছিলাম। ক্ষেতের মধ্যে বসে বাপ্পি মোল্যা যে কান্নাকাটি করছে তাতে
মাঠের বাতাস ভারি হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে স্থানীয় ইউপি
চেয়ারম্যান, পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জসহ কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষেতটি পরিদর্শন
করেছেন।
উপজেলা উপসহকারী কৃষিকর্মকর্তা আনিসুর রহমান
জানান, খবর পেয়ে আমি ওই কৃষকের ক্ষেতে গিয়েছিলাম। ধরন্ত গাছগুলো যেভাবে
কেটে দিয়েছে এ ক্ষতি পুশিয়ে উঠার নয়। তারপরও ওই কৃষকের পাশে থাকবে কৃষি
অফিস।
তিনি বলেন, একজন মানুষের বিভিন্ন দিকে কোন ভূলত্রæটি থাকতেই পারে। কিন্ত ভরা ক্ষেত কেটে দেয়া এ কেমন শত্রুতা ?
কালীগঞ্জ
থানার ওসি মাহাফুজুর রহমান মিয়া জানান, বাপ্পির মোল্যার বেগুন ক্ষেত কেটে
দেয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এলাকার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে পাঠিয়েছেন।
ওই
কৃষক থানায় অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, একজন
কৃষকের ভরাক্ষেত কেটে দিলে তার যে ক্ষতি হয় তা তিনি কোন ভাবেই পুশিয়ে উঠতে
পারেন না। তারপরও শুনেছি বাপ্পি একজন হতদরিদ্র কৃষক। ফলে তার এ ক্ষতি আরও
অমানবিক।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment