লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নে নতুন নির্মিত একটি ব্রিজ উদ্বোধনের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখনো আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে ব্রিজে ফাটল ধরেছে। ‘মের্সাস চৌধুরী ইন্টারন্যাশনাল’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়েছিল। তবে উপ-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেছে ‘মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ’, যার মালিক চরম্বা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন হেলালী।
ব্রিজটির বাস্তবায়ন দায়িত্বে ছিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। প্রকল্পের আওতায় কুমিরাঘোনা বায়তুশ শরফ রোডে মহাবোধী বিহার সংলগ্ন খালের উপর নির্মিত এই বক্স কালভার্ট বা ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ১৫ মিটার এবং ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৫১ টাকা।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন বিলম্বের পর বর্ষা মৌসুমে কাজ শুরু করা হয়। নিম্নমানের ইট, সিমেন্ট, বালু ও কংক্রিট ব্যবহার করে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করা হয়। তদারকি করার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে ব্রিজের উভয় পাশে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করলে পশ্চিম পাশে ফাটল দেখা দেয়। এতে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যে ব্রিজ উদ্বোধনের আগেই ফাটল ধরছে, সেখানে গাড়ি চলাচল শুরু হলে কী অবস্থা হবে?” অনেকে ব্রিজটি ভেঙে পুনঃনির্মাণের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, দুই মাস আগে একই উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নে উদ্বোধনের আগেই আরেকটি ব্রিজ ধসে পড়েছিল, যা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মের্সাস চৌধুরী ইন্টারন্যাশনাল’-এর মালিক মোহাম্মদ হানিফ জানান, “আমি কাজটি পেয়েছিলাম, কিন্তু ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিনকে দিয়েছি। তিনি সব কাজ করেছেন। কোনো সমস্যা হলে তিনিই সমাধান করবেন।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নাহিদ আহমেদ জাকির বলেন, “বড়হাতিয়ায় ব্রিজের সমস্যা নিয়ে খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।
তবে ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বিষয়টি হালকা করে বলেন, মূল ব্রিজে কোনো সমস্যা হয়নি, শুধু সংযোগ সড়কের পাশে সামান্য ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনে ঠিক করে দেওয়া হবে।
No comments:
Post a Comment