সাইদ সাজু, তানোর (রাজশাহী):
রাজশাহীর তানোরে মানসিক প্রতিবন্ধী এক যুবককে ‘পাগল’ বলে কটুক্তি করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা থেকে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে চালানো এ হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
শনিবার (৩ মে) শেষ বিকেলে তানোর পৌরসভার গোকুল মথুরা গ্রামের পাকা রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন—ইউসুফ আলী (৪৫), ইনসান আলী (৪১), আইয়ুব আলী (৩৫), ও কাওছার আলী (৩৮)। এদের মধ্যে ইউসুফ ও ইনসানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকি দুজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
ঘটনার বিবরণ:
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মানসিক প্রতিবন্ধী আলমগীর হোসেন (৩০) ধান আনার জন্য মাথায় বস্তা বহন করে যাচ্ছিলেন। এ সময় একই গ্রামের টিটু (৫৫) তাকে ‘পাগল’ বলে কটুক্তি করেন। এতে আলমগীর ক্ষিপ্ত হয়ে কথা-কাটাকাটি শুরু করলে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে টিটুর পক্ষের বাবু (৩৫), আলমাস (৪০), জনি (২৮), ও রনি (৩০) লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
আলমগীরের চাচাতো ভাই ইউসুফ, ইনসান, আইয়ুব ও কাওছারকে বেধড়ক মারধর করা হয়। দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে তাদের মাথা ফেটে যায়। আহতদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রশাসনের অবস্থান:
খবর পেয়ে তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্তের জন্য পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি:
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোয় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
No comments:
Post a Comment