এম এ হাসান, কুমিল্লা:>>>
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মুন্সীরহাট ইউনিয়নের দেড়কোটায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আব্দুল মালেক (৭৫) নামের এক ব্যক্তির দীর্ঘ ২৩ বছরের মালিকানা জমি জোরপূর্বক দখলে নেয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে জামাল উদ্দীন মজুমদার নামে এক ভূমি দস্যুর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের দেড়কোটা গ্রামের মৃত আলম মিয়ার ছেলে আব্দুল মালেক নিজ গ্রামের মৃত রঙ্গু মিয়ার ছেলে মমতাজ মিয়া ও তার স্ত্রী আম্বিয়া বেগমের নিকট থেকে সাবেক ৭৪৯ নম্বর দাগের (বর্তমান বিএস ফাইনাল: ৩২৯) ৫ শতক জমিনের ৩ শতক জমি (পরিত্যক্ত ডোবা) ১৯৯৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৭২৯ নং দলিলে সাফ কবলায় খরিদ করেন।
পরবর্তীতে তিনি ওই ডোবায় মাটি ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে সেনেটারী (রিং-স্লেপ), সেলুন ব্যবসা সহ বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। বর্তমানেও তিনি ঐ জমির দখলদার আছেন।
এদিকে একই এলাকার ভূমি দস্যু জামাল উদ্দীন মজুমদার সু-কৌশলে জমি বিক্রেতা মমতাজ মিয়ার মৃত্যুর পর তার ছেলেদেরকে ফুসলিয়ে ২০১৪ সালে আম্বিয়া বেগমের কাছ থেকে ২ শতক জায়গা ক্রয় করে একটি দলিল সৃজন করেন এবং বর্তমানে ভূমির মালিকানা দাবি করছেন।
দুই পক্ষই একই জমির মালিকানা দাবি করলে বিবাদমান বিষয়টির সমাধান কল্পে গ্রাম্য মাতব্বর ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কয়েকদফা শালিসে বসেন। দুই পক্ষের দলিলপত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে এবং সার্বিক দিক বিবেচনা করে শালিসি রায় আব্দুল মালেকের পক্ষে দেন গ্রাম আদালত। তারপর ভূমি দস্যু জামাল এ রায় মেনে নিতে না পেরে আব্দুল মালেককে দেখে নেয়ার হুমকি দেন এবং প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ার হুমকি দেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জামাল উদ্দীন ক্রয়মূলে জমির মালিকানা দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে তার দলিলের ভিত্তি নড়বড়ে। কেননা, আব্দুল মালেক জমির মূল মালিক মমতাজ মিয়া ও তার স্ত্রী আম্বিয়া বেগম জীবিত থাকাবস্থায় ১৯৯৭ সালে মূল জমি ৫ শতক থেকে ৩ শতক ক্রয় করেন এবং দলিলে উল্লেখিত চৌহদ্দি অনুযায়ী দখলমূলে মালিক হন। আর জামাল উদ্দীন সে জমির অবিশিষ্ট ২ শতক ক্রয় করেন। যাহা আব্দুল মালেকের কাছে জমি বিক্রির পূর্বেই শাহ্ ফখরুদ্দীন সড়কের বর্ধিত অংশের ভেতরে চলে যায়। এবিষয়ে জমির বর্তমান মালিক মো. আব্দুল মালেক জানান, “বিশ বছরের অধিক সময় ধরে জমিটির মালিকানা আমার কাছে রয়েছে।
এখানে দীর্ঘদিন ধরে আমার দোকান ঘর ছিল, এলাকাবাসী সবাই জানে। পুরনো ঘর গুলো ভেঙ্গে নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণ করতে গেলেই জামাল উদ্দীন জমির মালিকানা দাবি করে ঝামেলা সৃষ্টি করে। গ্রাম্য শালিসে সকলে আমার পক্ষেই রায় দিয়েছে। জমিটি খরিদের পর থেকে এখন পর্যন্ত জমির খাজনা পরিশোধ সহ সরকারি সকল নীতিমালা অনুস্মরণ করে আসছি। বিএস খতিয়ানেও ৩ শতক জমি আমার নামে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
আমার দলিল, খতিয়ান সহ সকল কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে ভূমি দস্যু জামাল। কিছুদিন আগে তার নির্দেশে স্থানীয় ইঞ্জিনিয়ার নজির এর নেতৃত্বে আমার ছেলের উপর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা চালায়।
হামলার ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে জামাল, ইঞ্জিনিয়ার নজির সহ হামলার ঘটনার সাথে জড়িত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করি। পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যায়। এখন সে আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে উল্টো আমাকেই হয়রানি করছে। আমি এর প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ভবিষ্যতে যাতে কেউ আমার মত এ ধরণের হয়রানির শিকার না হন”।
এবিষয়ে জামাল উদ্দীন কর্তৃক আদালতে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, চৌদ্দগ্রামস্থ কনকাপৈত পুলিশ তদন্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. কাউছার হামিদ বলেন, “জামাল উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি কর্তৃক আদালতে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ভার আমাকে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন আদালতই এ ব্যাপারে তার সিদ্ধান্ত জানাবে”।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment