বাঁশখালীর ঐতিহ্যবাহী কাতেবী মসজিদটিতে লাখ লাখ টাকার অনুদান সত্বেও জ্বরাজীর্ণ! - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Saturday 16 November 2019

বাঁশখালীর ঐতিহ্যবাহী কাতেবী মসজিদটিতে লাখ লাখ টাকার অনুদান সত্বেও জ্বরাজীর্ণ!


একুশে মিডিযা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:>>>
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার উপক‚লীয় ছনুয়া ইউনিয়নে অবস্থিত প্রায় ২শ বছরের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী কাতেবী মসজিদটির নামে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার অনুদান ও মসজিদের নামে বিপুল সম্পদ থাকলেও মসজিদটি অনেকটাই অবহেলিত। প্রায় ৫০ বছর আগের সংস্কার করা দেয়াল ও ছাদের আস্তর খসে পড়ে অনেক জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে মসজিদটি।
স্থানীয় এলাকাবাসীসহ দূরদুরান্তের হাজার হাজার মানুষ এখানে নামাজ পড়তে গেলেও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এটি পড়ে আছে অযতœ অবহেলায়। অবৈধভাবে পরিচালনা কমিটি দেখিয়ে জনৈক কলিম উল্লাহ ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে দান বাক্সের টাকা লুটসহ মসজিদের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার গভীর রাতে মসজিদের দানবাক্সের টাকা লুট করতে গিয়ে জনগণের সাথে কলিম উল্লাহ ও তার সহযোগিদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বর্তমানে মসজিদের দখল বেদখল নিয়ে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় জনগণ অবিলম্বে মসজিদের অর্থ সম্পদ রক্ষণাবেক্ষন ও মসজিদটি সংস্কার করতে দাবি জানিয়েছেন।
জানাগেছে, বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নে অবস্থিত প্রায় ২শ বছরের প্রাচীনতম কাতেবী মসজিদটি জ্বরাজীর্ণ হয়ে পড়ে আছে অযতœ অবহেলায়। পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা সারাদেশে পরিচিতি রয়েছে এই মসজিদটির। জনশ্রæতি রয়েছে কোন আশা নিয়ে এই মসজিদে আসলে তা অলৌকিক ভাবে পূর্ণ হয়ে যায়। তাই এই মসজিদের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। প্রতিবছর এই মসজিদটিতে ভক্তানুরাগীদের দেওয়া বিপুল পরিমাণ অনুদানের অর্থ উত্তোলন করা হয় মসজিদের নামে স্থিত দানবাক্স গুলো হতে।
অভিযোগ রয়েছে, একটি সিন্ডিকেটের সদস্যরা অবৈধ ভাবে কমিটি গঠন করে এই অনুদানের অর্থ গুলো হাতিয়ে নিলেও এই পর্যন্ত মসজিদটি সংস্কারের জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি তারা। এই নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ওই কমিটির মধ্যে দ্বিধাদ্ব›দ্ব শুরু হয়। এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে মসজিদের যাওয়ার সড়কের পাশে স্থিত ওই মসজিদটির দানবাক্স হতে সন্ত্রাসী কায়দায় অনুদানের টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, মসজিদের নামে অবৈধ ভাবে গঠন করা কমিটির লোকজন স্বশস্ত্র এসে ওই মসজিদের দানবাক্সের টাকা নিয়ে গেছে। এই নিয়ে বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় মসজিদের দানবাক্সের টাকা ও মসজিদের দখলদারিত্ব নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে এলাকাবাসী।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সরজমিনে ছনুয়া কাতেবী মসজিদ পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, সংস্কারহীনতার ফলে মসজিদের বাইরের দেওয়ালের আস্তরণ গুলো খসে পড়ছে। ভিতরের অবস্থা আরো নাজুক। ছাদের আস্তরণ গুলো ঝরে পড়তে শুরু করেছে। এছাড়াও অনেকাংশে দেখা দিয়েছে ফাটল। মসজিদের একমাত্র পুকুর ঘাটটিও বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ২শ বছর পূর্বে আবদুল করিম কাতেব শাহ নামে জনৈক এক ব্যক্তি এই মসজিদ মাটি দিয়ে নির্মাণ করেছিলেন। মসজিদের মূলফটকে লেখা আছে স্থাপিত সন ১২২৪ বাংলা।
যা হিসেব করে দেখলে ইংরেজী সন ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দের সাথে মিলে যায়। পরবর্তীতে ১৩৭৬ বাংলা অর্থাৎ ১৯৬৯ সালে এলাকাবাসীরা মসজিদটি পুনঃ সংস্কার করে পাকাকরণ করেন। সেই থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত মসজিদটির কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় মসজিদটি বিভিন্ন অংশ জ্বরাজীর্ণ হয়ে পড়ে আছে। স্থানীয় এলাকাবাসীদের অভিযোগ, এই মসজিদটির সুনাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি মসজিদের নামে একটি অবৈধ ভাবে পরিচালনা কমিটি গঠন করে। ওই অবৈধ কমিটির সদস্যরা মসজিদের নামে ভক্তদের দেওয়া অনুদান গুলো হাতিয়ে নিলেও মসজিদটি সংস্কারের জন্য কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে না তারা।
মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা আবদুল করিম কাতেবীর বংশোধর আজিজ কাতেবী ও নাজিম উদ্দিন কাতেবী জানান, স্থানীয় এলাকাবাসী ও আমাদেরকে বাদ দিয়ে মসজিদের নামে একটি অবৈধ কমিটি গঠন করেছে এলাকার বাইরের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা প্রতিনিয়ত  মসজিদের নামে ভক্তদের দেয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিলেও মসজিদ সংস্কারের জন্য কিছু করে না। আমরা ওই অবৈধ কমিটির জিম্মিদশা থেকে মসজিদটির পরিত্রাণ চাই এবং মসজিদটির সংস্কার কামনা করি।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির মোতোয়াল্লী কলিম উল্লাহ বলেন, আমরা স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে মসজিদ পুনঃ নির্মাণের জন্য সহযোগিতা চেয়েছি। তাদের মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে সমাধান করতে চাই। স্থানীয় দুয়েক ব্যক্তি ছাড়া সবাই আমাদের পক্ষে আছে। টাকা চুরির ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। বিষয়টি আমরা চেয়ারম্যানকেও অবহিত করেছি।
স্থানীয় ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা লুটের অভিযোগ ও মসজিদের দখলদারিত্ব নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রেজাউল করিম মজুমদার জানান, ছনুয়া কাতেবী মসজিদ সংক্রান্ত বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।





একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages