একুশে মিডিয়া, প্রতিবেদন:
চরম ভোগান্তির আরেক নাম হয়ে উঠেছে বাঁশখালী পল্লী বিদ্যুৎ বিতরণ সেবা। বিশেষ করে সামান্য ঝড়-বৃষ্টি হলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এতে বিপর্যস্ত হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা, গৃহস্থালি কাজ, খাদ্য সংরক্ষণ ও সুপেয় পানির সরবরাহ।
গত কয়েক দিন ধরে বাঁশখালীতে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের তথ্যমতে, চট্টগ্রামের দোহাজারী গ্রিডে সমস্যা অথবা ঝড়বৃষ্টিতে গাছপালা পড়ে বিদ্যুৎ লাইন ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সাতকানিয়া হয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝুঁকিপূর্ণ লাইনে ত্রুটি শনাক্ত করে মেরামতে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ সময়।
পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার চারটি সাবস্টেশনে (গুনাগরী, বৈলছড়ি, জলদি ও নাপোড়া) বর্তমানে মাত্র ৩৬ জন লাইনম্যান দায়িত্ব পালন করছেন- যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। অথচ বাঁশখালীতে এখন প্রায় ৮৪ হাজার গ্রাহক এবং ৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে। জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকলেও, মূল সমস্যা তৈরি হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দীর্ঘ লাইনে গাছপালা পড়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া।
এ নিয়ে বাঁশখালী পল্লীবিদ্যুতের একাধিক গ্রাহকের সাথে কথা বললে তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন: “আমরা টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ কিনি, অথচ সামান্য বাতাস-বৃষ্টি হলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকারে থাকতে হয়। পানির মোটর চলে না, ফ্রিজে খাবার নষ্ট হয়, বাচ্চাদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। ফোন দিলে অফিস থেকে শুধু বলে- ‘দোহাজারী লাইনে সমস্যা’। তাহলে এত বছরেও এই লাইনের স্থায়ী সমাধান হলো না কেন? কেউ কোনো জবাব দেন না!”
এ প্রসঙ্গে বাঁশখালী পল্লী বিদ্যুতের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) ডালিম কুমার বলেন, “আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দিতে পারব। সাতকানিয়া থেকে দোহাজারী পর্যন্ত লাইনের ওপর থাকা গাছপালা ছাঁটাই করা হলে ঝড়-বৃষ্টিতে তেমন সমস্যা হবে না।”
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, “গাছপালা কেটে বিদ্যুৎ লাইন সুরক্ষা করতে গিয়ে লাইনম্যানদের বাঁশখালীতে স্থানীয়দের দ্বারা মারধরের শিকার হতে হয়েছে। তাই সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা আশা করছি, আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যেই গাছ কাটার কাজ সম্পন্ন করে সেবার মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।”
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আতিকুর রহমান বলেন, “বাঁশখালীর ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ লাইনটি দোহাজারী পর্যন্ত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঝড়বৃষ্টির সময় গাছের ডালপালা পড়ে গেলে পুরো দীর্ঘ লাইন চেক করতে হয়। তবে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। গ্রাহকসেবা দিতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি, আমাদের আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই।
No comments:
Post a Comment