স্টাফ রিপোর্টার:ই-একুশে মিডিয়া
ফটিকছড়ি শাহনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুর ঘটনায় কলেজ সভাপতিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মামলার আবেদনে আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। জানা যায়, নিহত জাহাঙ্গীর আলম ফটিকছড়ি শাহনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ বাঁশখালী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড উত্তর জলদী চুম্মাপাড়া নিবাসী মরহুম আবদুর রহমানের প্রথম পুত্র।
সোমবার (৮ মে) চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার স্ত্রী নাজমা সুলতানা রুবা বাদী হয়ে এ মামলার আবেদন করেন ।
অভিযুক্তরা আসামীরা হলেন, কলেজ সভাপতি রাকিব বিন তৌহিদ চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক মো. মাহবুব আলম, মো. শহীদুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. গিয়াস উদ্দিন, ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও সিনিয়র শিক্ষক মো. নুরুল আলম সহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, কলেজ সভাপতি রাকিব বিন তৌহিদ চৌধুরীসহ অভিযুক্তদের আচরণে চরম অপমানিত ও অসম্মানিত হন অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম। এতে তিনি মানসিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব নিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকাবস্থায় গত ২৮ এপ্রিল বিকলে তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
মামলার আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেটট মনজুর আলম বলেন, বাদীর অভিযোগটি এজাহার গ্রহণের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।
গত ২৭ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ্ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীরকে লাঞ্ছিত করেন। তার মৃত্যুর পর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে মুঠোফোনে কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও ফাঁস হয়। যেখানে বিভিন্ন ইস্যুতে তার সঙ্গে ধমকের সুরে কথা বলা এবং দুর্ব্যবহার করতে শোনা যায় সভাপতি রাকিব বিন তৌহিদ চৌধুরীকে।
এ দু’টি ঘটনায় মানসিক চাপ সইতে না পেরে হার্ট অ্যাটাকে জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যু হয় বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী নাজমা সুলতানা।
শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ, ফটিকছড়ির শাহনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও তার সহযোগীরা তাদের অন্যায় কাজে সমর্থন না দেয়ায় অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে দীর্ঘদিন ধরে হুমকি-ধমকি ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন। এমনকি সম্প্রতি কলেজের বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সামনে তাকে অপমান করেছেন। এসব অপমান সইতে না পেরে হার্ট অ্যাটাক করে তিনি মারা গেছেন।
গত ৪ মে বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে অধ্যক্ষের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী হিসেবে কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রাকিব বিন তৌহিদ চৌধুরী, স্থানীয় প্রভাবশালী শহীদুল আলম চৌধুরীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা। এছাড়াও প্রাক্তন, বর্তমান শিক্ষার্থীরাও এ ঘটনায় মানবন্ধন করে তাদের শাস্তির দাবি জানান।
No comments:
Post a Comment