নড়াইলের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাইকেল চালিয়ে নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়া - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

ক্লিক করুন

Breaking News

Home Top Ad

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Monday, 1 May 2023

নড়াইলের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাইকেল চালিয়ে নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়া

ই-একুশে মিডিয়া

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে:

 নড়াইলের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাইকেল চালিয়ে  নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়া করছে শতাধিক ছাত্রী সকল বাধা পেরিয়ে ছুটে চলছে ওরা সাইকেল চালিয়ে দলবেঁধে নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়া করছে শতাধিক ছাত্রী এতে একদিকে সময়মতো শ্রেণিতে উপস্থিত হতে পারছে, অন্যদিকে অভিভাবকের বাড়তি খরচও সাশ্রয় হচ্ছে সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে এলাকার বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, নারী নির্যাতনসহ সমাজ থেকে সকল প্রকার কুসংস্কার দূর করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলেছে ওরা

চিত্র নড়াইল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার শেখহাটি ১৯৮৩ সালে স্থাপিত গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় তিনশত যার মধ্যে ছাত্রী রয়েছে ১৪৩ জন বিদ্যালয়টি নড়াইল সদর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় এলাকাটি অনেকটা অবহেলিত এবং অধিকাংশ রাস্তাঘাট কাঁচা আশেপাশের প্রায় ১১টি গ্রামের শিক্ষার্থীদের / কিলোমিটার দূর থেকে নিয়মিত এই বিদ্যালয়ে আসতে হয় / বছর আগে শুধু ছেলেরা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করলেও মেয়েদের ভ্যানে পায়ে হেঁটে স্কুলে আসা যাওয়া করতে হতো দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে স্কুলের শিক্ষক অভিভাবকদের যৌথ প্রয়াসে মেয়েদের সাইকেল কিনে দেওয়া হয়

চার বছর আগে প্রথমে হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্রী সাইকেল নিয়ে স্কুলে যাতায়াত শুরু করলেও ধীরে ধীরে এই এর সংখ্যা বাড়তে থাকে বর্তমানে শতাধিক ছাত্রী নিয়মিত সাইকেলে নিয়ে যাতায়াত করে এবং তাদের বান্ধবীদেরও সাইকেলের পেছনে বসিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে বর্তমানে তাদের সাইকেল রাখার জন্য বিদ্যালয়ে রয়েছে গ্যারেজের ব্যবস্থা

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঝুমা গুপ্ত বলে, বাবার কাছ থেকেই সাইকেল চালোনা শিখেছে সাইকেল চালানোর মাধ্যমে স্কুলে আসা যাওয়া অনেক সহজ হয় আগে যখন সাইকেল ছিল না তখন যাতায়াতে অর্থ বেশি সময় ব্যয় হয়েছে কিন্তু সাইকেল চালানো শেখার পর সে অনেক সহজে স্কুলে আসতে পারে হেঁটে আসার সময় রাস্তাঘাটে আগে ছেলেরা বিরক্ত করলেও এখন আর তারা সে সুযোগ পায় না মেয়ে হয়ে সাইকেল চালানো নিয়ে কেউ মন্দ কথা বললে সেটাকে কানেই নেয় না এই শিক্ষার্থী

নবম শ্রেণির ছাত্রী অনন্যা সিংহ জানায়, প্রায় চার বছর ধরে সে সাইকেল চালাচ্ছে বাড়ি থেকে স্কুল প্রায় কিলোমিটার দূরে হওয়ায় স্কুলে আসতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় গাড়ি না পাওয়া এবং বখাটেদের উত্ত্যক্তের সমস্যাসহ নানা বিড়ম্বনায় পড়তেন তিনি এসব সমস্যার সমাধান হিসেবে তাই সাইকেলকে বেছে নেওয়া সাইকেল চালানো নিয়ে প্রতিবেশীদের নানা কথা শুনতে হয়েছে তবে অনন্যার বাবা-মা প্রতবেশীদের কথা না শুনে মেয়েকে সমর্থন দিয়েছেন সবক্ষেত্রেই নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে তাই সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসতে কোন বাঁধা মনে করেন না অনন্যা

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী হালদার জানায়, তার বাড়ি থেক কিলোমিটার দূরে স্কুল পরিবারের উৎসাহে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করছে সে

সাইকেল চালিয়ে ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসার ব্যাপারটি কেমনভাবে দেখে ছাত্ররা? তা জানতে কথা হয় ওই বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রের সঙ্গে তারা বলেন, প্রতিদিন তাদের স্কুলে মেয়েরা সাইকেল চালিয়ে আসে ছাত্রীদের আসার দৃশ্য দেখতেও সুন্দর লাগে তাদের দেখাদেখি আরও অনেকই সাইকেল চালোনায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে চলার পথে ছাত্রীরা কোনো বিপদে পড়লে সাহায্য করে ছাত্ররা

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ছেলে মেয়েদের সমানভাবে দেখা হয় তাই সাইকেল নিয়ে স্কুলে আসতে ছাত্রীদের এখন সময় কম লাগছে, অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে এবং নিয়মিত সময়মত শ্রেণিতে উপস্থিত হতে পারছে মেয়েদের সাইকেল চালানোকে আগে অনেকেই আড়চোখে দেখলেও এখন সবাই পজিটিভ ভাবেই দেখছে সারাদেশেই ছেলে-মেয়ে উভয়ের সাইকেলের ব্যবহার বাড়ানো উচিত বলেও তিনি মনে করেন

জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মৌসুমি রাণী মজুমদার বলেন, প্রত্যন্ত এলাকার মেয়েরা যে নিজেরা সাইকেল চালিয়ে আসা-যাওয়া করছে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ তাদের এই সাহসী মনোভাব পরবর্তীতে তাদের কর্মক্ষেত্রেও এগিয়ে নিয়ে যাবে

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages