একুশে মিডিয়া, ডেস্ক:
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় চাঞ্চল্যকর একটি ঘটনায় ছয় মাস আটকে থাকার পর এক নারী ও এক বৃদ্ধ মাটি খুঁড়ে সুড়ঙ্গপথ তৈরি করে পালিয়ে এসেছেন গ্রাম্য চিকিৎসকের তৈরি ‘আয়নাঘর’ নামের একটি ঘর থেকে।
শুক্রবার (২ মে) ভোরে রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের সোনারাম পূর্বপাড়া গ্রামে মাটির নিচে অবস্থিত সেই গোপন ঘর থেকে পালিয়ে মুক্তি পান তারা।
মুক্ত হওয়া দুইজন হলেন- চান্দাইকোনা ইউনিয়নের লক্ষ্মী বিষ্ণুপ্রসাদ গ্রামের মুনছুর আলীর স্ত্রী শিল্পী খাতুন (৩৮) এবং পূর্বপাইকড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জুব্বার (৭৫)।
ভুক্তভোগীরা জানান, তারা গ্রাম্য চিকিৎসক নাজমুল ইসলাম আরাফাতের তৈরি আয়নাঘরে পূর্ব শত্রুতার জেরে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছিল। অভিযুক্ত আরাফাত স্থানীয় বাসিন্দা এবং পেশায় একজন গ্রাম্য চিকিৎসক, পাশাপাশি তিনি রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য বলেও জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, ছয় মাস আগে নিখোঁজ হন শিল্পী খাতুন। এ ঘটনায় তার স্বামী মনছুর আলী সিরাজগঞ্জ আদালতে অপহরণ মামলা করেন, যেখানে আরাফাতসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। একই সময় নিখোঁজ হন আব্দুল জুব্বার; তার পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
পরবর্তীতে জানা যায়, সোনারাম গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে সুমনের বাড়ির মাটির নিচে তৈরি একটি ছোট, অন্ধকার ঘরে তাদের আটকে রাখা হয়েছিল। ওই ঘরে প্রতিদিন একবার খাবার সরবরাহ করতেন সুমন। একদিন আরাফাত ডাক্তারি কাজ করতে গিয়ে একটি কেচি ফেলে যান। সেই কেচি দিয়েই দীর্ঘ সময় ধরে মাটি খুঁড়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে শুক্রবার ভোরে পালিয়ে যান তারা।
ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যমতে, পুলিশ, সেনাবাহিনী, সংবাদকর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ‘আয়নাঘর’ খুঁজে পান এবং অভিযুক্ত আরাফাতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন।
খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ভিড় করেন ঘটনাস্থলে। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তদের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন।
শিল্পী খাতুন ও আব্দুল জুব্বার জানান, তারা ছয় মাস একটি অন্ধকার, দমবন্ধ পরিবেশে দিন কাটিয়েছেন। কোনো আলো-বাতাস প্রবেশ করত না। শেষমেশ আরাফাতের ফেলে যাওয়া কেচিই তাদের মুক্তির একমাত্র উপায় হয়ে ওঠে।
শিল্পীর পরিবারের দাবি, আরাফাতের সঙ্গে তাদের পুরোনো শত্রুতা ছিল, যার জেরেই তাকে অপহরণ করে আটক রাখা হয়।
রায়গঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, আয়নাঘরের আদলে তৈরি গোপন ঘর থেকে দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজদের পরিবারের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
প্রয়োজনে আপনি চাইলে এই সংবাদটির একটি ছোট ভিডিও স্ক্রিপ্ট বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট কনটেন্টও তৈরি করে দিতে পারি- আপনার কি প্রয়োজন?
No comments:
Post a Comment