দূর্নীতির মামলায় শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দু’দকের চার্জশিট। একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Tuesday 30 April 2019

দূর্নীতির মামলায় শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দু’দকের চার্জশিট। একুশে মিডিয়া


একুশে মিডিয়া, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:>>>
দুর্নীতির পৃথক দুই মামলায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুশতাক আহমদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দু’দক। দুদকের সহকারী পরিচালক মোঃ ওয়াজেদ আলী গাজী আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় চার্জশিট দুটি দাখিল করেন। শাহবাগ থানায় দায়ের করা অর্থ আত্মসাতের এক মামলায় মুশতাক আহমদসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের উপ-পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মামলায় অপর আসামিরা হলেন- মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানাধীন নগরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জিল্লুর রহমান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ আওকাত হোসেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মো. জিল্লুর রহমানের বেতন বাবদ সর্বমোট ৩৬ হাজার ৬০০ টাকা অতিরিক্ত উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছয় শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক স্কেলে বেতন প্রদানের সুপারিশের মামলায় মুশতাক আহমদসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে। 
ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে দেখা যায়, মুশতাক আহমেদ দু’দকের দূর্নীতির মামলায় জেল হাজতে থাকায় তিনি নকল স্বাক্ষর করে ছুটির আবেদন করেন ।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একজন দ্বায়িত্বশীল ব্যাক্তি। উপজেলা সকল প্রাথমিক শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন পাশ হয় তারই স্বাক্ষরে। প্রতিদিন অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হয়। বিদ্যালয় ও সাবক্লাস্টার পরিদর্শনসহ নানা নির্দেশনা দিতে হয় তাকে। অথচ জেলে থেকে মিথ্যার আশ্রয়ে অজ্ঞত কারনে নিয়মের তোয়াক্কা না করে ছুটির নামে ছুটির আবেদন পত্রে নকল স্বাক্ষর করে তিন সপ্তাহের বেশী জেল-হাজতে অবস্থান করছেন। তার অনুপস্থিতির কারনে অফিসে কাজ বোঝা বেড়েই চলেছে। শিক্ষকরা তাদের প্রয়োজণীয় কাজ করতে না পারায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে যা কোন ভাবেই কাম্যনয়।
অফিসের একাধিকসূত্রে জানা গেছে, মুশতাক আহমদ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পরথেকে প্রাথমিক শিক্ষাঙ্গণে অনিয়ম নিয়মে পরিণতি হয়েছে। তার এই অনৈতিক কারনে উপজেলা শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করার কথা থাকলেও তিনি কর্মস্থলে থাকেন না। অফিসের পুরানো যানবাহন অকশনে বিক্রয় করার, না করে দিনের পর দিন ফেলে রেখে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করেছেন।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল হারিজার মেশিন ক্রয়ের নাম করে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে ১৩৫ টাকা করে গ্রহণ করেছে। জোর করে নোটবুক বিক্রয় করেছেন ৩৫/৪০ টাকা করে। বিদ্যালয় থেকে বদলী করতে সৃজন/কর্তন করেছেন ১থেকে দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে। স্লীপের ৪০,০০০/-হাজার টাকা থেকে ৫,০০০/- টাকা অগ্রিম নিয়েছেন। পিটিআই প্রশিক্ষণে আসা শিক্ষকদের ডেপুটিশন প্রদান করে ৫/৬ হাজার টাকা আদায় করেন বলেও জানা গেছে। নতুন শিক্ষক নিয়োগের সময় প্রতারণা করে মোটা অংকের অর্থ আদায় করেন। আর এই কাজ গুলো একটি সিন্ডিকেটের মাধ্য পরিচালিত হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এব্যাপারে জানতে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে গেলে দেখা যায় মুশতাক আহমদের অফিস কক্ষ তালা মারা। জেলে থাকার কারনে তার সরকারি মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। 
ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোঃ আক্তারুজ্জামান জানান, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুশতাক আহমদ বিগত ৭ই এপ্রিল ৮এপ্রিল থেকে ৯দিনের নৈমিত্মিক ছুটির আবেদন পত্র আমার কাছে দাখিল করেন। সেই মোতাবেক তাকে ১৭এপ্রিল অফিসে যাগদান করার কথা ছিলো কিন্তু ১৭ এপ্রিল কর্মস্থলে যোগদান না করে ১৬ই এপ্রিলে পূর্ণ ডাক্তারি সনদসহ একটি মেডিকেল ছুটির আবেদন করে। আবেদন পত্রটি যাচাই করে দেখা যায়যে সদর উপজেলা প্রথামিক শিক্ষা অফিসারের কোন স্বাক্ষর নেই।তিনি আরো বলেন, পরে বিষয়টি আমি প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মেহেররুন নেছা স্যারকে অবগত করি। তবে মুশতাক আহমদ দু’দকের কোন মামলায় জেলে আছেন কিনা সে বিষয়ে আমি অবগত নয়। তাকে অফিসিয়াল ভাবে তাকে বহিস্বার করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি তাকে বহিস্কার করতে পারিনা। আর এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেনি সে সত্যিই জেলে আছে কিনা, সে কারনে আমরা এটা প্রথমে প্রাথমিক শিক্ষা উপ-পরিচালক খুলনাকে জানিয়েছি এবং মিনিষ্ট্রীকে জানাবো।
প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মেহেররুন নেছা বলেন, আমরা এখনো পর্যন্ত কোন কাগজপত্র পায়নাই।
যেমন পুলিশ দপ্তর থেকে বা দু’দকের কাছ থেকে আমাদের কোন কাগজপত্র দেয় নায় এবং আমরা এবিষয়ে কিছুই জানিই না এবং অবগত নয়, যে আমাদের কোন কর্মকর্তা দু’দকের কোন দুর্ণীতির মামলায় জেল হাজতে আছে। আমরা লোক মুখে শুনেছি এবং পরে আমাদের ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) কে আমি বললাম,তখন ডিপিও আমাকে লিখিত ভাবে দিয়েছে যে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সে ছুটির আবেদন দিয়ে চলে গেছে। এবং ডিপিও লোক মুখে শুনেছে এরকম ঘটনা।
এখন আমরা ডিপিওকে বলেছি প্রমানাদী দলীলসহ আমাদেরকে একটি প্রতিবেদন দিতে। প্রতিবেদন দিলে আমরা পাঠিয়ে দিবো ডিডি অফিস মন্ত্রণালয়ে, তখন বিভাগীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাকে সাময়িক বরখাস্থ করা হবে। তবে ডিডি অফিসেও মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানিয়েছি এবং শিক্ষা মন্ত্রলয়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে। এখন আমরা দেখি ঝিনাইদহ অফিস প্রমানাদীসহ কিছু দিতে পারে কিনা। না দিলে আমরা একটি প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিবো। এখন দু-দকের নিয়ম কি আমিতো জানিনা।
আমি ঝিনাইদহের ডিপিওকে বলেছিলাম দু-দকের সাথে কথা বলতে, সে আমাকে জানিয়েছে দু-দকের ডিডি নাকি বলেছে তারা আমাদেরকে কোন তথ্যদিবে না, আমাদের উপরের অফিসে দিবে। এখন মন্ত্রনালয়ে দিবে কিনা জানিনা। তবে ঝিনাইদহ ডিপিও আমাকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছে মুশকাত নাকি ঢাকায় হাইকোর্টে হাজিরা দিতে গেছিলো তখন তাকে আটক করেছে। এটা মুখে মুখে এর কোন প্রমান নায়। কিন্তু আমাদের ওই অফিসারের উচিৎ ছিলো আমাদেরকে জানানো যে আমার এই কন্ডিশন বা তার পরিবারকে জানানো উচিৎ ছিলো। এখন আমরা পড়েছি বিপদে, কোথায় যাবো কি করবো। যাইহোক আমি ডিডি অফিসে কথা বলেছি, মন্ত্রনালয়েও কথা বলেছি এবং ডিপিও কে বলেছি তুমি একটু দু-দকের সাথে কথা বলো আমরা কোথাথেকে বিষয়টি জানতে পারবো। এই প্রমান গুলো পেলে আমাদের জন্য একটু ভালো হয় আরকি। তো যায় হোক একটা ব্যবস্থা অবশ্যই করবো।
এমতাবস্থায় জনস্বার্থে দুনীর্তি পরায়ণ কর্মকর্তা মুশতাক আহমদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব আকরাম-আল হোসেন ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ঝিনাইদহের সচেতন নাগরিক এবং সদর কর্মকর্তা মুশতাকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান স্থানীয়রা।




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages