লোহাগাড়ায় পুলিশের ধাওয়ায় অস্ত্র-কার্তুজসহ ২ গরু চোর গ্রেপ্তার, উদ্ধার ৫টি চোরাই গরু ও পিকআপ

রুশমী আক্তার, লোহাগাড়া প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পুলিশের ধাওয়ায় অস্ত্র-কার্তুজসহ দুই গরু চোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে চুরি হওয়া ৫টি গরু, চোরাই গরু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান এবং একটি দেশীয় তৈরি এলজি অস্ত্র ও চার রাউন্ড কার্তুজ।

মঙ্গলবার (৬ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের বাদামতল বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার জালিয়াঘাটা ১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বন্দর বোচা তালুকদার বাড়ির মৃত মহব্বত আলীর পুত্র আব্দুস সবুর (৪০) এবং ফটিকছড়ির নানুপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের লম্বাটিলা এলাকার রফিকুল ইসলামের পুত্র মহি উদ্দিন (৩৭)।

পুলিশ জানায়, লোহাগাড়ার চুনতি ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া এলাকায় মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সংবাদ পাওয়া যায় যে, চকরিয়া থেকে চোরেরা গরু চুরি করে একটি পিকআপে করে চট্টগ্রামের দিকে রওনা দিয়েছে।

পরে ভোর ৪টার দিকে চেকপোস্ট এলাকায় একটি পিকআপ পৌঁছালে পুলিশ থামার সংকেত দেয়। তবে চালক সংকেত উপেক্ষা করে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে যেতে থাকে। পুলিশ পেছনে ধাওয়া করলে গাড়িতে থাকা চোরেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।

পরবর্তীতে দোহাজারী হাইওয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে চোরেরা গাড়ি ফেলে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় চোরেরা আবারও গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আব্দুস সবুর ও মহি উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

তাদের দেহ তল্লাশি করে একটি দেশীয় তৈরি এলজি, চার রাউন্ড কার্তুজ, চোরাই গরু পরিবহনের পিকআপ এবং চুরি হওয়া ৫টি বিভিন্ন জাতের গরু জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পালিয়ে যাওয়া চোরদের মধ্যে রয়েছে সাইফুল ওরফে শওকত (২০) ও রাকিব (২৫)। তারা গরুগুলো বাঁশখালীর পুঁইছড়ি এলাকা থেকে চুরি করে চট্টগ্রাম শহরের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা আরও স্বীকার করে যে, চট্টগ্রাম ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গরু চুরি ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত।

গ্রেপ্তারের সময় উত্তেজিত জনতা দুই চোরকে মারধর করে আহত করে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মহি উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। লোহাগাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রবিউল আলম খান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।